গায়ে পিপিই, হাতে ব্যালট। ভোট দিগেন বিধায়ক কুণাল চৌধুরী। ছবি: পিটিআই
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তো বটেই, তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের পর্যন্ত নিভৃতবাসে থাকতে বলছেন চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ভোট বড় বালাই। হোক রাজ্যসভার। কিন্তু দলের প্রার্থীকে তো জেতাতে হবে। তাই পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট বা পিপিই পরেই ভোট দিতে চলে গেলেন করোনা আক্রান্ত মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস বিধায়ক কুণাল চৌধুরি। গণতন্ত্রের প্রতি বিধায়কের এমন ‘নিষ্ঠা’র গুঁতোয় পিপিই পরে তাঁর সঙ্গে হাজির স্বাস্থ্যকর্মীরাও। স্যানিটাইজ করার কাজ শুরু হয়েছে পুরো বিধানসভা ভবন। তবু ভোট দিয়ে নির্বিকার বিধায়ক বললেন, ‘‘একটু ভয় লাগছিল বটে! তবে ভোট দিয়েই এসেছি।’’
কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই পিছু ছাড়েনি বিতর্ক। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, একটা ভোটের এতই মূল্য যে কয়েকশো লোকের মধ্যে সংক্রমণের আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন ভোটের লাইনে। কমিশন কী ভাবে অনুমতি দিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। দলের রাজ্য নেতাদের অভিযোগ, এই অবস্থায় ভোট দেওয়া মহামারি আইনবিরুদ্ধ। কুনাল চৌধুরি যদিও দাবি করেছেন, নির্বাচন কমিশনই তাঁকে ভোট দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। বিজেপিকে পাল্টা খোঁচা দিতেও ছাড়েননি তিনি।
কুণাল চৌধুরির ভোটদান পর্ব কেমন ছিল? শুক্রবার দেশের মোট ১০টি রাজ্যের ২৪টি রাজ্যসভার আসনের ভোটগ্রহণ হয়েছে। তার মধ্যে মধ্যপ্রদেশের ৩টি আসনেও ভোট নেওয়া হয়েছে বিধানসভা ভবনে। এ দিন বেলা পৌনে ১টা নাগাদ সেখানে এসে দাঁড়ায় একটি অ্যাম্বুল্যান্স। তার ভিতর থেকে নামেন বিধায়ক কুণাল চৌধুরি। পিপিই-তে আপাদমস্তক ঢাকা। হাতে মোবাইল। সঙ্গে এক স্বাস্থ্যকর্মী এবং তিনিও একই পোশাকে। এর পর ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ান। তাঁকে লাইনে দাঁড়াতে দেখে অন্যান্য বিধায়করা কিছুটা হকচকিয়ে যান। তার পর সরে যান নিরাপদ দূরত্বে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভিতরে ঢুকে ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসেন।
@INCMP @KunalChoudhary_ ने पीपीई किट पहनकर #RajyaSabhaElection में किया मतदान @bjp4mp नेता @drhiteshbajpai ने कहा @ECISVEEP द्वारा #कोरोना +ve विधायक को परिसर में प्रवेश की अनुमति महामारी नियंत्रण नियमों का उल्लंघन @ndtvindia @ndtv pic.twitter.com/wwAr9cLagu
— Anurag Dwary (@Anurag_Dwary) June 19, 2020
আরও পড়ুন: পাঠানো হল যুদ্ধবিমান, চূড়ান্ত সতর্কবার্তা বায়ুসেনাকে
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘পুরোপুরি সাবধানতার সঙ্গে পিপিই কিট পরে ১২টা ৪৫ মিনিটে অ্যাম্বুল্যান্সে করে বিধানভবনে পৌঁছই। একটু ভয় ভয় করছিল, যেটা খুব স্বাভাবিক। আমাদের দলীয় প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার পর চলে এসেছি।’’ জানা গিয়েছে, কুণাল চৌধুরি গত ৬ জুন থেকে সর্দি-কাশি, জ্বরের উপসর্গ অনুভব করতে শুরু করেন। ১২ জুন তাঁর রিপোর্ট আসে করোনা পজিটিভ। তার পর থেকেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সেখান থেকেই এ দিন অ্যাম্বুল্যান্সে করে ভোট দিতে আসেন।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, করোনা আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও ভোট দিতে যাওয়া কি খুব জরুরি ছিল? বিশেষ করে যেখানে কোভিড আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি। এমনকি, পিপিই পরে থাকলেও অন্যের দেহে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। এই প্রশ্ন তুলেই রাজ্যের বিজেপি নেতা হিতেশ বাজপেয়ী বলেছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন যে করোনা পজিটিভ বিধায়কের বিধানসভা ভবনে ঢুকে ভোট দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে, সেটা মহামারি নিয়ন্ত্রণ আইন বিরুদ্ধ। জবাবে বিধায়ক কুণাল চৌধুরির পাল্টা খোঁচা, ‘‘যাঁরা একটা পঞ্চায়েত ভোটে পর্যন্ত জিততে পারেন না, তাঁরা আমার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলছেন? ওঁর উচিত ওঁদের দলের নেতাদের প্রশ্ন করা, যাঁরা দিল্লিতে সরকার চালাচ্ছেন।‘’
আরও পড়ুন: সীমান্তে শুরু ‘এয়ার ডমিন্যান্স’? সকাল থেকে লাদাখে উড়ছে অ্যাপাশে-চিনুক
মার্চ মাসে ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের প্রকোপে পিছিয়ে আজ শুক্রবার দেশের ১০ রাজ্যের ২৪টি রাজ্যসভার আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে। রাজ্যসভার ২৮টি আসনের মধ্যে রয়েছে গুজরাত, কর্নাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশর ৪টি করে আসন। রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে ভোট হচ্ছে তিনটি করে আসনে। দু’টি আসন রয়েছে ঝাড়খণ্ডে। এ ছাড়া উত্তর-পূর্বের চার রাজ্য মণিপুর, মেঘালয়, অরুণাচল মিজোরামের ভোটগ্রহণ হয়েছে একটি করে আসনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy