Advertisement
০৪ মে ২০২৪

দেশসেবার ডাক বায়ুসেনা প্রধানের

নিজেকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে দেশকে কিছু ফিরিয়ে দাও, কর্মজীবনের প্রান্তে দাঁড়িয়ে নিজের স্কুলের ক্যাডেটদের এমন করেই উদ্বুদ্ধ করলেন দেশের বায়ুসেনা প্রধান অরূপ রাহা। শনিবার পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের প্রথম ব্যাচের এই প্রাক্তনী নিজের স্কুলে এক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। সেখানেই এমন আকাঙ্খার কথা জানান।

পুরুলিয়ায় সৈনিক স্কুলের অনুষ্ঠানে অরূপ রাহা। —নিজস্ব চিত্র

পুরুলিয়ায় সৈনিক স্কুলের অনুষ্ঠানে অরূপ রাহা। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:১০
Share: Save:

নিজেকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে দেশকে কিছু ফিরিয়ে দাও, কর্মজীবনের প্রান্তে দাঁড়িয়ে নিজের স্কুলের ক্যাডেটদের এমন করেই উদ্বুদ্ধ করলেন দেশের বায়ুসেনা প্রধান অরূপ রাহা। শনিবার পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের প্রথম ব্যাচের এই প্রাক্তনী নিজের স্কুলে এক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। সেখানেই এমন আকাঙ্খার কথা জানান।

শীতের দুপুরে নিজের কথা বলতে গিয়ে দেশের বায়ুসেনা প্রধান ফিরে যান স্মৃতিতে। বলেন, ‘‘আজ আমি যেখানে রয়েছি, তার শুরুটা হয়েছিল এই স্কুলেই। স্কুলের পাঠ চুকিয়ে ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমিতে। তারপরে বায়ুসেনায় যোগ দিই।’’ কথার ফাঁকেই জানালেন, চলতি মাসেই অবসর। সেই হিসেবে সেনাপ্রধানের এটাই শেষবার পুরুলিয়ায় স্কুলে আসা।

এই স্কুলের কাছে যে তিনি কত ভাবে ঋণী তা বারেবারে বলেছেন ক্যাডেটদের। বায়ুসেনা প্রধান বলেন, ‘‘এই স্কুলের পরিবেশ নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা, বন্ধুত্বপূর্ণ মানসিকতা, দেশের জন্য দায়বদ্ধতা, ত্যাগের মানসিকতা তৈরি করে।. এই স্কুলে যে পরিকাঠামো রয়েছে সকলে তা অনেকেই পায় না। এই পরিবেশে নিজেকে তৈরি করে দেশেকে কিছু ফিরিয়ে দাও।’’ ক্যাডেটরা দেশের সেনাবাহিনীতে বিশেষত বায়ুসেনা বিভাগে যোগদানে আরও এগিয়ে আসবে বলেও তিনি আশাবাদী। এ দিন স্কুলে নিজের নামাঙ্কিত ‘অরূপ রাহা মোটিভেশন হল’ নামে একটি হল ও একটি কনফারেন্স হলের দ্বারোদ্ঘাটন করেন এই প্রাক্তনী।

প্রাক্তনীর হাতে স্কুল জীবনের কয়েক’টি ছবি তুলে দেন স্কুলের অধ্যক্ষ কর্ণেল রাহুল শর্মা। ফেলে আসা দিনের কয়েক’টি ছবি হাতে দৃশ্যতই স্মৃতিমেদুর হয়ে যান অরূপবাবু। জানালেন, ১৯৬৫ সালে হুগলির বৈদ্যবাটি থেকে আর পাঁচটা কিশোরের মতো তিনিও স্কুলে পড়তে এসেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘কত যে টুকরো টুকরো স্মৃতি ছড়িয়ে তা কোনও দিন ভোলা যাবে না।’’ তিনি যখন ছাত্র ছিলেন, সে সময়ের তিন প্রাক্তন কর্মীর হাতে স্কুলের পক্ষ থেকে স্মারক তুলে দিয়ে সম্মানিত করেছিলেন তিনি। গর্বে বুক ভরে উঠেছিল তাঁর।

বায়ুসেনা প্রধানের সহপাঠী এই স্কুলেরই প্রাক্তনী বর্তমানে ভানুপুরা পীঠের শঙ্করাচার্যও এসেছিলেন এই অনুষ্ঠানে। পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের আদর্শ পরিবেশের কথা জানিয়ে তিনিও ক্যাডেটদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের আহ্বান জানান। অধ্যক্ষ কর্ণেল রাহুল শর্মা তাঁর জানান, স্কুলে একটি হল গড়তে আর্থিক সাহায্য তিনি ২০ জন সাংসদকে চিঠি লিখেছিলেন। কিন্তু মাত্র এক জন সাংসদ সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছেন। সেই প্রদীপ ভট্টাচার্য এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রদীপবাবুও আহ্বান করেন, ‘‘আমি অভিভাবকদের কাছে আবেদন রাখছি সন্তানদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করুন।’’ পাশাপাশি তাঁর প্রস্তাব সৈনিক স্কুলের মতো স্কুলে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও পড়ানো হোক। সকলের কথা শুনে আপ্লুত ক্যাডেট মুকুন্দ মাহাতো, প্রশান্ত কুমার, মনজিত রোশন, অরিত্র সিংহ, তুহিন রায়েরা। বলছেন, ‘‘স্কুলের পাঠ শেষে সেনাবাহিনীতে বিশেষত বায়ুসেনায় যোগ দিতে চাই।’’

এ দিনের অনুষ্ঠানে বিধায়ক নেপাল মাহাতো, জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তীও উপস্থিত ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Air force chief
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE