আটক: ত্রিপুরার আমতলী থানা চত্বরে ধৃত ৩১ রোহিঙ্গা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
এক দিকে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আটক ৩১ জন রোহিঙ্গার দল, অন্য দিকে অসমের করিমগঞ্জে আটক ৩০ জন রোহিঙ্গার দল—পুলিশি জেরায় দু’দলের সদস্যরাই জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর ধরে তাঁরা জম্মু-কাশ্মীরেই ছিলেন। তাঁদের কাছে ছিল বা আছে ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশনার ফর রিফিউজিস (ইউএনএইচসিআর)-এর দিল্লি অফিসের দেওয়া শরণার্থী কার্ড বা সার্টিফিকেট। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁদের ঠাঁই হল জেলে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক সূত্রের বক্তব্য, রোহিঙ্গাদের শরণার্থীর মর্যাদা ভারত মানে না। সে কারণেই অনুপ্রবেশের দায়ে তাঁদের জেলবন্দি করা হয়েছে।
ত্রিপুরার রায়েরমুড়া বাংলাদেশ সীমান্তের জিরো লাইনে আটকে পড়া ৩১ জনের দলটিকে নিয়ে গত কাল পর্যন্ত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে টানাপড়েন চলেছে। শেষ পর্যন্ত আজ সকালে বিএসএফ তাঁদের কাঁটাতারের বেড়ার এ পাশে নিয়ে এসে ত্রিপুরা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তাঁদের আমতলী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওসি প্রণব সেনগুপ্ত জানান, তাঁদের ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। খাবার দেওয়া হয়। এরপর তাদের জেরা শুরু করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতে বেআইনি প্রবেশের দায়ে মামলা রুজু করা হয়েছে। পরে তাঁদের আদালতে তোলা হলে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
দলের একজন সংবাদমাধ্যমকে জানান, তাঁরা জম্মু-কাশ্মীরে ছিলেন। প্রায় ২৫০০ রোহিঙ্গা পরিবার সেখানে ছিলেন। তার মধ্যে প্রায় দেড় হাজার পরিবার বিভিন্ন সময়ে দালালের মাধ্যমে বাংলাদেশে চলে গিয়েছেন। তাঁরাও যেতে চাইছিলেন। দালাল জন প্রতি ৮০০ টাকা করে নিয়েওছিল। কিন্তু মাঝপথে তাদেরকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ওই ব্যক্তির অভিযোগ, তাঁদের কাছ থেকে সমস্ত ধরনের কাগজপত্র বিজিবি কেড়ে নেয়। মারধর করে।
ইউএনএইচসিআর-এর দেওয়া কার্ড।
তবে অসমে আটক রোহিঙ্গাদের দলটির হাতে রয়েছে ইউএনএইচসিআর-এর দেওয়া রিফিউজি কার্ড বা সার্টিফিকেট। দলের একজনের বক্তব্য, জম্মুতে থাকার সময়েই কার্ডগুলি তাঁদের দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এই কার্ড থাকলে ভারতে কেউ কোথাও আটকাবে না।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মায়ানমারের এই বাসিন্দারা ৬ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে কলকাতা হয়ে যায় জম্মু-কাশ্মীরে। তাঁদের কথায়, রাজু ও বিশ্বজিৎ নামে দুই দালালের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বে ঢোকে। কিন্তু ‘বিদেশি’ প্রশ্নে বন্ধ ইত্যাদি দেখে ফের জম্মুতে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। গুয়াহাটি থেকে জম্মু-কাশ্মীরের ট্রেন ধরাই ছিল তাঁদের লক্ষ্য। আপাতত তাঁদের জেলে পাঠিয়েছে আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy