Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জেটলির খোঁচা, তালাক তরজা এড়াল কংগ্রেস

তিন তালাককে ঘিরে এ বারে শুরু হল রাজনীতিও। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এত বছর ধরে এই প্রথা জিইয়ে রাখার জন্য দুষলেন পুরনো সরকারকে। জবাবে কংগ্রেস বলল, বিজেপির রাজনীতির ফাঁদে পা দেবে না তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:০০
Share: Save:

তিন তালাককে ঘিরে এ বারে শুরু হল রাজনীতিও। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এত বছর ধরে এই প্রথা জিইয়ে রাখার জন্য দুষলেন পুরনো সরকারকে। জবাবে কংগ্রেস বলল, বিজেপির রাজনীতির ফাঁদে পা দেবে না তারা।

জেটলি আজ এক নিবন্ধ লিখে বলেন, ‘‘তিন তালাকের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সামনে প্রশ্ন একটাই। ‘পার্সোনাল ল’ সংবিধানে দেওয়া মৌলিক অধিকারের সঙ্গে খাপ খাচ্ছে কি না। অতীতের সরকারগুলি এটি নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান নেওয়ার প্রশ্নে বারবার পিছিয়ে এসেছে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর সরকার এই নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে।’’ আগের ও বর্তমান সরকারের মধ্যে তুলনা টেনে জেটলি বিতর্ক উস্কে দিতে চাইলেও কংগ্রেস অবশ্য তার নিজস্ব রাজনীতির অঙ্ক কষেই তিন তালাক নিয়ে তরজায় জড়াতে নারাজ।

ঘটনাচক্রে এ দিনই উত্তরপ্রদেশের মুসলিম নেতা ওবাইদুল্লাহ খান আজমি দিল্লিতে এআইসিসির সদর দফতরে এসে কংগ্রেসে যোগ দেন। তিনি মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডেরও সদস্য। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর কাছে প্রশ্ন আসে তিন তালাক নিয়ে। কংগ্রেস এ যাবৎ তিন তালাক নিয়ে কোনও স্পষ্ট মত না জানিয়ে বিষয়টি ‘বিচারাধীন’ বলে এড়িয়ে এসেছে। সরকারের বিরোধিতার পথেও হাঁটেনি। কিন্তু আজমি আজ এর বিরোধিতা করে বলেন, ‘‘সরকার বেইমানি করলে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন হবে।’’

পাশে বসে থাকা গুলাম নবি আজাদ বারবার আজমির কানে বলে দেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন বলে বিষয়টি এড়িয়ে যেতে। কিন্তু আজমি সে সবে কান না দিয়েই এর বিরোধিতা করতে থাকেন। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গুলাম নবি বলেন, ‘‘আসলে বিজেপি একের পর এক বিষয় সামনে এনে নিজেদের সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে চাইছে। আর চাইছে, তা নিয়েই আমরা লড়াই করি। তিন তালাকের প্রশ্ন তুলে এখন মুসলমানদের মধ্যেই লড়াই বাধাতে চাইছে। কিন্তু আমরা এই ফাঁদে পা দেব না।’’

সরকার কিন্তু কোনও ভাবেই রণে ভঙ্গ দিতে চাইছে না। জেটলির মতে, আইনে বদল এনে নেহরু হিন্দু পার্সোনাল ল-এ অনেক সংস্কার করেছিলেন। হিন্দু নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য ঘোচাতে মনমোহন সিংহ সরকারও পদক্ষেপ করেছিল। অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে খ্রিস্টানদের বিবাহ ও বিচ্ছেদেও লিঙ্গবৈষম্য ঘোচানো হয়। মহিলাদের সম্মান ও অধিকার সুনিশ্চিত করতে যে আইন অকেজো, তার বদল প্রয়োজন। পার্সোনাল ল মেনে ধর্মীয় আচার, জন্ম, দত্তক, বিবাহ, মৃত্যু সম্পর্কিত ধর্মীয় অনুষ্ঠান হতে পারে। কিন্তু যখন অধিকারের প্রশ্ন আসে, তখন সংবিধান মানতে হবে। জেটলির মতে, তিন তালাকের সঙ্গে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি গুলিয়ে ফেললে হবে না। সরকার সুপ্রিম কোর্টে তার মত জানিয়েছে। আর ল কমিশন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে নিছক তাত্ত্বিক আলোচনা করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE