Advertisement
E-Paper

বন্যার জলে ক্ষতিগ্রস্ত অসমের চা বাগান

বন্যায় বিধ্বস্ত অসমের চা চাষও। টানা বৃষ্টির জেরে জুলাই মাসে চায়ের উৎপাদন স্বাভাবিকের তুলনায় ২০-৩০ শতাংশ কমেছে। ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়া, উত্তর লখিমপুর, শিবসাগর, যোরহাটের বিভিন্ন অংশ চা বাগানগুলিতে বন্যার জল ঢুকে থাকায় উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৬ ০৪:০৪
ভরসা কলাগাছের ভেলা। বন্যাকবলিত অসমের মরিগাঁওয়ে। এপি-র ছবি।

ভরসা কলাগাছের ভেলা। বন্যাকবলিত অসমের মরিগাঁওয়ে। এপি-র ছবি।

বন্যায় বিধ্বস্ত অসমের চা চাষও। টানা বৃষ্টির জেরে জুলাই মাসে চায়ের উৎপাদন স্বাভাবিকের তুলনায় ২০-৩০ শতাংশ কমেছে। ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়া, উত্তর লখিমপুর, শিবসাগর, যোরহাটের বিভিন্ন অংশ চা বাগানগুলিতে বন্যার জল ঢুকে থাকায় উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টিএআই ও আইটিএ-র অসম শাখার মতে, ওই ক্ষতি পুরণ করা অসম্ভব। বাকি বছরের আবহাওয়া অনুকূল থাকলে সর্বাধিক দশ শতাংশ ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব হবে।

এমনই পরিস্থিতির মধ্যে চা শিল্পের পক্ষে ভাল খবরও মিলেছে। ভারতে প্রথম জাপানি গ্রিন টি-র কারখানা তৈরি হয়েছে উজানি অসমের তিনসুকিয়ায়। ছোটা টিংরাই চা বাগানে তৈরি হয়েছে সেই কারখানা। সেখানে জাপানি গ্রিন চা তৈরির যন্ত্র, প্রযুক্তি আসবে টোকিও থেকে।

জাপানে তৈরি চায়ের সিংহভাগই গ্রিন টি। তা স্বাদে-গুণে বিশ্বখ্যাত। গুরিচা ও হোজিচা হল জাপানি গ্রিন চায়ের দুই প্রজাতি। গুরিচার পাতা হয় গোলাকার। থাকে হালকা লিকার। চুমুকের পরে জিভ-ঠোঁটে লেগে থাকে মিষ্টি স্বাদ। হোরিচা রোস্টেট জাপানি চা। ক্যাফেনমুক্ত এই চা স্বাস্থ্যগুণে সেরা। টিংরাইয়ের বাগানে এখন ওই দু’ধরণের চা উৎপাদন করা হচ্ছে। গাঁটছড়া বাঁধা হয়েছে জাপানের হারা পরিবারের সঙ্গে। কারখানার নামও দেওয়া হয়েছে ‘ছোটা টিংরাই হারা গ্রিন টি ফ্যাক্টরি’। জাপানি বিশেষজ্ঞদের সেখানে নিয়ে এসে, তাঁদের তত্ত্বাবধানেই জাপানি চা তৈরির কাজ চলছে ৬০০ হেক্টর বাগানে। সোজি হারা ও মাসানোরি ইয়ানাগাওয়া নামে জাপানের দুই গ্রিন টি কারখানার বিশেষজ্ঞরা গত বছর নভেম্বর মাসে ছোটা টিংরাইয়ে পৌঁছে সেখানকার চা উৎপাদন, চা পাতার মান, পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে যান। তাঁদের পরামর্শ অনুযায়ী এগোনো হয়েছে। জানা গিয়েছে, সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি ওই কারখানায়, স্বয়ংক্রিয় ও আধুনিক জাপানি প্রযুক্তিতে বছরে তিন লক্ষ কিলোগ্রাম জাপানি সবুজ চা তৈরি করা হবে। সোজি হারা জানান, জাপানি স্টিমিং প্রযুক্তিতে চা পাতার সবুজ রং বজায় থাকে। বাড়ে স্বাদ। ভারতের বুকে এমন কারখানা এই প্রথম।

টিংরাই চা বাগানের কর্তৃপক্ষের দাবি, ভারতে এখন যে ধরণের গ্রিন টি তৈরি হয়, তা থেকে তাঁদের কারখানায় তৈরি চায়ের মান অনেকটাই ভিন্ন হবে। জাপানি প্রযুক্তি ও অসমীয়া সবুজ পাতার মিশ্রণে এই কারখানার চা পাতায় সবুজ পালিশ দৃশ্যমান হবে। সঙ্গে থাকবে মৃদু লিকার, মিষ্টি স্বাদ। এই কারখানায় তৈরি চা ভারতের পাশাপাশি, আমেরিকাতেও রফতানি করার পরিকল্পনা রয়েছে।

অন্য দিকে টানা বৃষ্টির জেরে অসমে জুলাই মাসে চায়ের উৎপাদন স্বাভাবিকের থেকে ২০-৩০ শতাংশ কমেছে। চলতি বছর বৃষ্টি ও বন্যার দাপটে জুলাই মাসে চা উৎপাদন ব্যাপক ধাক্কা খায়। জুলাই মাসে অন্তত ২০ মিলিয়ন কিলোগ্রাম চা কম উৎপাদিত হয়েছে। জুলাই মাসেই রাজ্যের সেরে মানের চা উৎপাদিত হয়। চা বিশেষজ্ঞদের মতে অসমের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় অনাবৃষ্টির চেয়েও বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে অতিবৃষ্টি এব বন্যা। বৃষ্টি কম হলে সেচের সাহায্য নেওয়া যায়। কিন্তু বাগানে বন্যার জল ঢুকলে কিছুই করার থাকছে না। অবশ্য চলতি বছর জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত চায়ের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় ১৩ মিলিয়ন কিলোগ্রাম বেশি হয়েছে। সেটাই আশার কথা।

assam Tea garden Flood
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy