Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

অযোধ্যা: শুনানি শুরু নয়া বছরেই

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ আর বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কলের বেঞ্চ ৪ জানুয়ারি শুনানির পরে জানাতে পারে শীর্ষ আদালতের কোন বেঞ্চ রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলাটি চলবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৬
Share: Save:

কোন দিকে গড়াবে অযোধ্যার রাজনীতি, স্পষ্ট হতে পারে নতুন বছরেই।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ আর বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কলের বেঞ্চ ৪ জানুয়ারি শুনানির পরে জানাতে পারে শীর্ষ আদালতের কোন বেঞ্চ রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলাটি চলবে। গেরুয়া শিবিরের শত চেষ্টাতেও গত অক্টোবরে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মাত্র চার মিনিটে শুনানি শেষ করে বুঝিয়ে দিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্ট চলবে নিজের গতিতেই। সেই সময়েই শীর্ষ আদালত জানুয়ারিতে শুনানির কথা জানায়। নতুন বছরে আদালত খুললে ৪ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি স্থির করতে পারে, কোন তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই শুনানি করবে।

কিন্তু আজ দুপুরেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বিজেপি দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, সরকার চায় প্রতিদিন শুনানি হোক অযোধ্যা মামলার। এই দাবি বিশ্ব হিন্দু পরিষদেরও। তবে কবে থেকে এই শুনানি শুরু হবে, রোজ শুনানি হবে কি না— তা ঠিক করবে নতুন বেঞ্চই। ফলে ৪ জানুয়ারি, শুক্রবারই সে’টি স্পষ্ট না-ও হতে পারে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা অলোক কুমার বলেন, ‘‘অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, সুপ্রিম কোর্টের উপর খুব বেশি ভরসা নেই। ফলে তারা প্রতিদিন শুনানি শুরু করবে, এমনটা জোর গলায় বলতে পারছি না। তবে আশা করি সেটা হবে।’’

সুপ্রিম কোর্টের পদক্ষেপের উপরে যে বিজেপির ভোট-ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে, ঘরোয়া মহলে তা অস্বীকার করছেন না নেতারা। আজই এবিপি-নিউজ আর সি-ভোটার এক সমীক্ষা করে— এখনই লোকসভা নির্বাচন হলে কী হবে? তাতে দেখা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশে সপা-বসপা জোট যদি না-হয়, তা হলে এনডিএ ৮০টির মধ্যে ৭২টি আসন পেয়ে বাজি মারবে। কিন্তু জোট হয়ে গেলে সে’টি কমে দাঁড়াবে ২৮টিতে। আর গোবলয়ের সব থেকে বড় রাজ্যে যদি এই হাল হয়, তা হলে শিয়রে শমন। এই পরিস্থিতিতে গেরুয়া শিবির মনে করছে, একমাত্র মন্দির রাজনীতিই বিজেপিকে পার করাতে পারে।

সদ্য গত কালই লখনউয়ে যখন রাজনাথ সিংহ, যোগী আদিত্যনাথ বিজেপি-আরএসএসের যুবকর্মীদের সম্মেলন করছিলেন, স্লোগান ওঠে— ‘‘মন্দির যো বানায়েগা, ভোট উসি কো যায়েগা!’’ বক্তৃতা থামিয়ে যোগীকে আশ্বাস দিতে হয়, মন্দির বিজেপিই বানাবে। কিন্তু মোদী-অমিত শাহ সুপ্রিম কোর্টের অবস্থান দেখেই পদক্ষেপ করতে চান। সাধু-সন্তরা ইতিমধ্যেই মোদীকে ‘আদেশ’ দিয়েছেন, আইন বা অধ্যাদেশ এনে রামমন্দির নির্মাণের পথ প্রশস্ত করতে। যোগগুরু রামদেবও বলছেন, মন্দির তৈরি না-হলে বিজেপির উপরে ভরসা উঠে যাবে।

তাই ভোটের আগে আইন বা অধ্যাদেশ এনে মন্দিরের পথ প্রশস্ত করতে সরকারের উপর প্রবল চাপ রয়েছে। তবে সুপ্রিম কোর্টের জন্য অপেক্ষা করার কথা সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতকেও জানিয়েছে বিজেপি। গত সপ্তাহে গুজরাতের রাজকোটে একান্ত বৈঠক হয় মোহন ভাগবত আর অমিত শাহের। সেখানেই সঙ্ঘকে এই অবস্থান জানানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে ভোটের আগে কোর্ট যদি রোজ শুনানি করে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি না-করে, তা হলে বিকল্প ভাবতে হবে মোদী সরকারকে। সেই নিরিখে আদালতের দিকেই তাকিয়ে সব পক্ষ। আইনের দাবি সমর্থনের জন্য রাহুল গাঁধীর উপরেও চাপ বাড়াতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতারা। কিন্তু কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আজ বলেন, ‘‘শীর্ষ আদালত যখন জানুয়ারিতে শুনানি করবেই, আগ বাড়িয়ে কোনও পদক্ষেপের প্রয়োজনটা কী?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE