Advertisement
০২ জুন ২০২৪

সাড়ে ছ’দিন ব্যাঙ্ক বন্ধ, উৎসবে ট্যাঁকেই টান

উৎসবের মরসুমে মানুষের টাকার প্রয়োজন কিছু বেশিই থাকে। কিন্তু টাকা থাকতেও ঠিক সময়ে তা হাতে আসবে কি না, তা নিয়ে এ বার সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ, মহাসপ্তমী থেকে সাত দিনের মধ্যে সাড়ে ছ’দিনই যে ছুটি! তাই অক্টোবরের গোড়াতেই দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো ও ঈদুজ্জোহার মধ্যে ব্যাঙ্ক পরিষেবা নিয়ে গ্রাহকেরা চিন্তিত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:০০
Share: Save:

উৎসবের মরসুমে মানুষের টাকার প্রয়োজন কিছু বেশিই থাকে। কিন্তু টাকা থাকতেও ঠিক সময়ে তা হাতে আসবে কি না, তা নিয়ে এ বার সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ, মহাসপ্তমী থেকে সাত দিনের মধ্যে সাড়ে ছ’দিনই যে ছুটি! তাই অক্টোবরের গোড়াতেই দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো ও ঈদুজ্জোহার মধ্যে ব্যাঙ্ক পরিষেবা নিয়ে গ্রাহকেরা চিন্তিত।

দুর্গাপুজো এ বার তিন দিনের। ১ অক্টোবর, বুধবার সপ্তমী। ২ তারিখ, বৃহস্পতিবার একই দিনে মহাষ্টমী আর মহানবমী। এবং ৩ অক্টোবর, শুক্রবার বিজয়াদশমী। ফলে তিন দিনই ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকবে। ৪ তারিখ শনিবার, তাই আধবেলা কাজ হয়েই ছুটি। রবিবার তো ছুটিই। তার পরে সোমবার, ৬ অক্টোবর ঈদুজ্জোহা এবং মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর লক্ষ্মীপুজোর ছুটি। শুধু তা-ই নয়। ষষ্ঠী অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বরও আমজনতার কাছে ব্যাঙ্ক কার্যত বন্ধই। কারণ, অর্ধ-বার্ষিক হিসেবনিকেশের জন্য ওই দিন কোনও লেনদেন হবে না। সেই হিসেবে গ্রাহকদের দিক থেকে সাড়ে ছ’দিন নয়, একটানা সাড়ে সাত দিন ব্যাঙ্কে লেনদেন বন্ধ থাকছে। শনিবারের পরে ফের ব্যাঙ্ক খুলবে সেই বুধবার, ৮ অক্টোবর।

মহোৎসবের আনন্দ সর্বাঙ্গীণ করতে চাই টাকা। কিন্তু সেই সময়ে টানা সাত দিন ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় মানুষ অসুবিধায় পড়বেন বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্যাঙ্ককর্তাদের একাংশ অবশ্য বলছেন, ওই ক’দিন এটিএম বা নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে জরুরি কাজ সারা সম্ভব হবে। কিন্তু এই যুক্তিতে তেমন আশ্বস্ত হওয়া যাচ্ছে না। কারণ ব্যাঙ্ককর্তারাই জানাচ্ছেন, সাত দিন চেক ক্লিয়ারিং হবে না। ফলে কয়েক লক্ষ চেক আটকে থাকবে।

ব্যাঙ্ককর্তাদের অনেকে মনে করছেন, শাখা বন্ধ থাকায় টাকার দরকারে প্রায় সব গ্রাহকই এটিএমে ভিড় করবেন। সেই জন্য ছুটির দিনে ব্যাঙ্ক পরিষেবা ঠিক রাখতে এটিএমে পর্যাপ্ত টাকা রাখতে হবে। সেটা নিশ্চিত করা খুব সহজ নয়। কারণ অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাজেন নাগর জানাচ্ছেন, ব্যাঙ্কের লোকেরা মোটেই এটিএমে টাকা ভরেন না। বাইরের এজেন্সিকে দিয়ে তাতে টাকা ভরানো হয়। অনেকেই বলছেন, পুজোর ছুটির দিনগুলিতে এটিএমে টাকা ফুরিয়ে না-যায়, বাইরের সংস্থা যাতে গ্রাহকদের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সময়মতো যথেষ্ট টাকা ভরে দেয়, সেই ব্যাপারে ব্যাঙ্ককর্তাদেরই সতর্ক থাকতে হবে।

তাঁরা সতর্ক আছেন বলে জানান স্টেট ব্যাঙ্কের বেঙ্গল সার্কেলের চিফ জেনারেল ম্যানেজার সুনীল শ্রীবাস্তব। তিনি বলেন, “এটিএমে যথেষ্ট টাকা রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, গ্রাহকদের কোনও অসুবিধা হবে না।” তিনি জানান, যে-হেতু ওই ক’দিন ছুটির জন্যই ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকছে, তাই শাখা খোলা রাখার ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে না। তা ছাড়া যাঁরা নেট ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় নথিভুক্ত, তাঁরা তো দু’-একটি ছাড়া বাকি প্রায় সব পরিষেবার সুবিধাই পাবেন। প্রায় একই কথা জানিয়েছে এইচডিএফসি এবং আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কও।

তবে একটানা ছুটিতে যে কয়েক লক্ষ চেক জমে যাবে, সে-কথা মেনে নিয়েছে ব্যাঙ্কগুলি। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিন প্রায় দেড় লক্ষ চেক ক্লিয়ারিংয়ে যায়। তার মধ্যে শুধু স্টেট ব্যাঙ্কই ‘ক্লিয়ার’ করে প্রায় ৭৫ হাজার চেক। লাগাতার সাত দিন ছুটি থাকায় ওই ক’দিনে কয়েক লক্ষ চেক ‘ক্লিয়ার’ না-হয়ে জমে থাকবে। যাঁরা এটিএমের মাধ্যমে অথবা শনিবার ব্যাঙ্কে গিয়ে চেক জমা দেবেন, তাঁদের চেক ক্যাশ হতে দেরি হবে বলেই জানাচ্ছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক।

স্টেট ব্যাঙ্ক-কর্তা শ্রীবাস্তব অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, বুধবার ব্যাঙ্ক খোলার পরেই চটজলদি চেক ক্লিয়ার করার ব্যবস্থা করা হবে। এখন ‘চেক ট্রানকেশন সিস্টেম’ (সিটিএস) ব্যবস্থায় চেক আর ক্লিয়ারিং হাউসে পাঠাতে হয় না। অনলাইন ব্যবস্থায় চেকের ছবি চলে যায় ক্লিয়ারিংয়ের জন্য। তাই কয়েক লক্ষ চেক জমলেও তা ক্লিয়ার করতে বেশি সময় লাগবে না। ব্যাঙ্ক খোলার পরে দু’-এক দিনের মধ্যেই সব চেক ক্লিয়ার করা সম্ভব হবে বলে স্টেট ব্যাঙ্কের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bank closed festive season
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE