Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সারণের গ্রামে ‘ভোজপুরি পপস্টার’

বিহারের গ্রামে প্রায় দেড় শতক আগে হারিয়ে যাওয়া ‘শিকড়’ খুঁজে বেড়াচ্ছেন রাজামোহন। নেদারল্যান্ডের রাজামোহন তাঁর ‘ভোজপুরী ব্যান্ড’ নিয়ে ইউরোপের প্রবাসী ভারতীয়দের কাছে পরিচিত মুখ। কিন্তু শিকড়ের টান অমোঘ।

সুরেলা: গিটারে সুর তুলেছেন রাজামোহন। সরনাগি গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

সুরেলা: গিটারে সুর তুলেছেন রাজামোহন। সরনাগি গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

দিবাকর রায়
পটনা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৭ ০৩:৩৮
Share: Save:

বিহারের গ্রামে প্রায় দেড় শতক আগে হারিয়ে যাওয়া ‘শিকড়’ খুঁজে বেড়াচ্ছেন রাজামোহন। নেদারল্যান্ডের রাজামোহন তাঁর ‘ভোজপুরী ব্যান্ড’ নিয়ে ইউরোপের প্রবাসী ভারতীয়দের কাছে পরিচিত মুখ। কিন্তু শিকড়ের টান অমোঘ। ১৪৪ বছর পর ছিন্নমূল রাজামোহন তাঁর শিকড়ের খোঁজে তা পৌঁছে গিয়েছেন বিহারের সারণ জেলার সরনাগি গ্রামে। ‘পপস্টার’ রাজামোহনের কথায়, ‘‘ইউরোপ আমাকে নাম ও অর্থ দিয়েছে। কিন্তু নিজের শিকড়ে পৌঁছনো খুব জরুরি। তার খোঁজেই বিহারে এসেছি।’’

রাজামোহনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সরনাগির বাসিন্দা ছোটু হরদিনকে ইংরেজরা সপরিবারে ‘বন্ধুয়া মজদুর’ বানিয়ে সুরিনামে নিয়ে যায়। সেখানে চিনির কলে কাজ করানো হত তাঁকে। তাঁর ছেলে মোহন হরদিন পরে নেদারল্যান্ডে চলে আসেন। সেখানেই ছোটখাটো ব্যবসা করে বসবাস করতে শুরু করেন তিনি। মোহনের ছেলে হরিনারায়ণ আমস্টারডামেই ব্যবসা করে প্রতিষ্ঠিত হন। হরিনারায়ণের ছেলে রাজামোহন জনপ্রিয় ভোজপুরী ‘পপস্টার’।

হঠাৎই একদিন যুবক রাজামোহন তাঁর প্রপিতামহের কাগজপত্র ঘাঁটাঘাঁটি করতে করতে জানতে পারেন ছোটু হরদিন ছিলেন সারনের সরনাগি গ্রামের বাসিন্দা। এরপর আর তর সয়নি রাজার। ভারতীয় ভিসা নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন সেই গ্রামে। গ্রামে ঘুরে ঘুরে নিজের পরিবারের বিদেশে যাওয়ার কাহিনী শোনাচ্ছেন রাজামোহন। কখনও গিটার বাজিয়ে জনপ্রিয় গানও গাইছেন। গ্রামের মানুষ খুশি। তবে তাঁর কাহিনীর সঙ্গে কোনও পরিবারের মিল আছে, তা বুঝতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। দেড়শো বছর আগের কথা!

আরও পড়ুন: গোয়েন্দা বিক্ষোভের মুখে রাজনাথ

তবে তাতে কিছু যায় আসে না। সরনাগির মানুষ আপন করে নিয়েছেন রাজামোহনকে। গ্রামের বাসিন্দা বিজয় সিংহের কথায়, ‘‘বিদেশে গিয়েও কেউ পূর্বসূরিদের খোঁজে গ্রামে এসেছেন, এটাই আমাদের ভাল লাগছে। আমরাও ছোটি হরদিনজির খোঁজ করছি। আর খোঁজ না পেলেই বা কী! রাজামোহন এই গ্রামের ছেলে হিসেবেই আমাদের কাছে থাকতে পারেন।’’ বিজয়ের দাবি, এই গ্রামের সকলেই ওঁর পূর্বসূরি।

বিহারের বাসিন্দাদের ‘বন্ধুয়া মজদুর’ বানিয়ে বিদেশ-বিভূঁইয়ে নিয়ে যাওয়া এবং ইংরেজদের অত্যাচার নিয়ে গান বেঁধেছেন ‘ইউরোপিয়ন’ রাজামোহন। নিজের গিটারে সুর দিয়ে সেই গান সকলকে শোনাচ্ছেন তিনি। তাল ঠুকছেন গ্রামবাসীরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bhojpuri popstar Netherlands
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE