Advertisement
০১ মে ২০২৪
National News

ডোকলামে দু’তরফা সেনা প্রত্যাহার, বলল ভারত, অন্য সুর চিনের

ডোকলাম নিয়ে অবশ্ষে সমঝোতায় পৌঁছল ভারত-চিন। সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সহমত হয়েছে দু’পক্ষই। ইতিমধ্যেই সেনা প্রত্যাহার করা শুরু হয়ে গিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক সোমবার সকালে এ খবর জানিয়েছে।

সামরিক সঙ্ঘাতে গিয়ে লাভ নেই, দুই বৃহৎ শক্তি তথা প্রতিবেশীকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথই নিতে হবে। মত কূটনীতিকদের। —ফাইল চিত্র।

সামরিক সঙ্ঘাতে গিয়ে লাভ নেই, দুই বৃহৎ শক্তি তথা প্রতিবেশীকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথই নিতে হবে। মত কূটনীতিকদের। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ১২:৩৯
Share: Save:

বড়সড় সাফল্য কূটনৈতিক দৌত্যে। ডোকলাম থেকে সেনা সরাতে শুরু করল ভারত এবং চিন দু’পক্ষই। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে কিছুক্ষণ আগে এক বিবৃতিতে এই খবর জানানো হয়েছে। চিন অবশ্য পাল্টা বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা বাহিনী প্রত্যাহার করেনি। ভারতই নিজেদের বাহিনী ফিরিয়ে নিয়েছে।

ভারত-ভুটান-চিন ত্রিদেশীয় সীমান্তে জুন মাসের গোড়া থেকেই উত্তেজনা ছিল। জুনের মাঝামাঝি দু’দেশই সীমান্তে বিশাল বাহিনী পাঠিয়ে দেয়। টানা আড়াই মাস দু’দেশের বাহিনী মুখোমুখি অবস্থানে থাকলেও কূটনৈতিক সংযোগ বজায় রাখা হয়েছিল বলে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে। সেই কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই দু’দেশ সমঝোতায় পৌঁছেছে এবং সেনা সরানোর বিষয়ে সহমত হয়েছে বলে সোমবার সকালে দাবি করা হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে।

আরও পড়ুন: তটরক্ষায় ঢাকার সঙ্গে বৈঠক আজ

নয়াদিল্লি আজ সকালে যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, কূটনৈতিক কথোপকথনের মাধ্যমেই সমঝোতায় পৌঁছতে পেরেছে দু’দেশ। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘‘যে এলাকায় সঙ্ঘাত তৈরি হয়েছিল, সেই ডোকলাম থেকে দ্রুত সীমান্তরক্ষীদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে এবং তা শুরুও হয়ে গিয়েছে।’’

আরও পড়ুন: সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে সেনাপ্রধানের আশঙ্কা

ভুটানের এলাকায় ঢুকে রাস্তা তৈরির চেষ্টা করছিল চিন, তা নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। ত্রিদেশীয় সীমান্তে চিনের একতরফা আগ্রাসন রুখতে ভারত ডোকলামে বাহিনী পাঠিয়ে দেয় এবং রাস্তা তৈরির কাজ আটকে দেয়। সেই থেকেই ডোকলামকে ঘিরে ভারত-চিন উত্তেজনা তুঙ্গে ছিল। চিন বার বার ভারতকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছিল, সেনা প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু ভারতের তরফে সাফ জানানো হয়, চিন সেনা না সরালে ভারতও পিছু হঠবে না। ভারত যে কখনওই সামরিক সঙ্ঘাতের পক্ষে নয়, সে কথাও নয়াদিল্লির তরফে এই তিন মাসে একাধিক বার জানানো হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে রফাসূত্রে খুঁজে বার করে দু’পক্ষই সেনা প্রত্যাহার করে নিক, নয়াদিল্লির তরফ থেকে বার বারই এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বেজিং বার বারই বলছিল, ভারতকে আগে ডোকলাম থেকে সেনা ফিরিয়ে নিতে হবে। না হলে কোনও আলোচনা হবে না।

বিদেশ মন্ত্রক আজ সকালে যে বিবৃতি দিল, তা থেকে স্পষ্ট যে ফল মিলল আলোচনাতেই। আগে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা এবং পরে তার ভিত্তিতেই সেনা প্রত্যাহার। এই ফর্মুলাতেই ডোকলামে স্থিতাবস্থা ফেরানোর পথে এগোতে পারল ভারত-চিন। ডোকলাম থেকে দু’দেশই যে ভাবে সেনা ফেরাতে রাজি হয়েছে, তাতে নয়াদিল্লির নৈতিক জয়ই দেখছে কূটনৈতিক মহল।

চিন কিন্তু এর মধ্যেই বেসুরে গেয়েছে। দু’পক্ষই ডোকলাম থেকে সেনা সরাচ্ছে বলে যে দাবি ভারত করেছে, তা নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছে বেজিং। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে এ দিন সকালে এক পাল্টা বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভারত ইতিমধ্যেই ডোকলাম থেকে বাহিনী ফিরিয়ে নিয়েছে, কিন্তু চিনা সেনা ডোকলামে টহলদারি চালিয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE