ধর্মীয় মেরুকরণের পাশাপাশি এবার দলিত এবং ওবিসি ভোটব্যাঙ্ককে একজোট করার জন্য রাজ্যওয়াড়ি পরিকল্পনা হাতে নিল বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গের প্রশ্নে মতুয়া ভোটকেও তাই পাখির চোখ করতে চাইছে বিজেপি।
উত্তরপ্রদেশে দলের বিপুল জয়ের পরেও দলের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ ব্রাহ্মণ তথা উচ্চবর্ণের হাতে থেকে যাওয়ার অভিযোগ খণ্ডন করতে পারছে না বিজেপি। সেই কারণে শুধু বিজেপিই নয়, সঙ্ঘ পরিবারের একটি অংশ দলিত কোনও ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করার পক্ষে। দল মনে করছে ডোড়া লাভ হবে এতে। এক, এই বার্তা দেওয়া যাবে যে, বিজেপি গোটা হিন্দু সমাজকে এক সুতোয় বাঁধতে চাইছে। দুই, লোকসভা ভোটের আগে দলিত ও উচ্চবর্ণের ভোটকে এক ছাতায় আনা যাবে। সে ক্ষেত্রে গুজরাতের উনার ঘটনাই হোক বা রোহিত ভেমুলার মৃত্যু— বিজেপির বিরুদ্ধে ওঠা দলিত-বিরোধিতার অভিযোগও মুছে ফেলা যাবে।
এক তো বিরোধীরা একজোট হয়ে বিজেপির গায়ে দলিত-বিরোধী তকমা সেঁটে দেওয়ায় রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্ট অস্বস্তিতে রয়েছে বিজেপি। অন্য দিকে উত্তরপ্রদেশে ভোটের পর থেকেই দলিত ভোটকে একজোট করতে মাঠে নেমে পড়েছেন মায়াবতী। যার মোকাবিলায় ওই রাজ্যে দলিত কর্মীদের নিয়ে বুথে বুথে ব্রিগেড তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন অমিত শাহ।
নিশানায় আলাদা ভাবে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। বঙ্গ জয় সম্পূর্ণ হলে তবেই স্বর্ণযুগ আসবে, মন্তব্য করেছেন বিজেপির সভাপতি অমিত শাহের। তাই এ রাজ্যে মমতার বিকল্প হয়ে উঠতে তৃণমূল স্তরে শক্তি বৃদ্ধির উপর জোর দিচ্ছে বিজেপি। তৈরি করা হবে ভিশন ডকুমেন্টও। একই সঙ্গে রাজ্যের ওবিসি ও দলিত ভোটকে কাছে টানতে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব। বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হয়েছে মতুয়া ভোটের দিকে। মতুয়া ভোট যে একা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজস্ব নয়, সেই ভোটে সিঁধ কাটতে মতুয়া সমাজের মনজয়ে একাধিক কর্মসূচি হাতে নিতে চলেছে রাজ্য বিজেপি।
নিশানায় রয়েছে জাঠ ভোটও। দীর্ঘ দিন ধরে জাঠেরা ওবিসি মর্যাদা পাওয়ার জন্য আন্দোলন করে আসছেন। দল বুঝতে পারছে জাঠেদের ওই দাবি মেনে নিলে শুধু হরিয়ানায় নয়, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশেও ওই সমাজের মানুষের সমর্থন পাবে বিজেপি। তাই সেই লক্ষ্যে সংসদে ওবিসিদের জন্য জাতীয় কমিশন গঠনের একটি বিলও আনেন মোদী সরকার। লোকসভায় তা পাশ হলেও, বিরোধীদের কারণে বিলটি রাজ্যসভার সিলেক্ট কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
তবে আগামী অধিবেশনে বিলটি পাশ করাতে সরকার মরিয়া। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানের বক্তব্য, ‘‘সিলেক্ট কমিটিকে বাদল অধিবেশনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। যাতে ওই অধিবেশনেই বিলটি পাশ হতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy