সবুজ, সাদা, গেরুয়া—সব রংই ওদের কাছে কালো। তবু কল্পনায় তারা এঁকে নিল ভারতের জাতীয় পতাকা। পৃথিবীটা ওদের কাছে অন্ধকারময় হলেও আর পাঁচটা স্কুলের মতো কাল সাড়ম্বরে স্বাধীনতা দিবস পালন করল সুধীরচন্দ্র চক্রবর্তী অন্ধজন শিক্ষায়তনের ছাত্রছাত্রীরা।
প্রস্তুতি চলছিল গত এক সপ্তাহ ধরে। গানের মহড়া, পতাকা দণ্ড তৈরি, স্কুলচত্বর সাফসুতরো করা, সবই চলছিল সমানতালে। গত কাল ভোরে ঘুম থেকে উঠে তড়িঘড়ি স্নান সেরে নেয় ওরা। ওদের কথায়, ‘‘স্বাধীনতার পতাকা ওড়াব। তাই শুদ্ধ হয়ে নিলাম।’’ নিজেরাই টানাটানি করে লোহার দন্ড নিয়ে যায় বেদীমূলে। জাতীয় পতাকা লাগিয়ে ওড়ানোর জন্য তৈরি করে। পতাকা তোলেন শিক্ষায়তনের সচিব ত্রিবেণীপ্রসাদ চক্রবর্তী। ছাত্রছাত্রীরা সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে পরিবেশন করে জাতীয় সঙ্গীত। পরে আরও দু-খানা দেশাত্মবোধক গান সমবেতভাবে গেয়ে শোনায় তারা। জন্ম থেকে অন্ধ বন্দনা, খু্ন্তে, হৈব-রা জানায়, পৃথিবীটাকে দেখতে না পারার দুঃখ কবেই ঘুচে গিয়েছে। এখন সবই স্বাভাবিক মনে হয়। টিভি দেখা অসাধ্য হলেও রেডিও তাদের খুব পছন্দ। নিয়মিত ওরা রেডিওর খবর শোনে, শোনে গান। অন্ধ পড়ুয়াদের জন্য বরাকে এটিই একমাত্র স্কুল। ত্রিবেণীবাবু জানান, দৃষ্টিহীন হলেও নিজেদের অনেক কাজ তারা নিজেরাই করতে পারে। গান-বাজনায় ওরা আগ্রহী। যেমন মুখস্থ করতে পারে, তেমনি তা মনেও রাখতে পারে। তারা ইতিমধ্যে শিখে নিয়েছে ১২টি রাগ, অনেকগুলি রবীন্দ্র, নজরুলের গানও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy