—ফাইল চিত্র।
আজ আব্বুলিস!
বাজারে টাটকা কিছু নেই। তাই নতুন করে হইচইও নেই।
গত ক’দিন ধরে রোজ সকাল হতেই জেগে উঠতেন কংগ্রেস নেতারা। হাতে এক-একটি নতুন নথি দেখিয়ে কখনও সুষমা স্বরাজকে, কখনও বসুন্ধরাকে নিশানা করতেন। রোজই তাঁদের ইস্তফার দাবি। দিনভর তা ফলাও করে প্রচার হতো সংবাদমাধ্যমে। আর দলের নেত্রীদের আড়াল করতে পাগলের মতো এ চ্যানেল ও চ্যানেলে ছুটে বেড়াতেন বিজেপির মুখপাত্ররা!
সুষমা-বসুন্ধরা পর্বে আজ যেন ক্ষণিকের যুদ্ধবিরতি! দিনভর বিজেপির মন্ত্রীদের বিমান-কাণ্ড নিয়েই তোলপাড় হয়ে গেল গোটা দেশ। তা নিয়ে অবশ্য কারও ইস্তফা দাবি করেননি বিরোধীরা। আগের মতো নথি ঘেঁটে সত্যতা যাচাই করে সমর্থনের কৌশলও নির্ধারণ করতে হয়নি বিজেপি নেতাদের। সন্ধ্যায় বিমানমন্ত্রী অশোক গজপতি রাজুকে দিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করিয়ে নতুন আক্রমণ ঠেকানোর কিছুটা চেষ্টা করা হয়েছে। তবে মোটের উপর আজ বিজেপি শিবিরে ছিল কিছুটা স্বস্তির হাওয়া।
সকালেই মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সাম্প্রতিক বিতর্ককে টেলিভিশনের প্রচার বলে মন্তব্য করেছেন। বুঝিয়েছেন, এ সব ঘটনায় সরকার পরিচালনায় কোনও ফারাক পড়ছে না। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘‘সুষমা-বসুন্ধরার ইস্তফা না হলে কি সংসদের অধিবেশন স্তব্ধ হয়ে যাবে? ললিত মোদী তো রোজ কোনও না কোনও নেতাকে নিশানা করছেন। এমনকী আপনাকেও ছাড়েননি!’’ জেটলি এই প্রশ্নে সরাসরি জবাব এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘‘পণ্য ও পরিষেবা কর বা জমি বিল দেশের অর্থনীতির জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সরকার আশাবাদী, দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলি নেতিবাচক মনোভাব নেবে না। কিছু ব্যক্তি টেলিভিশন চ্যানেলের জন্য প্রাসঙ্গিক হতে পারেন। কিন্তু ভারত সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে এর কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই।’’
ক’দিন আগে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও ঠিক এই কথাটিই বোঝাতে চেয়েছিলেন। রেডিওতে ‘মন কী বাত’ থেকে ঝাড়খণ্ড সফর হয়ে গত কালের ‘ডিজিটাল সপ্তাহ’ ঘোষণা— সর্বত্রই ললিত-বিতর্ক এড়িয়ে শুধুই উন্নয়নের কথা বলেছেন। বুঝিয়েছেন, সরকারে সব কিছু স্বাভাবিক। এমনকী স্যোশাল মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত এমন শ’দেড়েক লোককে নিজের বাসভবনে ডেকে পরামর্শ দিয়েছেন, ইতিবাচক পদক্ষেপ করতে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গালমন্দ করলে সেই মাধ্যমটিই শেষ হয়ে যাবে! প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, ‘‘আমি যা গালমন্দ শুনি, সেটি খবরের কাগজে ছাপা হলে সেটি দিয়ে তাজমহলকে মুড়ে দেওয়া যাবে!’’
কিন্তু প্রশ্ন হল, কংগ্রেস কেন আজ এত চুপ?
দলের নেতারা বলছেন, ঘরশত্রুর মতো আজ অস্বস্তি তৈরি করেছেন দলের প্রাক্তন মন্ত্রী ও রাজ্যপাল হংসরাজ ভরদ্বাজ। তিনি ললিত-কাণ্ডে কংগ্রেসের কৌশলেরই সমালোচনা করে বসেছেন। ছাড়েননি রাহুল গাঁধীকেও! হংসরাজের বক্তব্য, সংসদ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি যে দেওয়া হচ্ছে, সেটি ঠিক নয়। রাহুলও ঠিক মতো দলকে বুঝে উঠতে পারেননি। নিচু তলার কর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন না। ললিত মোদীর বিষয়টিতে আইনি ব্যবস্থা নিলেই হতো। খামোকা
হইচই করা হচ্ছে। হংসরাজের এই বক্তব্যের জবাবে অবশ্য কংগ্রেস বুঝিয়ে দিয়েছে, এই প্রাক্তন নেতার কথায় দল চলবে না। পাশাপাশি
তিনি এমন কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন যে, তাঁর কথায় মানুষের মন ভুলবে। কংগ্রেসের বক্তব্য, ললিত-কাণ্ডে সরকার ‘অপরাধ করেছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই বিরোধী দল হিসেবে কংগ্রেস এ নিয়ে সরব হবে। ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নই উঠছে না।
হংসরাজ-অস্বস্তি কাটিয়ে অবশ্য আজ দলের হয়ে আসরে নেমেছেন স্বয়ং রাহুল গাঁধী। পরশুই তিনি ইতালি থেকে ফিরেছেন। দলের পরবর্তী কৌশল নিয়ে সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। বৈঠক শেষে জেটলির সকালের মন্তব্যের জবাব দিতে সামনে আসেন কংগ্রেস নেতা পি সি চাকো। তাঁর কথায়, ‘‘অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ললিত মোদী টেলিভিশনের বিষয়। এর
মানে সরকার নৈতিকতা ও সততার পাট চুকিয়ে ফেলেছে! পলাতককে সাহায্য করে চুপ করে বসে থাকা যায় না। সরকার মনে করতে পারে, তারা পার পেয়ে যাবে। কিন্তু সেটি হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy