Advertisement
০৭ মে ২০২৪

ভারতে ওরা সক্রিয় বহু দিন ধরে: ওয়াইলি  

ভারত থেকে অনেকে তাঁর কাছে জানতে চাইছেন, এ  দেশে তথ্যচুরির জাল কতটা ছড়িয়েছে? কতটা গভীরে এর শেকড়?

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৮ ০২:১০
Share: Save:

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কমিটির কাছে গত কাল বলেছেন কংগ্রেসের কথা। ক্রিস্টোফার ওয়াইলি আজ জানালেন, ২০১০-এ বিহার বিধানসভার ভোটে সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ)-কে জেতাতে সাহায্য করেছিল কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা।

ভারত থেকে অনেকে তাঁর কাছে জানতে চাইছেন, এ দেশে তথ্যচুরির জাল কতটা ছড়িয়েছে? কতটা গভীরে এর শেকড়? তারই সূত্রে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার এই প্রাক্তন কর্মীটি টুইট করে জানিয়েছেন, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ও এর প্রতিষ্ঠাতা সংস্থা স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন ল্যাবরেটরিজ (এসসিএল) দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয় ভারতে। ২০০৩ থেকে ২০১২-র মধ্যে ভারতে অ্যানালিটিকা ও তার এসসিএল-এর কাজের সংক্ষিপ্ত খতিয়ানও দিয়েছেন তিনি। দেখা যাচ্ছে, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ মধ্যপ্রদেশ, বিহার, অসম, ঝাড়খণ্ড, এমনকী কেরল ও পশ্চিমবঙ্গেও ভোট কিংবা জেহাদি মনোভাব মোকাবিলার প্রচার মূল্যায়নের মতো বিভিন্ন কাজে জড়িত ছিল এরা।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার জন্ম আমেরিকার নির্বাচনী বাজার ধরতে। ২০১২ থেকে আমেরিকায় সক্রিয় তারা। পরে অন্যান্য দেশেও এটি হয়ে ওঠে এসসিএলের মুখ। এসসিএল কিন্তু তার অনেক আগে থেকেই সক্রিয় ভারতে। বাজার ধরার জন্য এসিএল-ইন্ডিয়া যে সব তথ্য খদ্দেরদের কাছে তুলে ধরত, তারই দু’টি ‘স্লাইড’ টুইটারে দিয়েছেন ওয়াইলি। তাতেই বলা হয়েছে, ভারতের মোট ৬০০টি জেলার ৭ লক্ষ গ্রামের তথ্যপঞ্জি রয়েছে তাদের কাছে। একেবারে বাড়ি ধরে ধরে জাতপাত থেকে শুরু করে প্রতিটি এলাকার বুথওয়াড়ি জনবসতির চরিত্র সম্পর্কে তথ্য রয়েছে তাদের অনলাইন মানচিত্রে। যা একটি অ্যাপেই পেয়ে যেতে পারে খদ্দেররা।

ভারতে অভিযোগ উঠেছে, কংগ্রেস-বিজেপি উভয় দলই সময়ে-সময়ে এসিএল ইন্ডিয়া তথা কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার পরিষেবা নিয়েছে। দু’টি দলই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিপক্ষকে কোণঠাসা করতে কোমর বেঁধে তরজায় নেমেছে। কেমব্রিজ অ্যনালিটিকা বলেছে, তারা ফেসবুক বা অন্য সূত্র থেকে মানুষের তথ্য নিয়ে কাউকে বিক্রি করে না বা ভাড়া দেয় না। কিন্তু যেটা করে সেটাও কম মারাত্মক নয়, হুঁশিয়ার করেছেন ওয়াইলি। আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জেতাতে, প্রত্যেক ভোটারের মানসিক গড়নের একটি করে মানচিত্র তৈরির ভার ছিল ওয়াইলির উপরে। সেই অনুযায়ী বিশেষ মানসিকতার ব্যক্তির কাছে পাঠানো হত জুতসই প্রচার-বস্তু। যাতে তিনি ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দেন। ট্রাম্প জিতেছেন। ওয়াইলির বক্তব্য, অ্যানালিটিকার মতো সংস্থা এ ভাবেই গণতন্ত্রকে বিপন্ন করছে। তাঁর কথায়, ‘‘এটাই আধুনিক ঔপনিবেশিকতার আসল চেহারা।’’

ফেসবুক থেকে ৫ কোটি মানুষের তথ্য চুরি নিয়ে বিশ্ব জুড়ে হইচই পড়ে যাওয়ার পরে অভিযোগ উঠেছে, নরেন্দ্র মোদীর নমো অ্যাপ থেকে মানুষের তথ্য বিদেশি হাতে চলে যাচ্ছে। একই অভিযোগ কংগ্রেসের অ্যাপ নিয়েও। সুরক্ষার সেটিং বদলে বা পুরো প্রত্যাহার করেও মানুষের আস্থা ফেরানো যাচ্ছে না। বরং সরকারের ই-সুরক্ষা সংস্থাই হুঁশিয়ার করছে, কোনও ‘সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম’-এ ব্যক্তিগত তথ্য দেবেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE