Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ইজরায়েল নিয়ে নিন্দা প্রস্তাবে সাফ না কেন্দ্রের

সমস্ত চাপ কাটিয়ে আজ নরেন্দ্র মোদী সরকার রাজ্যসভায় জানিয়ে দিল, গাজা বিতর্কে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে কোনও প্রস্তাব আনা হবে না। প্রতিবাদে কক্ষত্যাগ করেন কংগ্রেস এবং বাম-সহ বিরোধী সাংসদেরা। বিষয়টি নিয়ে গত এক সপ্তাহ রাজ্যসভায় জলঘোলার পর আজ ইতি পড়েছে গাজা বিতর্কের। প্যালেস্তাইনের গাজায় ইজরায়েলের অভিযানের বিরুদ্ধে সরব কংগ্রেস, বাম-সহ বিভিন্ন বিরোধী পক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৪ ০৩:১৯
Share: Save:

সমস্ত চাপ কাটিয়ে আজ নরেন্দ্র মোদী সরকার রাজ্যসভায় জানিয়ে দিল, গাজা বিতর্কে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে কোনও প্রস্তাব আনা হবে না। প্রতিবাদে কক্ষত্যাগ করেন কংগ্রেস এবং বাম-সহ বিরোধী সাংসদেরা। বিষয়টি নিয়ে গত এক সপ্তাহ রাজ্যসভায় জলঘোলার পর আজ ইতি পড়েছে গাজা বিতর্কের।

প্যালেস্তাইনের গাজায় ইজরায়েলের অভিযানের বিরুদ্ধে সরব কংগ্রেস, বাম-সহ বিভিন্ন বিরোধী পক্ষ। রাজ্যসভায় এ নিয়ে বিতর্কের জন্য কেন্দ্রকে চাপ দিচ্ছিল ওই দলগুলি। প্রথমে রাজি না হলেও পরে রাজ্যসভায় গাজা পরিস্থিতি নিয়ে বিতর্কে সায় দেয় কেন্দ্র।

বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আজ বলেন, “প্যালেস্তাইনের প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে। কিন্তু তার পাশাপাশি আমরা ইজরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাব। আগের সরকারও এই বিদেশনীতি নিয়েই চলেছে।” এই বিষয়ে কোনও প্রস্তাব আনার দাবিটিও কার্যত উড়িয়ে দেন তিনি। সুষমা জানান, যে সংসদীয় ধারায় এই আলোচনা হচ্ছে, সেখানে কোনও প্রস্তাব আনা অথবা ভোটাভুটির কোনও আইন নেই। তার প্রয়োজনও নেই। গোটা বিশ্বই হিংসামুক্ত হোক, এই বার্তাই সংসদ থেকে দেওয়া হচ্ছে।

মোদী সরকারের ব্যাখ্যা, ইজরায়েলের বিরুদ্ধে দিল্লি নিন্দা প্রস্তাব আনবে কি না তা প্যালেস্তাইনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের উপর নির্ভরশীল নয়। তা নির্ভর করছে ওই অবস্থান নিলে আখেরে ভারতের লাভ -ক্ষতির উপর। এই পরিস্থিতিতে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে প্রস্তাব নেওয়ার প্রশ্নই উঠছে না। এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও চাননি মোদী। কিন্তু সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রীপ্রকাশ জাভড়েকর আলোচনায় রাজি হন। তখন সংসদীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু দাবি করেন, তিনিও বিষয়টি নিয়ে কিছু জানতেন না। ফলে, দলের মধ্যেই চাপানউতোর তৈরি হয়।

আজ অবশ্য সেই অস্বস্তি কাটিয়ে বিজেপি-র সব সাংসদরাই একসুরে কথা বলেছেন গাজা বিতর্কে। বিজেপি সাংসদ চন্দন মিত্র জানিয়েছেন, প্যালেস্তাইনের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েও ইজরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কে পিছিয়ে আসতে চায় না ভারত।

সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ এবং আনন্দ শর্মা, জেডিইউ-র শরদ যাদব আক্রমণ করেন সরকারকে। সীতারামের কথায়, “ইজরায়েল প্যালেস্তাইনের জমি দখল করে আক্রমণ চালাচ্ছে। আগে এই দখলদারি মুক্ত করা হোক।”

অবিলম্বে এই ঘটনার নিন্দা করে সংসদীয় প্রস্তাব নিতে কেন্দ্রকে অনুরোধ করেন ইয়েচুরি। পাশাপাশি ইজরায়েলের কাছ থেকে অস্ত্র কেনা বন্ধ করারও দাবি তোলেন তিনি। আনন্দ শর্মা প্রশ্ন তোলেন, প্রধানমন্ত্রী ব্রিকস সম্মেলনের মঞ্চে গাজা নিয়ে বিবৃতি দেননি কেন? রাশিয়া বা চিনের মতো দেশের সঙ্গে মোদী বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন কি না তা জানতে চান ইয়েচুরি। একটি খসড়া প্রস্তাব পড়ে শোনান গুলাম নবি আজাদ। তাতে ইজরায়েলকে এখনই অস্ত্র প্রয়োগ বন্ধ করতে বলা হয়। শরদ যাদবের দাবি, সাম্প্রদায়িক কারণেই কেন্দ্র ইজরায়েলের পাশে আছে।

দীর্ঘ জবাবি বক্তৃতায় একে একে বিরুদ্ধ যুক্তিগুলি খন্ডন করেন সুষমা। তিনি জানান, সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে মোদী সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নেয় না এটা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে। সৌদি আরবে অন্যায়ভাবে আটক ১৭ জন সংখ্যালঘুকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে। ইরাকে বন্দি থাকা কেরলের খ্রিষ্টান নার্সদেরও আপৎকালীন ভিত্তিতে ফিরিয়ে এনেছে সরকার।

সীতারাম ইয়েচুরির উদ্দেশে বিদেশমন্ত্রী বলেন, “২০০৮ সালে সংঘর্ষে ১,৪০০ প্যালেস্তাইনির মৃত্যু হয়। তখন বামেরা সরকারের সহযোগী দল ছিল। তখন কেন আপনারা মনমোহন সরকারকে সংসদীয় প্রস্তাব আনার পরামর্শ দেননি?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

israel unrest condemnation proposal centre
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE