Advertisement
২১ মে ২০২৪

উপত্যকায় অশান্তির আড়ালে খেলছে চিন

উপত্যকার অশান্তির আগুনে আড়াল থেকে ইন্ধন দিচ্ছে ড্রাগন। বিদেশ মন্ত্রকের গুপ্তচর বিভাগের কাছে সম্প্রতি তথ্য এসেছে যে নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য গোপনে কাশ্মীর তাস খেলছে বেজিং।

মারমুখী: শুক্রবার শ্রীনগরে সংঘর্ষ চলাকালীন কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ছে এক বিক্ষোভকারী। ছবি: পিটিআই।

মারমুখী: শুক্রবার শ্রীনগরে সংঘর্ষ চলাকালীন কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ছে এক বিক্ষোভকারী। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩৮
Share: Save:

উপত্যকার অশান্তির আগুনে আড়াল থেকে ইন্ধন দিচ্ছে ড্রাগন।

বিদেশ মন্ত্রকের গুপ্তচর বিভাগের কাছে সম্প্রতি তথ্য এসেছে যে নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য গোপনে কাশ্মীর তাস খেলছে বেজিং। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘শুধুমাত্র অর্থনৈতিক স্বার্থই নয়, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ভারতকে কোণঠাসা করার যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চিন, এটি তারই অঙ্গ।’’

কাশ্মীরে লাগাতার অশান্তির কারণ হিসেবে কেন্দ্রের রাজনৈতিক বিচক্ষণতার অভাব, সেখানকার মানুষের বিচ্ছিন্নতাবোধ, উপত্যকার আকাঙ্খা পূরণে ব্যর্থতাও জড়িয়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার মতে, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে পাকিস্তানকে সামনে রেখে পিছন থেকে খেলছে চিন। সূত্রের খবর, গিলগিট–বালটিস্তানকে পঞ্চম প্রদেশ হিসেবে পাক ঘোষণার পিছনে রয়েছে চিনের মদত। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একটা বড় অংশ চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের জন্য বেজিং-এর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বালুচিস্তানের গদর বন্দর পর্যন্ত হাইওয়ে বানাতে চাইছে চিন।

তবে কাশ্মীরে অশান্তিতে মদতের বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে গোপনীয়তা রক্ষা করেই করছে বেজিং। তার কারণ চিনের জিনঝিয়াং প্রদেশে ইসলামিক জঙ্গিবাদ বেজিং-এর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রকাশ্যে পাক জিহাদিদের সমর্থন করে স্বদেশে কোনও ভুল বার্তা দিতে চাইছে না চিন। কিন্তু পাক জঙ্গিদের সব রকম সাহায্য করার কাজ চলছে।

বেশ কিছু দিন ধরে কাশ্মীরে পাকিস্তানের মদতপ্রাপ্ত সন্ত্রাসের ধাঁচও কিছুটা বদলেছে বলে মনে করছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। এই বদলের পিছনে চিনা মস্তিষ্ক রয়েছে বলে খবর। সাধারণ মানুষকে নিশানা করে হামলার ছক বদলে, রাষ্ট্রশক্তির উপর সরাসরি আক্রমণ করা হচ্ছে। নিশানায় আসছে সেনা, কেন্দ্রের আধা সামরিক বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কাশ্মীরের এই লড়াইয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হয়ে উঠছে তথ্য। যা কিনা, এ কে ৪৭, গ্রেনেড কিংবা পাথরের তুলনায় কম শক্তিশালী নয়। ভারতীয় সেনা অথবা পুলিশ বাহিনীর অনেক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হচ্ছে। যেখানে কোথাও পাথর ছোড়া রুখতে জনতার উপর লাঠি চালাচ্ছে পুলিশ। কোথাও বা গাড়িতে বেঁধে রাখা হয়েছে আন্দোলনকারীকে।

আরও পড়ুন:আগেও জেল খেটেছিল প্যারিসের খুনি

পর্দার আড়ালে থেকে জঙ্গিদের মদত তো রয়েইছে, বেজিং আজ নয়াদিল্লিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, দলাই লামাকে চিনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে চাইলে তার মূল্য চোকাতে হবে ভারতকে। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’-এ আরও বলা হয়েছে, অরুণাচলের ছয়টি জায়গার নামকরণ করে কোনও ভুল করেনি চিন। কাশ্মীর নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই রাজ্যের বিজেপি মন্ত্রী প্রকাশচন্দ্র গঙ্গার মন্তব্য বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেছেন, ‘‘পাথর মারছে যারা, তাদের শাস্তি দিতে বুলেট ছোড়ো।’’ এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ পিডিপি। অমিত শাহ কাশ্মীরে যাওয়ার আগে এই বিষয় নিয়ে আজ দুই শরিকের আলোচনাও হয়েছে। বিজেপি নেতা রাম মাধব বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

China Kashmir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE