Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Sushil Singh

নিরাপত্তা রক্ষীর এই কলেজ ড্রপ আউট ছেলেই এখন মিলিয়নিয়র সিইও, কী ভাবে জানেন?

নিজের পরিশ্রম আর অদম্য জেদে ভর করে মিলিয়নিয়র সিইও হয়ে উঠলেন সেই কলেজ ড্রপ আউট ছেলেই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২১ ১২:৫৮
Share: Save:
০১ ১৬
পড়াশোনায় মন বসত না। ক্লাসে শিক্ষকরা যা পড়াতেন, মাথার উপর দিয়ে যেত। কোনও ক্রমে কলেজে ভর্তি হলেও পড়াশোনার ভার আর বইতে পারছিলেন না। মা-বাবার বিরুদ্ধে গিয়েই মাঝপথে কলেজ ছেড়ে দেন। নিজের পরিশ্রম আর অদম্য জেদে ভর করে মিলিয়নিয়র সিইও হয়ে উঠলেন সেই কলেজ ড্রপ আউট ছেলেই।

পড়াশোনায় মন বসত না। ক্লাসে শিক্ষকরা যা পড়াতেন, মাথার উপর দিয়ে যেত। কোনও ক্রমে কলেজে ভর্তি হলেও পড়াশোনার ভার আর বইতে পারছিলেন না। মা-বাবার বিরুদ্ধে গিয়েই মাঝপথে কলেজ ছেড়ে দেন। নিজের পরিশ্রম আর অদম্য জেদে ভর করে মিলিয়নিয়র সিইও হয়ে উঠলেন সেই কলেজ ড্রপ আউট ছেলেই।

০২ ১৬
তিনি সুশীল সিংহ। তাঁর বয়স এখন ৪০ বছর।  নিরাপত্তা রক্ষীর এই কলেজ ড্রপ আউট ছেলে কী ভাবে মিলিয়নিয়র হলেন?

তিনি সুশীল সিংহ। তাঁর বয়স এখন ৪০ বছর। নিরাপত্তা রক্ষীর এই কলেজ ড্রপ আউট ছেলে কী ভাবে মিলিয়নিয়র হলেন?

০৩ ১৬
উত্তরপ্রদেশের জুনপুরের একটি গ্রামে জন্ম তাঁর। মাত্র ৩ বছর বয়সে জীবিকার কারণে বাবা তাঁদের নিয়ে চলে এসেছিলেন মুম্বইয়ে।

উত্তরপ্রদেশের জুনপুরের একটি গ্রামে জন্ম তাঁর। মাত্র ৩ বছর বয়সে জীবিকার কারণে বাবা তাঁদের নিয়ে চলে এসেছিলেন মুম্বইয়ে।

০৪ ১৬
মুম্বইয়ের এক বস্তিতে তাঁরা থাকতেন। বাবা একটি ব্যাঙ্কে নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করতেন। সুশীলরা ছিলেন তিন ভাইবোন।

মুম্বইয়ের এক বস্তিতে তাঁরা থাকতেন। বাবা একটি ব্যাঙ্কে নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করতেন। সুশীলরা ছিলেন তিন ভাইবোন।

০৫ ১৬
তাঁদের সংসারে তেমন উল্লেখযোগ্য অভাব ছিল না। বাবা যা রোজগার করতেন, তা দিয়ে দু’বেলা খাওয়া-পরা জুটে যেত তাঁদের। আর সবচেয়ে ভরসার বিষয় হল, তাঁদের মাথা গোঁজার ছাদ ছিল নিজেদের।

তাঁদের সংসারে তেমন উল্লেখযোগ্য অভাব ছিল না। বাবা যা রোজগার করতেন, তা দিয়ে দু’বেলা খাওয়া-পরা জুটে যেত তাঁদের। আর সবচেয়ে ভরসার বিষয় হল, তাঁদের মাথা গোঁজার ছাদ ছিল নিজেদের।

০৬ ১৬
সেখানকার মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের একটি হিন্দি মিডিয়াম স্কুলে সুশীলকে ভর্তিও করে দিয়েছিলেন বাবা। দশম শ্রেণি পর্যন্ত তাঁর পড়াশোনা ভালই চলছিল।

সেখানকার মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের একটি হিন্দি মিডিয়াম স্কুলে সুশীলকে ভর্তিও করে দিয়েছিলেন বাবা। দশম শ্রেণি পর্যন্ত তাঁর পড়াশোনা ভালই চলছিল।

০৭ ১৬
কিন্তু একাদশ শ্রেণিতে ওঠার পর থেকেই ক্রমে পড়াশোনার প্রতি অমনযোগী হয়ে পড়তে শুরু করেন সুশীল। পরের বছর দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় বসেননি।

কিন্তু একাদশ শ্রেণিতে ওঠার পর থেকেই ক্রমে পড়াশোনার প্রতি অমনযোগী হয়ে পড়তে শুরু করেন সুশীল। পরের বছর দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় বসেননি।

০৮ ১৬
অনিচ্ছা সত্ত্বেও মা-বাবার কথায় অবশেষে দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ হন। তার পর কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে ভর্তি হলেন এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিন বছরের স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় বর্ষে এসে পড়াশোনায় ইতি টানার কথা সুশীল স্থির করে নিয়েছিলেন।

অনিচ্ছা সত্ত্বেও মা-বাবার কথায় অবশেষে দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ হন। তার পর কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে ভর্তি হলেন এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিন বছরের স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় বর্ষে এসে পড়াশোনায় ইতি টানার কথা সুশীল স্থির করে নিয়েছিলেন।

০৯ ১৬
২০০৩ সালে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় একেবারেই বসতে রাজি ছিলেন না তিনি। এ বারেও মা-বাবার কথাতেই পরীক্ষাটি দেন। কিন্তু অঙ্কে ফেল করে যান।

২০০৩ সালে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় একেবারেই বসতে রাজি ছিলেন না তিনি। এ বারেও মা-বাবার কথাতেই পরীক্ষাটি দেন। কিন্তু অঙ্কে ফেল করে যান।

১০ ১৬
আসলে এমন কিছুতে তিনি সময় নষ্ট করতে চাইছিলেন না, যা ভবিষ্যতে তাঁর কোনও কাজেই লাগবে না। কলেজ ছেড়ে দেন। মা-বাবা তাঁর সিদ্ধান্তে খুশি ছিলেন না। তবে ভাই আর বোনের পূর্ণ সমর্থন ছিল। বাড়িতে খুব অশান্তি শুরু হয়েছিল।

আসলে এমন কিছুতে তিনি সময় নষ্ট করতে চাইছিলেন না, যা ভবিষ্যতে তাঁর কোনও কাজেই লাগবে না। কলেজ ছেড়ে দেন। মা-বাবা তাঁর সিদ্ধান্তে খুশি ছিলেন না। তবে ভাই আর বোনের পূর্ণ সমর্থন ছিল। বাড়িতে খুব অশান্তি শুরু হয়েছিল।

১১ ১৬
বাকি পড়ুয়াদের মতো পড়াশোনা শেষ করে কেরিয়ার বাছাই করেননি সুশীল। বরং তিনি নিজের কেরিয়ার আগে থেকেই স্থির করে ফেলেছিলেন। কলেজ ছাড়াটা তাঁর ভুল সিদ্ধান্ত ছিল না, সেটা প্রমাণ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন।

বাকি পড়ুয়াদের মতো পড়াশোনা শেষ করে কেরিয়ার বাছাই করেননি সুশীল। বরং তিনি নিজের কেরিয়ার আগে থেকেই স্থির করে ফেলেছিলেন। কলেজ ছাড়াটা তাঁর ভুল সিদ্ধান্ত ছিল না, সেটা প্রমাণ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন।

১২ ১৬
থার্ড পার্টির মাধ্যমে একটি টেলিকম সংস্থায় কাজ পান তিনি। ওই সংস্থার কাস্টমার সার্ভিস প্রতিনিধি ছিলেন। রোজ ১২-১৩ ঘণ্টা কাজ করতেন।

থার্ড পার্টির মাধ্যমে একটি টেলিকম সংস্থায় কাজ পান তিনি। ওই সংস্থার কাস্টমার সার্ভিস প্রতিনিধি ছিলেন। রোজ ১২-১৩ ঘণ্টা কাজ করতেন।

১৩ ১৬
এর পর একটি সংস্থার সেলসম্যান হিসাবে যোগদান করেছিলেন। প্রতিটি কাজই মনপ্রাণ দিয়ে করতেন। যত ক্ষণ না পর্যন্ত বিক্রি করতে পারতেন, নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠতেন না। সারাদিন না খেয়েও কাটিয়েছেন।

এর পর একটি সংস্থার সেলসম্যান হিসাবে যোগদান করেছিলেন। প্রতিটি কাজই মনপ্রাণ দিয়ে করতেন। যত ক্ষণ না পর্যন্ত বিক্রি করতে পারতেন, নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠতেন না। সারাদিন না খেয়েও কাটিয়েছেন।

১৪ ১৬
তাঁর জীবন বদলে যায় ২০১৩ সালে। স্ত্রী সরিতা রাওয়াত সিংহের সঙ্গে ওই বছরই তাঁর পরিচয়। তিনি ছিলেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। এর ২ বছরের মধ্যে তাঁরা দু'জনে একটি আমেরিকান সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে নয়ডায় একটি বিপিও খুলে ফেলেন।

তাঁর জীবন বদলে যায় ২০১৩ সালে। স্ত্রী সরিতা রাওয়াত সিংহের সঙ্গে ওই বছরই তাঁর পরিচয়। তিনি ছিলেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। এর ২ বছরের মধ্যে তাঁরা দু'জনে একটি আমেরিকান সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে নয়ডায় একটি বিপিও খুলে ফেলেন।

১৫ ১৬
প্রথমে একটি ছোট অফিস ভাড়া নিয়েছিলেন। মাত্র ৩ জন কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। যে বিল্ডিংয়ে একটি ছোট্ট ঘর ভাড়া নিয়ে অফিস শুরু করেছিলেন তাঁরা, মাত্র আড়াই বছরের মধ্যে পুরো বিল্ডিংটাই কিনে ফেলেন।

প্রথমে একটি ছোট অফিস ভাড়া নিয়েছিলেন। মাত্র ৩ জন কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। যে বিল্ডিংয়ে একটি ছোট্ট ঘর ভাড়া নিয়ে অফিস শুরু করেছিলেন তাঁরা, মাত্র আড়াই বছরের মধ্যে পুরো বিল্ডিংটাই কিনে ফেলেন।

১৬ ১৬
ক্রমে ব্যবসাও বাড়তে থাকে তাঁদের। আইটি কনসাল্টিং ফার্ম, ফ্যাশন ফার্ম চালু করেন তাঁরা। ফ্যাশন সংস্থা স্ত্রীই মূলত দেখেন। কলেজ ড্রপ আউট সুশীল এখন মিলিয়নিয়র।

ক্রমে ব্যবসাও বাড়তে থাকে তাঁদের। আইটি কনসাল্টিং ফার্ম, ফ্যাশন ফার্ম চালু করেন তাঁরা। ফ্যাশন সংস্থা স্ত্রীই মূলত দেখেন। কলেজ ড্রপ আউট সুশীল এখন মিলিয়নিয়র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE