Advertisement
E-Paper

শাস্তি তুলে মিসবাহুলকে ফেরাল কংগ্রেস

২০১১ সালে দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল মিসবাহুল ইসলাম লস্করকে। এখন তাঁর কাঁধে ভর করেই সঙ্কট কাটানোর রাস্তা খুঁজছে কংগ্রেস! শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দলে ফিরিয়ে নেওয়া হল তাঁকে। গত সপ্তাহে মিসবাহুলের উপর থেকে বহিষ্কারের খড়গ সরিয়ে নেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অঞ্জন দত্ত। আগামী কাল থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনি দলের কাজে ঝাঁপাবেন। সে দিন শিলচর গাঁধীমেলার মাঠে সভাও করবেন।

উত্তম সাহা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৫ ০৩:০১

২০১১ সালে দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল মিসবাহুল ইসলাম লস্করকে। এখন তাঁর কাঁধে ভর করেই সঙ্কট কাটানোর রাস্তা খুঁজছে কংগ্রেস!

শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দলে ফিরিয়ে নেওয়া হল তাঁকে। গত সপ্তাহে মিসবাহুলের উপর থেকে বহিষ্কারের খড়গ সরিয়ে নেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অঞ্জন দত্ত। আগামী কাল থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনি দলের কাজে ঝাঁপাবেন। সে দিন শিলচর গাঁধীমেলার মাঠে সভাও করবেন।

আইনজীবী মিসবাহুল ইসলাম লস্কর ১৯৯৬ সালে প্রথম বিধায়ক হন। সে বার বিজেপি প্রার্থী নৃপেন্দ্র দেবকে ১২ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করেন। ২০০১ সালে ফের জেতেন। মন্ত্রীও হন। ত্রৈলোক্যভূষণ নাথকে প্রার্থী করে বিজেপি হারের ব্যবধান কমালেও জিততে পারেনি। কিন্তু পরের নির্বাচনে গেরুয়া বাহিনী ত্রৈলোক্যবাবুর সদ্য ডাক্তারি পাশ করা মেয়েকে প্রার্থী করে সবাইকে চমক দেয়। সে বার মিসবাহুলকে হারিয়ে জিতে যান বিজেপির রুমি নাথ। হারের বদলা নিতে ৫ বছর মাঠ চষে বেড়ান প্রাক্তন মন্ত্রী। কিন্তু ২০১১ সালের ভোটে দল তাঁকে টিকিট দেয়নি। রুমিদেবী বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায়, তাঁকেই বড়খলায় প্রার্থী করা হয়। ক্ষুব্ধ মিসবাহুল নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ৩৪ হাজারের বেশি ভোট টানলেও জিততে পারেননি। দল তাঁকে ছ’বছরের জন্য বহিষ্কার করে।

বিধায়ক হয়েই রুমি একের পর বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিবাহ বিচ্ছেদ, দ্বিতীয় বিয়ের জন্য পালিয়ে বেড়ানো, দেড় মাস আত্মগোপন-পর্ব শেষে নতুন বিয়ের ঘোষণা, দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে দফায় দফায় মামলার পর এখন তিনি গাড়ি চুরি মামলায় বিচার বিভাগীয় হেফাজতে। ওই বিধায়ককে নিয়ে কংগ্রেস কোণঠাসা। কয়েক দিন ধরে রুমির অনুপস্থিতিতে বড়খলায় দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার মতো নেতা খুঁজছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তখনই সিদ্ধান্ত নেন, মিসবাহুলকে দলের বাইরে রাখা ঠিক হবে না। ১৪ মে তিনি বহিষ্কারের নির্দেশ প্রত্যাহার করেন। এ নিয়ে মিসবাহুল জানান, গত বছর লোকসভা নির্বাচনের আগেই দলে ফেরা পাকা ছিল। কিন্তু দলের ভেতরের একটি চক্রই বাধা দেয়। এ বার তাঁদের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েই তিনি সমাবেশ করে দলের কাজ শুরু করতে চান। তাঁর কথায়, ‘‘শুধু আমি নই, সে দিন কংগ্রেসে যোগ দেবেন আমার অনুরাগীরাও। সেই সংখ্যা ১০ হাজারের কম নয়।’’ তিনি জানান, ওই সমর্থকদের বেশিরভাগই আগে কংগ্রেস করতেন। কিন্তু তিনি টিকিট না পাওয়ায় তাঁরাও দল ছাড়েন। অনেকেই রাজনীতির ময়দান থেকে সরে যান। কয়েক জন বিজেপি বা এআইইউডিএফে যোগ দিয়েছিলেন। দল তাঁকে ফিরিয়ে নেওয়ায় তাঁরা সবাই ফের কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন।

জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পার্থরঞ্জন চক্রবর্তী অবশ্য এই সমাবেশকে দলে ঢোকার মুখে শক্তিপ্রদর্শন হিসেবে দেখছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘মিসবাহুল দীর্ঘ দিন পর জেলা কংগ্রেস অফিসে আসবেন। বড়খলার প্রচুর মানুষ মুহুর্তটির সাক্ষী হতে চান। তাই গাঁধীমেলার মাঠে তাঁদের জড়ো হতে বলা হয়েছে। সেখান থেকে মিছিল করে মিসবাহুল কংগ্রেস অফিসে যাবেন।’’

বিধায়ক রুমি নাথের জামিনের আবেদন বারবার খারিজ হয়ে যাওয়ার পর এ মাসেই জেলা কংগ্রেস বড়খলার উন্নয়নমূলক কাজকর্ম তদারকির জন্য একটি কমিটি গঠন করেছিল। এ বার কি তবে সেই কমিটি খারিজ হয়ে যাবে? পার্থবাবু বলেন, ‘‘জেলা কংগ্রেস সভাপতি পদে অরুণ দত্ত মজুমদারের জায়গায় কর্ণেন্দু ভট্টাচার্য নিযুক্ত হলেও পুরনো সব কমিটি থাকবে বলেই কর্ণেন্দুবাবু জানিয়ে দিয়েছেন।’’ মিসবাহুল অবশ্য জানানন, কয়েক দিন রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও বড়খলার মানুষের থেকে কখনও দূরে সরে যাননি। বড়খলার সমস্যা নিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলেছেন। দল দায়িত্ব দিলে তিনি বড়খলার মানুষের জন্য যে কোনও দায়িত্ব নিতে তৈরি।

কিন্তু দল যদি ফের রুমি নাথকেই টিকিট দেয়? এখনই সে কথা ভাবছেন না বলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন মিসবাহুল ইসলাম।

congress Silchar misbahul islam laskar uttam saha lawyer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy