—প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে কি কংগ্রেসের আসন সমঝোতা হবে? লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কতগুলো আসন তাদের ছেড়ে দিলে কংগ্রেস সমঝোতায় রাজি হবে? প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে কথা বলে, তাঁদের মতামত জেনেই এ বিষয়ে কংগ্রেস হাই কমান্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, মল্লিকার্জুন খড়্গে বা রাহুল গান্ধী কেউই নিজেদের সিদ্ধান্ত রাজ্যের নেতাদের উপরে চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষে নন। প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি বদল হলে নতুন সভাপতি কাকে করা হবে, সে বিষয়েও রাজ্যের নেতাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
মুম্বইয়ে ইন্ডিয়া-র বৈঠকের ঠিক আগে দিল্লির দশ জনপথে কাকভোরে রাহুল গান্ধী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। তার পরে মুম্বইয়ে ইন্ডিয়া-র বৈঠকে রাজ্য স্তরে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা শুরু করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বাভাবিক নিয়মেই পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল, কংগ্রেস, বাম, বিজেপি— সব শিবিরেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ফের তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে আসন সমঝোতা হতে চলেছে?
এআইসিসি-র এক নেতা বলেন, “রাহুল-অভিষেক বৈঠকে দু’দলের মধ্যে বোঝাপড়া নিয়ে যে কথা হয়েছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তা বলে এমন ধরে নেওয়ার কোনও কারণ নেই যে, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস, তৃণমূলের আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। দিল্লি, পঞ্জাব, ছত্তীসগঢ়, মহারাষ্ট্রের মতো পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত হবে। তৃণমূলের সঙ্গে জোট হলে বামেদের সঙ্গে সম্পর্ক কী হবে, তা-ও ঠিক করতে হবে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, রাহুল গান্ধী, সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন।”
পশ্চিমবঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে অধীর চৌধুরীকে সরিয়ে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে অনেক দিন ধরেই জল্পনা চলছে। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, অধীরের বদলে কাকে সভাপতি করা উচিত, তা নিয়ে দলের পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত নেতা এ চেল্লাকুমার আগেই রাজ্যের নেতাদের মতামত জেনে নিয়েছেন। তবে তার পরে অনেকখানি সময় কেটে গিয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে আর এক দফা কথা বলা হবে।
কংগ্রেস সূত্রের ব্যাখ্যা, পশ্চিমবঙ্গে যেমন কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে বিবাদ রয়েছে, তেমনই দিল্লি, পঞ্জাবে কংগ্রেসের সঙ্গে আম আদমি পার্টির বিবাদ রয়েছে। দিল্লি, পঞ্জাবের ক্ষেত্রেও রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেই এগোচ্ছে হাইকমান্ড। দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সম্প্রতি অনিল চৌধরিকে সরিয়ে অরবিন্দর সিংহ লাভলিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অনিল কট্টর আপ-বিরোধী বলে পরিচিত ছিলেন। তুলনায় লাভলি আপ-এর প্রতি নরম মনোভাবাপন্ন। তাঁকে এনে আপ-এর সঙ্গে আসন সমঝোতার রাস্তা খোলা হল বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রশ্ন হল, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও কি মমতার কড়া সমালোচক বলে অধীরকে সরিয়ে তুলনায় তৃণমূলের প্রতি নরম মনোভাবাপন্ন কাউকে প্রদেশ সভাপতি করা হবে?
কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের নেতারা কী ভাবছেন, সেটাও বোঝা জরুরি। পঞ্জাবের ক্ষেত্রে প্রদেশ কংগ্রেসের সংগঠনের নেতা, বিধায়কেরা আম আদমি পার্টির সঙ্গে বোঝাপড়ার বিরোধী। কিন্তু পঞ্জাবের কংগ্রেস সাংসদেরা আপ-এর সঙ্গে আসন সমঝোতার পক্ষে। তাঁদের মতে, পঞ্জাবের ১৩টি ও চণ্ডীগড়ের একটি মিলিয়ে মোট ১৪টি আসন কংগ্রেস এবং আপ-এর উচিত নিজেদের মধ্যে সাতটি করে ভাগাভাগি করে নেওয়া।
আগামী ৭ সেপ্টেম্বর রাহুল গান্ধী ইউরোপ সফরে যাচ্ছেন। ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক রয়েছে। এ ছাড়াও প্যারিস, আমস্টারডাম, অসলো-য় প্রবাসী ভারতীয়, ভারতীয় পড়ুয়াদের সম্মেলনে যোগ দেবেন তিনি। রাহুল দেশে ফেরার পরে তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়ে কথাহতে পারে।
কংগ্রেসের নতুন কার্যকরী কমিটির প্রথম বৈঠকও রাহুল দেশে ফেরার পরেই হবে। দ্রুত এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক, ভারপ্রাপ্তদের দায়িত্ব বণ্টন, নতুন সচিব নিয়োগের কাজও সেরে ফেলা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy