Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Bharat Jodo Yatra

কুরুক্ষেত্রে মহাভারত, গীতা স্মরণ রাহুলের

কংগ্রেস নেতারা মানছেন, দক্ষিণের মতো উত্তরেও রাহুলের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় অপ্রত্যাশিত সাড়া মিলেছে। কিন্তু ভোটের রাজনীতিতে এর ফল কী হবে, তা নিয়ে তাঁরা কেউই নিশ্চিত নন।

কুরুক্ষেত্রের ব্রহ্ম সরোবরে রাহুল গান্ধীর আরতি। রবিবার। পিটিআই

কুরুক্ষেত্রের ব্রহ্ম সরোবরে রাহুল গান্ধীর আরতি। রবিবার। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:২০
Share: Save:

‘কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মাফলেষু কদাচন’।

কন্যাকুমারী থেকে শুরু ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ পৌঁছে গেল কুরুক্ষেত্রে। সেই কুরুক্ষেত্রে বসে গীতার শ্লোক স্মরণ করে রাহুল গান্ধী বললেন, ‘‘কাজ করে যেতে হয়। ফলের দিকে তাকাতে নেই।’’ তিনিও ‘তপস্বী’-র মতো নিজের কাজ করে যাচ্ছেন। কর্মফলের দিকে তাকাচ্ছেন না।

কংগ্রেস নেতারা মানছেন, দক্ষিণের মতো উত্তরেও রাহুলের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় অপ্রত্যাশিত সাড়া মিলেছে। কিন্তু ভোটের রাজনীতিতে এর ফল কী হবে, তা নিয়ে তাঁরা কেউই নিশ্চিত নন। আজ হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে রাহুল দাবি করেছেন, কংগ্রেস হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশের মতো হিন্দি বলয়ের রাজ্যে সরকার গড়বে। কিন্তু তা নিয়ে মোটেই আগ্রহী নন। কংগ্রেস যে রাজ্যে সরকার গড়বে, সেখানে পাঁচ বছরে কংগ্রেস কী কাজ করছে, তা নিয়ে তিনি বেশি আগ্রহী।

কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পদযাত্রা থেকে তিনি কী আশা করছেন, পদযাত্রা শেষ হওয়ার পরে তিনি কী করবেন— তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ‘মহাভারত’ ও ‘গীতা’ স্মরণ করেছেন সনিয়া-পুত্র। বলেছেন, “অর্জুন যখন মাছের চোখকে লক্ষ্য হিসেবে স্থির করেছিলেন, তখন কি উনি বলেছিলেন লক্ষ্যভেদের পরে কী করবেন? ভাগবত গীতাতেও এর উত্তর রয়েছে। তুমি তোমার কাজ করে যাও। যা ফল হওয়ার, তা হবে।”

হিন্দি বলয়ে রাহুলের যাত্রায় সাড়া দেখে বিজেপি নেতারাও নড়েচড়ে বসেছেন। যদিও এখনও তাঁরা মনে করছেন, রাহুল-প্রিয়ঙ্কার কর্মসূচিতে বরাবরই ভিড় হয়। কিন্তু তাতে কংগ্রেসের নির্বাচনী বা রাজনৈতিক লাভ হয় না। বিজেপি-আরএসএসের ‘বিভাজন ও বিদ্বেষের রাজনীতি’-র বিরুদ্ধে লড়তে ভারত জোড়ো-র ডাক দিয়ে পদযাত্রাটা সঠিক রাজনৈতিক কৌশল কি না, তা নিয়ে কংগ্রেসের একাংশ-সহ বিরোধী শিবিরেই দ্বিমত রয়েছে। আজ রাহুলের যুক্তি, “বুঝে গিয়েছি যে এই লড়াই শুধু রাজনৈতিক লড়াই নয়। বাহ্যিক ভাবে দেখলে এটা রাজনৈতিক লড়াই। কিন্তু দেশে একটা বদল হয়েছে। আরএসএস যবে থেকে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলি দখল করতে শুরু করেছে, তবে থেকে এটা আর রাজনৈতিক লড়াই নেই। এটা এখন অন্য লড়াই। তাকে আপনি মতাদর্শের লড়াই বা ধর্মযুদ্ধ বলতে পারেন।”

বিজেপি এবং বিরোধী শিবিরের মতে, রাহুল আসলে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত হেঁটে নিজের ‘ভাবমূর্তি’ বদলাতে চাইছেন। বিজেপির দেগে দেওয়া ‘পাপ্পু’ ভাবমূর্তি থেকে বার হতে চাইছেন। আজ তিনি বলেছেন, “রাহুল গান্ধী আপনাদের মাথায় রয়েছে। আমি তাঁকে মেরে ফেলেছি। সে তো নেই-ই। আমার মাথায় নেই। যে ব্যক্তিকে দেখছেন, সে রাহুল গান্ধী নয়। আপনারা তাঁকে রাহুল হিসেবে দেখছেন। রাহুল বিজেপির মাথায় রয়েছে, আমার মাথায় নেই। বিষয়টা বুঝতে না পারলে হিন্দু ধর্ম পড়ুন। ভাবমূর্তি নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। আমার ভাবমূর্তি আপনারা যে ভাবে দেখবেন, দেখুন। তাতে কিছু এসে যায় না। আমি নিজের কাজ করে যাব।”

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তথা আরএসএস-কে নিশানা করে রাহুল বলেছেন, মোদী চান, তাঁকে সবাই পুজো করুক। আরএসএস-ও জোর করে পুজো চায়। তাই সমস্ত প্রতিষ্ঠান, সংবাদমাধ্যম দখল করে, ভয় তৈরি করে। মোদী তাই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন না। কিন্তু এই দেশ পূজারিদের দেশ নয়, এটা তপস্বীদের দেশ।’’

রাহুলের বক্তব্য নিয়ে বিজেপি-র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয়র কটাক্ষ, ‘‘রাহুল গান্ধীর এখন পূজারিদের নিয়েও সমস্যা! পরিপ্রেক্ষিত না জেনে মহাভারত উদ্ধৃত করলে রাহুল গান্ধীর দশা হয়। অর্জুন মাছের চোখে লক্ষ্যভেদ করেছিলেন স্বয়ংবর সভায়। যাতে তিনি নিজেকে দ্রৌপদীকে বিয়ের যোগ্য হিসেবে প্রমাণ করতে পারেন। তিনি উদ্দেশ্যটা জানতেন। কংগ্রেসের যুবরাজের মতো দিশাহীন ছিলেন না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bharat Jodo Yatra Rahul Gandhi Kurukshetra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE