Advertisement
E-Paper

বিলে মিটছে না তালাক-বিতর্ক 

কাল আইনমন্ত্রীর ঘোষণা শোনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্থানীয় পঞ্চায়েত বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুল ও কাসেমকে তারা মিলিয়ে দেবে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৫
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

উত্তরপ্রদেশে রামপুরের গুল আফসানকে একটু বেশি ঘুমনোর জন্য এক দফাতেই তিন বার তালাক শুনিয়েছিলেন তাঁর ট্রাক-ড্রাইভার স্বামী কাসেম। লোকসভায় তাৎক্ষণিক তালাক নিয়ে বিলের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে গত কাল এই প্রসঙ্গ টেনেছিলেন আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। কিন্তু গুল ও কাসেমের জীবনে এর পরে যা ঘটেছে, তাতেই স্পষ্ট যে, এই বিল মুসলিম মহিলাদের সব সমস্যার সমাধান নয়। যে কথাটা বলেছেন বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা।

কাল আইনমন্ত্রীর ঘোষণা শোনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্থানীয় পঞ্চায়েত বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুল ও কাসেমকে তারা মিলিয়ে দেবে। তবে তার জন্য ‘ইদ্দত’ ও ‘হালালা’— এই দুই ধাপ পেরোতে হবে তাঁদের। ‘ইদ্দত’ হল, তালাক বা স্বামীর মৃত্যুর পরে কোনও মুসলিম মহিলাকে নির্ধারিত যে বিচ্ছেদ পর্ব কাটাতে হয়। আর ‘হালালা’ মানে একই স্বামীকে দ্বিতীয় বার বিয়ে করার আগে অন্য কাউকে বিয়ে করা ও তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের পরে তাঁর কাছ থেকে তালাক পাওয়া। গ্রামপ্রধান সরফরাজ আহমেদ জানাচ্ছেন, মৌলবিও এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে কাসেমের দেওয়া তিন তালাক অবৈধ। তাই প্রশ্ন উঠছে, পঞ্চায়েত কেন সেটিকেই বিবাহবিচ্ছেদ বলে মেনে নিচ্ছে? সরফরাজের বক্তব্য, দুই পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠরা মিলেই এটা ঠিক করেছেন।

কী বলছেন গুল? আগে তিনি জানিয়েছিলেন, ওই তিন তালাক তিনি মানবেন না। স্বামী আইনানুযায়ী বিবাহবিচ্ছেদ চাইলে তিনি আপত্তি করবেন না। এখন পঞ্চায়েত তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ার পরে গুলকে আর সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে দিচ্ছেন না তাঁর আত্মীয়েরা। পরিবারের এক মহিলা জানান, গুল এখন ইদ্দতে। আর কাসেম, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে নারাজ। হস্তক্ষেপ করছে না যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসন। রামপুরের পুলিশ সুপার বিপিন তাডার বক্তব্য, ‘‘আমরা এখনও অভিযোগ পাইনি এ ব্যাপারে। এ সব ব্যাপারে আমরা নিজে থেকে কোনও পদক্ষেপ করতে পারি না।’’

বিভিন্ন সংগঠন অনেক দিন ধরেই বলে যাচ্ছে, তাৎক্ষণিক তিন তালাকই একমাত্র সমস্যা নয়। ইদ্দত বা হালালার মতো কিছু রীতির কারণেও ভুগতে হয় অনেককে। আইন করলে এ দিকেও নজর দেওয়া উচিত। তাৎক্ষণিক তিন তালাকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে যাঁরা লড়াই চালিয়েছেন, তাঁদেরও একাংশ বলছেন, এই বিল তাঁরা চাননি। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড আজও দাবি করেছে, হয় এই বিল পাল্টাও, নয়তো প্রত্যাহার করো। দারুল উলুমের উপাধ্যক্ষ মৌলানা নোমানি বলেছেন ‘‘এই বিল মুসলিম মহিলাদের বিরোধী।’’ শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের আবার দাবি, তিন বছর যথেষ্ট নয়, অবৈধ ভাবে তালাক দিলে জেলের মেয়াদ ১০ বছর করতে হবে।

Triple talaq controversy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy