ছবি: এপি
ইদের সময়ে কাশ্মীরে জঙ্গি হানার আশঙ্কা রয়েছে বলে মেহবুবা মুফতির সরকারকে সদ্য সতর্ক করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল রাতারাতি। শুক্রবার রাতে শ্রীনগরের পন্থা চকে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের বাসে হামলা চালাল জঙ্গিরা। মারা গেলেন এক হেড কনস্টেবল। আহত তিন পুলিশ।
শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়ে ধরে বেমিনা থেকে জেওয়ান-এ, সশস্ত্র পুলিশের সদর দফতরে যাচ্ছিল বাসটি। রাত ৮টা নাগাদ পন্থা চকে পৌঁছলে বাস লক্ষ করে গুলি চালায় জঙ্গিরা। স্থানীয়রাই জখমদের উদ্ধার করেন। এক পুলিশকর্তা জানান, বাদামি বাগ ক্যান্টনমেন্টে সেনার ৯২ বেস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই মারা যান হেড কনস্টেবল কিষণ লাল। আজই বিকেল পৌনে ছ’টা নাগাদ নিয়ন্ত্রণরেখায় পুঞ্চের কৃষ্ণ ঘাটি সেক্টরে পাক সেনার স্নাইপারের গুলিতে মারা যান কমলজিৎ সিংহ (৫০) নামে এক বিএসএফ জওয়ান। তাঁর বাড়ি পঞ্জাবে বঠিণ্ডায়।
শ্রীনগরের ঘটনার পরেই শহরে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। হামলা কারা চালিয়েছে, এখনও স্পষ্ট নয়। তবে জইশ-ই-মহম্মদের হাত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, কেন্দ্রের সতর্কবার্তা মূলত ছিল মৌলানা মাসুদ আজহারের এই জঙ্গি গোষ্ঠীকে নিয়েই। কাশ্মীরের পাশাপাশি পঞ্জাব সরকারকেও আলাদা করে সতর্ক করেছিল কেন্দ্র। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, পঞ্জাবেও ঢুকে পড়েছে জইশ জঙ্গিদের একটি দল। যাদের লক্ষ্য, পঠানকোটের ধাঁচে সেনা ছাউনিতে হামলা চালানো।
আরও পড়ুন: ‘দাজু, পপু আউন্দাইছ’ শুনে, জুতো ফেলেই ছুট
লাগাতার ধরপাকড়ে উপত্যকায় জঙ্গি গতিবিধি ইদানীং আগের চেয়ে কিছুটা কমেছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে গত ছ’মাসে প্রায় ১৪০ জন জঙ্গি মারা গিয়েছে গোটা কাশ্মীরে। তাই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মনোবল ফেরাতে ইদের সময়ে মূলত জইশ জঙ্গিরাই হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছে বলে নিদিষ্ট তথ্য পেয়েছিলেন গোয়েন্দারা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে কাশ্মীরে জইশের জনা চল্লিশ জঙ্গি সক্রিয় রয়েছে। মাঝে এই জঙ্গি গোষ্ঠী একেবারে নিশ্চুপ হয়ে পড়লেও সম্প্রতি আড়ি পেতে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, শীতঘুম ভেঙে ফের উপত্যকায় আঘাত হানার প্রস্তুতি শুরু করেছে জইশ। বেড়েছে সীমান্তপারের যোগাযোগও। সংখ্যায় এরা লস্কর-ই-তইবা বা হিজবুল মুজাহিদিনের থেকে কম হলেও স্বরাষ্ট্র কর্তাদের মতে, পাক সেনার হাতে প্রশিক্ষিত জইশ জঙ্গিরা অনেক বেশি সুসংহত এবং নিখুঁত পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রাণঘাতী হামলা চালাতে সক্ষম। গোয়েন্দারা বলছেন, জইশের জনা কুড়ি জঙ্গি এই মুহূর্তে উত্তর কাশ্মীরে সক্রিয়। বাকিরা তিনটি দলে ভাগ হয়ে দক্ষিণ কাশ্মীরে নাশকতার ছক কষছে।
গোয়েন্দারা আরও জানিয়েছেন, ক’দিন আগে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সেনা ছাউনিতে জইশের যে দলটি হামলা চালিয়েছিল, তাদেরই অন্তত ৮-১০ জন সঙ্গী কাশ্মীর থেকে পঞ্জাবে ঢুকে পড়েছে। পঠানকোটের আদলে হামলা রুখতে পঞ্জাবের সমস্ত সেনা ছাউনি ও সরকারি ভবনে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy