Advertisement
০১ এপ্রিল ২০২৩
Coronavirus

শাহিন বাগে মঞ্চ ভেঙে দিল পুলিশ

মারণ ভাইরাসের আক্রমণের মুখে এই মুহূর্তে জমায়েত হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া যে কঠিন হবে, তা কিছু দিন ধরেই টের পাচ্ছিল শাহিন বাগ।

করোনা-সতর্কতায় সাফ শাহিন বাগের এনআরসি, সিএএ-বিরোধী মঞ্চ। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে।  পিটিআই

করোনা-সতর্কতায় সাফ শাহিন বাগের এনআরসি, সিএএ-বিরোধী মঞ্চ। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০ ০৩:৪৫
Share: Save:

১০০ দিন ছুঁয়েই আপাতত দাঁড়ি পড়ল শাহিন বাগের আন্দোলনে।

Advertisement

মঙ্গলবার, প্রতিবাদের ১০১তম দিনের সকালে প্রতিবাদস্থল খালি করে দিল পুলিশ। ভাঙা পড়ল প্যান্ডেল। খুলে গেল টানা তিন মাসেরও বেশি বন্ধ থাকা জাতীয় সড়ক। ছয় মহিলা-সহ মোট ন’জন আন্দোলনকারী আটক হলেও, স্থানীয়দের তরফ থেকে এ দিন তেমন প্রতিরোধ চোখে পড়েনি। যাঁদের আটক করা হয়েছিল, বিকেলের মধ্যে তাঁদের কয়েক জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হজ রানি-সহ দিল্লির আর যে সব জায়গায় আন্দোলন চলছিল, খালি করে দেওয়া হয়েছে সেই সমস্ত প্রতিবাদস্থলও।

মারণ ভাইরাসের আক্রমণের মুখে এই মুহূর্তে জমায়েত হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া যে কঠিন হবে, তা কিছু দিন ধরেই টের পাচ্ছিল শাহিন বাগ। তাই অন্য সময়ে পুলিশ এসে জোর করে শাহিন বাগ খালি করলে, যে পরিমাণ প্রতিরোধ ও সমালোচনার মুখে পড়তে হত, অন্তত এ দিন তার ছিটেফোঁটাও চোখে পড়েনি।

তা সত্ত্বেও মাথাচাড়া দিয়েছে বিতর্ক। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার সামনে সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়াল ভরে গিয়েছিল প্রতিবাদীদের আঁকা বিভিন্ন ছবি আর কারুকাজে। এ দিন দেখা গিয়েছে, নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকগুলি। এর পিছনে পুলিশের প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে বলেও অভিযোগ।

Advertisement

২২ মার্চ জনতা কার্ফু ঘোষণার দিন থেকেই প্রতিবাদস্থল অনেকখানি খালি করে দিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ শুরু করেছিল শাহিন বাগ। দূরত্ব রেখে পালা করে প্রতিবাদে বসছিলেন ৫-১০ জন। আধ ঘণ্টা করে। বাকি চৌকিতে রাখা থাকছিল এক জোড়া চটি আর পোস্টার। কিন্তু গত ক’দিন ধরে সেই আন্দোলনও গোটাতে চাপ দিচ্ছিল পুলিশ।

আন্দোলনকারী প্রকাশ দেবী জানান, গত সন্ধ্যায় আপাতত আন্দোলন স্থগিত রাখার অনুরোধ নিয়ে এসেছিল পুলিশ। রাজি হননি প্রতিবাদীরা। তার পরে রাত দু’টো থেকেই এলাকা এবং চার পাশের রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি শুরু করে পুলিশ। এমন ভাবে আশপাশের রাস্তা আটকে দেওয়া হয়, যাতে চট করে ছুটে আসতে না-পারেন স্থানীয়রা। এর পরে সকাল ৭টা নাগাদ শাহিন বাগে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। সঙ্গে আধা সেনাও। বাঁশ, ত্রিপল থেকে শুরু করে যাবতীয় জিনিস ক্রেনে করে তোলা হয় পুলিশের সঙ্গে আসা ট্রাকে।

আর এক প্রতিবাদী অমিতা বাগের ক্ষোভ, গায়ের জোরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ তুলে দিয়েছে সরকার। কিন্তু তাঁর আশা, করোনা-সঙ্কট কেটে গেলে ফের দানা বাঁধবে আন্দোলন।

কিন্তু আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা শাহিন কওসর মানছেন, গত তিন মাস ধরে তিল-তিল করে যে আন্দোলন দানা বেঁধেছিল, ফের নতুন করে শুরু করে তাকে আগের জায়গায় নিয়ে যাওয়া সহজ হবে না। তবে এই মুহূর্তে করোনার আক্রমণে সারা দেশে যে পরিস্থিতি, তাতে অন্তত সরকারি সিদ্ধান্তের পাশে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোনও রাস্তা তাঁর চোখে পড়ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.