প্রতীকী ছবি
প্রথমে ঘোষণা হল, পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে কোনও মতেই বিশেষ ট্রেন চলবে না। ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না-পেরোতেই পাল্টে গেল কেন্দ্রের সেই সিদ্ধান্ত।
বুধবার রাতে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর ছাড়পত্র দিয়েছিল মোদী সরকার। বলা হয়েছিল, রাজ্যগুলি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে শ্রমিকদের বাসে চাপিয়ে এক রাজ্য থেকে আর এক রাজ্যে ফেরানোর বন্দোবস্ত করতে পারে। কিন্তু কোনও ভাবেই ট্রেনের বন্দোবস্ত করা হবে না।
অথচ শুক্রবারই ভোর ৫টায় তেলঙ্গানার লিঙ্গমপল্লি থেকে ঝাড়খণ্ডের হাতিয়ার উদ্দেশে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ট্রেন রওনা হল। বিকেল ৫টায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানাল, লকডাউনের মধ্যে ট্রেনে করে শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিক, পড়ুয়া পর্যটকদের ট্রেনেই ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে।
গোটা ঘটনায় ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পরিকল্পনার অভাব, তথ্য গোপন করে হেনস্থা ও অনিশ্চয়তা তৈরির অভিযোগ উঠেছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, মোদী সরকার এক-এক ধাপে এক-এক রকম নিয়ম জারি করছে। কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘বুধবার রাতে তুঘলকি ফরমান জারি হল, কেন্দ্র কোনও দায়িত্ব নেবে না। কোনও খরচও জোগাবে না। রাজ্য সরকারই সব আয়োজন করবে, খরচ দেবে। বৃহস্পতিবার বিরোধীরা সরব হলেন। শুক্রবার ভোরে আচমকা ট্রেন চলতে শুরু করল!’’ রাজ্যগুলির হিসেবে, প্রায় ১ কোটি পরিযায়ী শ্রমিক বিভিন্ন রাজ্যে আটকে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে তাঁদের বাসে করে ফেরাতে হলে ৫ লক্ষ বাস দরকার হত।
আরও পড়ুন: দেশ জুড়ে ১৭ মে পর্যন্ত বাড়ল লকডাউনের মেয়াদ
আজ শ্রমিক দিবসে এই ‘শ্রমিক স্পেশাল’ ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিলেও রেল মন্ত্রক আর কোনও দায়িত্ব নেবে না বলে জানিয়েছে। তাদের যুক্তি, যে রাজ্য শ্রমিক পাঠাচ্ছে ও যে রাজ্যে শ্রমিকেরা ফেরত যাচ্ছেন, তারা দু’পক্ষ অনুরোধ করলে তবেই ট্রেন চালানো হবে। করোনা-সংক্রমণের লক্ষণ থাকলে ট্রেনে ওঠা যাবে না। ট্রেনে ওঠার আগে শারীরিক পরীক্ষা, খাবার-পানীয় জল দেওয়া, ট্রেন থেকে নামার পরে প্রয়োজনে কোয়রান্টিন ও স্টেশন থেকে সকলকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও রাজ্যগুলিকেই করতে হবে। শুধু দূরপাল্লার ট্রেনে রেল খাবার দেবে।
লকডাউন ঘোষণার আগেই ২২ মার্চ থেকে দেশে যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধুমাত্র পণ্যবাহী ও সামরিক বাহিনীর জন্য ট্রেন চলছে। আজ লিঙ্গমপল্লি-হাতিয়া ছাড়াও কেরলের আলুভা-ভুবনেশ্বর, নাসিক-লখনউ, নাসিক-ভোপাল, জয়পুর-পটনা, কোটা-হাতিয়া রুটে ট্রেন চালানোর কথা জানিয়েছে রেল। তবে রাজ্য সরকারের চিহ্নিত করা শ্রমিক, পড়ুয়ারা ছাড়া আর কাউকেই এই সব ট্রেনে যাত্রার টিকিট দেওয়া হবে না। বসতে হবে দূরত্ব-বিধি মেনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy