ফাইল চিত্র।
ঘোষণা হয়েছিল আগেই। এ বার কোভিডে মৃতের নিকটাত্মীয়কে ক্ষতিপূরণ দিতে টাকা বরাদ্দ করল কেন্দ্রীয় সরকার। যোগ্য দাবিদার নির্বাচন করে অনলাইনে দ্রুত তা পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ জেলাগুলিকে দিয়েছে রাজ্যও। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের ধারণা, এতে রাজ্যের উপর বাড়তি আর্থিক বোঝা চাপবে না।
তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের বক্তব্য, একাধিক রাজ্যে বিধানসভা ভোট এবং পুরসভা ভোটের আগে এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁদের যুক্তি, আগামী বছর উত্তরপ্রদেশ-সহ অন্তত সাতটি রাজ্যে বিধানসভা ভোট হবে। আবার এর মধ্যে কলকাতা-সহ অনেকগুলি পুরসভার ভোটও রয়েছে। ফলে গোটা দেশে একসঙ্গে আর্থিক সহায়তাপ্রদানের কাজ দ্রুত করা জরুরি ছিল।
গত সেপ্টেম্বরেই সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র জানিয়েছিল, কোভিডে মৃত ব্যক্তির নিকটাত্মীয়কে ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। প্রশাসনিক সূত্রের ধারণা, ইতিমধ্যেই সেই বরাদ্দ এসে পৌঁছে থাকতে পারে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলে (স্টেট ডিজ়াস্টার রিলিফ ফান্ড বা এসডিআরএফ)। তাই আর্থিক সাহায্য বণ্টনের কাজ দ্রুত শুরু করার নির্দেশ জেলাগুলিকে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এসডিআরএফ থেকে সেই অর্থ পাবে জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ (ডিডিএমএ)। তাদের মাধ্যমে জেলাভিত্তিক ক্ষতিপূরণ বণ্টনের কাজ হবে। জেলা প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, রাজ্যে প্রায় ২০ হাজার মানুষ কোভিডের কারণে মারা গিয়েছেন। ফলে কেন্দ্রের ঘোষণা করা আর্থিক সাহায্য (মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা এক্স-গ্রাশিয়া) হিসেবে অন্তত ১০০ কোটি টাকা এসে থাকতে পারে রাজ্যের তহবিলে। অবশ্য ওই তহবিলে প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকলে, কেন্দ্র তা পাঠাবে বলে প্রশাসনিক সূত্রের অনুমান।
প্রশাসনের একাংশ জানাচ্ছে, রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলে বছরে দুই কিস্তিতে টাকা দেয় কেন্দ্র। তহবিলের ৭৫% অর্থ দেওয়ার কথা কেন্দ্রের। কিন্তু আমপান, ফণী, বুলবুল, ইয়াসের মতো একের পর এক বিপর্যয় রাজ্যকে সামলাতে হয়েছে। রাজ্যের বরাবরের অভিযোগ, যে অর্থ খরচ হয়েছে বিপর্যয় খাতে, তার বেশিরভাগ অর্থই এখনও বকেয়া। ফলে কোভিড-মৃত্যুর আর্থিক সাহায্য রাজ্যকে দিতে হলে কোষাগারের উপর বাড়তি
চাপ আসত।
সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, আর্থিক সাহায্য প্রাপককে কোভিডে নিকটাত্মীয়ের মৃত্যুর শংসাপত্র দিতে হবে। মৃত ব্যক্তির আধার, ভোটার কার্ড, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি, নিকটাত্মীয়ের প্রমাণ এবং সম্পর্কের প্রমাণে ম্যাজিস্ট্রেটের অথবা নোটারি হলফনামা জমা করতে হবে। জেলা প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে গঠিত কমিটি সেই নথি যাচাই করবে। সব ঠিক থাকলে আবেদনের এক মাসের মধ্যে মৃতের নিকটাত্মীয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্য পৌঁছবে। অবশ্য, উপভোক্তার দিক থেকে কোনও অভিযোগ থাকলে তা দেখার জন্য জেলাভিত্তিক একটি প্রশাসনিক কমিটিও তৈরি হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy