Advertisement
০৮ মে ২০২৪
COVID-19

ভয় নেই নয়া করোনায়, তবে গা-ছাড়াও নয়

বিএফ.৭ আক্রান্ত এক জন রোগী ১৮ জনকে সংক্রমিত করতে পারেন বলে জানিয়েও বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এতে ভয়ের কিছু নেই।

গত জুলাইয়ে প্রথম এ দেশে বিএফ.৭ ধরা পড়েছিল।

গত জুলাইয়ে প্রথম এ দেশে বিএফ.৭ ধরা পড়েছিল। প্রতীকী ছবি।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৫৪
Share: Save:

চিনে চোখ রাঙালেও ভারতে কার্যত খাতা খুলতেই পারেনি ওমিক্রনের বিএফ.৭ উপ-প্রজাতি। ফলে এ দেশে তার প্রভাব খুব সামান্যই পড়বে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা।

বিএফ.৭ আক্রান্ত এক জন রোগী ১৮ জনকে সংক্রমিত করতে পারেন বলে জানিয়েও বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এতে ভয়ের কিছু নেই। দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক এম ওয়ালির কথায়, ‘‘বিএফ.৭ ভারতেও রয়েছে। গত জুলাইয়ে প্রথম এ দেশে বিএফ.৭ ধরা পড়েছিল। যদি ওই উপ-প্রজাতিটি সে ভাবে সংক্রমণ ছড়াতে পারত, তা হলে এত দিনে ভারতে ফের করোনা বাড়ত। কিন্তু তা হয়নি। তাই এ নিয়ে অযথা চিন্তা করার প্রয়োজন নেই।’’ তবে পরীক্ষা করানো কমে যাওয়ায় ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম, এমনও অনেকে মনে করছেন।

এখনও পর্যন্ত ভারতে মাত্র চার জন বিএফ.৭ উপ-প্রজাতির করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। চিনে কী ঘটল? ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্সের অধ্যাপক প্রিয়দর্শী বসু বলছেন, ‘‘চিনের সরকার ‘জ়িরো কোভিড’ নীতিতে মানুষকে ঘরবন্দি রাখার কৌশল নিয়েছিল। তার ফলে জনতাকে করোনার বিভিন্ন প্রজাতির বিরুদ্ধে যুঝতে যেমন হয়নি, তেমনই তাঁদের শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতাও তৈরি হয়নি। এখন চিনা সরকার ওই নীতি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় সে দেশের মানুষ পথে নেমেই বিএফ.৭ সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন।’’ অন্য দিকে, ভারতে লকডাউন ওঠার পরেই সব কিছু খুলে দেয় সরকার। প্রিয়দর্শীর মতে, এর ফলে এ দেশের মানুষ বিভিন্ন সময়ে করোনার নানা প্রজাতির মুখোমুখি হয়েছেন এবং তাঁদের শরীরে প্রয়োজনীয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। ভারতীয় জনগোষ্ঠীতে তৈরি হওয়া সেই ‘হাইব্রিড ইমিউনিটি’ বা মিশ্র রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই বিএফ.৭-কে প্রতিহত করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা প্রতিনিয়ত চরিত্র পরিবর্তন করায় ভবিষ্যতে এই ভাইরাসের অন্যান্য উপ-প্রজাতিও দেখতে পাওয়া যাবে। যাঁরা শারীরিক ভাবে দুর্বল বা যাঁদের ‘ক্রনিক’ রোগ রয়েছে, তাঁরা আক্রান্ত বা গুরুতর অসুস্থ হতে পারেন। কিন্তু যারা মোটের উপরে সুস্থ, তাঁদের তেমন চিন্তা নেই। নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পলের মতে, ‘‘নতুন ওই উপ-প্রজাতিকে নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। গত ছ’মাস ধরে সেটি ভারতে রয়েছে, কিন্তু বিশেষ প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে এখনও কোভিড বিধি মেনে চলা উচিত।’’

একই সঙ্গে বুস্টার ডোজ়েও জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। দিল্লির এক হাসপাতালের চিকিৎসক রাহুল ভার্গবের কথায়, ‘‘প্রতিষেধক নেওয়া থাকলে করোনায় আক্রান্ত হলেও সেই রোগীর মৃত্যু হবে না।’’ করোনা যেহেতু ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ফি-বছর নতুন চেহারায় হাজির হবে, তাই সুস্থ থাকতে হলে প্রতি বছরই বুস্টার নেওয়া প্রয়োজন বলে তাঁর মত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 China India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE