প্রতীকী ছবি।
স্বাধীনতা দিবসের মধ্যেই কি করোনার টিকা বাজারে আসছে? দেশ জোড়া এই বিতর্কে এ বার নতুন ইন্ধন জোগাল কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের প্রেস বিজ্ঞপ্তি। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর উল্টো সুরেই রবিবার বিজ্ঞান মন্ত্রক প্রথমে বলে, করোনার টিকা ‘‘২০২১-এর আগে আসবে বলে মনে হচ্ছে না।’’ কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যেই উলটপুরাণ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে ওই লাইনটি মুছে লেখা হয়, দুটি টিকার মানবশরীরে পরীক্ষা চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তা করোনার ‘শেষের শুরু’।
গত শুক্রবার আইসিএমআর দাবি করে, আগামী ১৫ অগস্টের মধ্যেই দেশে তৈরি প্রথম কোভিড টিকা বাজারে আনা হবে। কিন্তু আইসিএমআর-এর এই দাবির পর থেকেই টিকা-বিতর্কে সরগরম হয়ে ওঠে গোটা দেশ। কোভিড টিকা খুব তাড়াহুড়ো করে বাজারে আনা হচ্ছে। বিষয়টি জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিপুল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এমনই মত উঠে আসতে থাকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের তরফে। করোনার টিকার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ আইসিএমআর-এর এই ‘ব্যস্ততা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে বিরোধীরাও। এই বিতর্কের মধ্যেই এ দিন বিবৃতি জারি করে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক। টিকা নিয়ে আইসিএমআর যে সময়সীমার কথা প্রথমে বলেছিল, তা থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে বিজ্ঞান মন্ত্রক বলে, ‘‘করোনার টিকা নিয়ে কাজ করছে ৬টি ভারতীয় সংস্থা। এর মধ্যে দুটি ভারতীয় টিকাও (কোভ্যাক্সিন এবং জাইকোভ ডি) পরীক্ষা নিরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে। বিশ্বে ১৪০টি টিকার মধ্যে ১১টি মানবদেহের উপর পরীক্ষা করা হচ্ছে। এগুলির মধ্যে কোনওটাই ২০২১-এর আগে আসবে বলে মনে হচ্ছে না।’’
বিজ্ঞান মন্ত্রকের এই বিবৃতির পর করোনার টিকা যে তাড়াতাড়ি বাজারে আসছে না তার ইঙ্গিত মিলতে শুরু করে। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যেই নাটকীয় ভাবে ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। টিকা বাজারে আসার সময়সীমা নিয়ে যে কথা (‘‘কোনওটাই ২০২১-এর আগে আসবে বলে মনে হচ্ছে না।’’) বিবৃতিতে প্রথমে বলা হয়েছিল তা সম্পূর্ণ মুছে ফেলা হয়। বদলে লেখা হয়, দুটি ভ্যাক্সিনকে ‘‘মানব শরীরে পরীক্ষা চালানোর জন্য ছাড়পত্র দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া সিডিএসসিও যা শেষের শুরু।’’
আরও পড়ুন: ১০ হাজার শয্যা, ২৫০ আইসিইউ, দিল্লিতে ১২ দিনে তৈরি বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোভিড হাসপাতাল
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিটি স্তরে টিকার পরীক্ষা চালানোর জন্য বেশ কয়েক মাস, এমনকি কয়েক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। কিন্তু আইসিএমআর যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল তার মধ্যে এত গুলি স্তর পেরনো অসম্ভব বলেই মনে করছেন অনেকে। রবিবারই দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস)’-এর অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া সাফ জানিয়ে দেন, ‘‘এত তাড়াহুড়ো করে কোভিডের টিকা বাজারে আনাটা ঠিক হচ্ছে না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ, এই টিকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার যথেষ্টই সম্ভাবনা রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: জন্মদিনের পার্টি দিয়ে করোনায় মৃত ব্যবসায়ী, আতঙ্কে কাঁপছে হায়দরাবাদ
শনিবার আইসিএমআর অবশ্য সাফাই দিয়েছে, লাল ফিতের জট এড়াতেই ওই পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। দ্রুত কাজ করতে গিয়ে কোনও ভাবেই মানুষের প্রাণের সঙ্গে ঝুঁকি নেওয়া হবে না। ইতিমধ্যেই দেশের ১২টি হাসপাতালকে ওই টিকার গুণাগুণ পরীক্ষার জন্য বেছে নিয়েছে কেন্দ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy