প্রতীকী চিত্র।
সবাই ছুটছেন ১০০ টাকার সন্ধানে। ৫০০, ১ হাজার টাকা তো নয়ই। এমনকী, নতুন ২ হাজার টাকার নোটেরও চাহিদা নেই এখন। শুধু ১০০ টাকার নোট চাই— এমনই আর্তি শোনা যায় ব্যাঙ্কের কাউন্টারে, এটিএম লাইনে।
এমনই সময়ে ১০ হাজার টাকা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিলেন ২২ বছরের যুবক রণবিজয় দাস। সব ১০০ টাকার নোট। বিনিময়ে তিনি ৫টি ২ হাজার টাকার নোট পেয়েছেন বটে, তবু ব্যাঙ্ককর্তারা তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। বর্তমান সঙ্কটমোচনে এই নোটগুলি বিরাট সহায়ক বলে জানান তাঁরা।
রণবিজয় দাস গুয়াহাটির আসাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে এ বছরেই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। ফাটকবাজারে বাবা রঞ্জিৎ দাসের ফলের ব্যবসা। ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষা সেরে বাড়ি ফেরার পর বাবাকে ব্যবসায় সাহায্য করেন। তাঁর কথায়, ‘‘১০০ টাকার নোটের সঙ্কট দেখে খারাপ লাগছিল। ব্যবসা সূত্রে সাধারণ মানুষের যন্ত্রণা টের পাচ্ছিলাম। তাই ঠিক করি, দোকানে যত ১০০ টাকার নোট মিলবে, জমিয়ে না রেখে ব্যাঙ্কে জমা করে দেব। তা হলে মানুষের কিছুটা হলেও সুবিধা হবে।’’
স্টেট ব্যাঙ্কের হাসপাতাল রোড শাখার ম্যানেজার এন ধরচৌধুরী অবশ্য একে শুধু ১০০ টাকার একটি বান্ডিল বলে মনে করছেন না। তিনি বলেন, ‘‘রণবিজয়ের এই পদক্ষেপ বিশেষ বার্তা বহন করছে। এই সময়ে ছোট নোটগুলি ঘরে আটকে রাখার জন্যই সমস্যা তীব্র হচ্ছে।’’
রণবিজয় জানিয়েছেন, তাঁর কথা শুনে অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও আগ্রহ দেখিয়েছেন। তিনি তাঁদের সঙ্গে দল বেঁধে শনিবার ছোট নোটের একটি মোটা টাকা জমা করবেন।
ধরচৌধুরীর কথায়, ‘‘তাতে অবশ্যই বিরাট সুবিধা হবে। যেমন ব্যাঙ্কের, তেমনি সাধারণ মানুষের। তবে সঙ্কট মেটার জন্য প্রয়োজন ৫০০ টাকার নতুন নোট। ওই নোট বাজারে এলেই ২ হাজার নোটগুলি কাজে আসবে।’’
ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়ে বাতিল নোট বদলের ক্ষেত্রে আঙুলে কালি লাগানোর নির্দেশ জারি হলেও শিলচরে তেমন ব্যাপার নেই। ব্যাঙ্ককর্তারা জানান, এই অঞ্চলের কোনও ব্যাঙ্কে এমন নির্দেশ আসেনি। আসেনি কালিও।
ডাকঘর কর্তৃপক্ষ জানান, ছোট নোট নিয়ে বিরাট সঙ্কটে তাঁরাও। সরকার ঘোষণা করেছে, ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরে টাকা বদল হতে পারে। ফলে মানুষ লাইন দিচ্ছেন। কিন্তু ব্যাঙ্ক থেকে ছোট নোট মিলছে না। অন্য সময় যে টাকা জমা হতো, তার সবটাই আসছে বাতিল নোটে।
এ দিকে, অসমের একটি নির্মাণ সংস্থার গাড়ি থেকে মিলল প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। এ দিন সন্ধ্যায় গুয়াহাটির পল্টনবাজার থানার পুলিশ ভাঙাগড় এলাকায় শিলচর থেকে আসা একটি এসইউভি গাড়িতে তল্লাশি চালায়। গাড়িতে রাখা টাকা বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি চালক রাজু বড়ো ও অন্য এক আরোহীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, ডিমা হাসাওয়ে রেল, সড়ক নির্মাণের কাজ করা একটি সংস্থার জন্য ওই টাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। অন্য দিকে, গুয়াহাটির খানাপাড়া এলাকায় পুলিশ এ দিন একটি জাল টাকা ছাপার কারখানা উৎখাত করে। সেখানে টাকা ছাপানোর যন্ত্র। বেশ কিছু নকল নোট, কাগজ ও রঙ মিলেছে। কারখানার মালিক পলাতক।
রাজ্যে ১০ টাকার কয়েন নিষিদ্ধ বলে গুজব ছড়ানোয় গুয়াহাটির সব বাজারে অচল হয়ে গিয়েছে ওই কয়েন। এক দিকে খুচরোর আকাল চলছে, তার মধ্যে ১০ টাকার কয়েন নিয়ে এই গুজব শহরে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করেছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ওই কয়েন নিষিদ্ধ করার ঘোষণা একেবারে ভিত্তিহীন। কিন্তু সে নির্দেশ মানতে নারাজ ক্রেতারা। সকলের বক্তব্য, ওই কয়েনের নকল বেরিয়েছে। তাই ১০ টাকার কয়েনে লেনদেন হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy