Advertisement
E-Paper

সরকারি হাসপাতালেও ঘুষের ‘আবদার’, বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু শিশুর

জ্বরে কাবু কোলের শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন মা সুমিতাদেবী। প্রয়োজন ছিল জীবনদায়ী এক ইঞ্জেকশনের। সরকারি হাসপাতালে সেই ইঞ্জেকশনের জন্য চাওয়া হয় ঘুষ। অভিযোগ, সময়মতো সেই ঘুষের টাকা জোগাড় করতে না পারায় হাসপাতালেই বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয় ১০ মাসের শিশুর।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৬ ১২:০৩
কান্নায় ভেঙে পড়েছেন শিশুটির মা। ছবি: টুইটার।

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন শিশুটির মা। ছবি: টুইটার।

জ্বরে কাবু কোলের শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন মা সুমিতাদেবী। প্রয়োজন ছিল জীবনদায়ী এক ইঞ্জেকশনের। সরকারি হাসপাতালে সেই ইঞ্জেকশনের জন্য চাওয়া হয় ঘুষ। অভিযোগ, সময়মতো সেই ঘুষের টাকা জোগাড় করতে না পারায় হাসপাতালেই বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয় ১০ মাসের শিশুর। শিশুটির মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে। বরখাস্ত করা হয়েছে হাসপাতালের ওয়ার্ডবয়কে। বদলি করা হয়েছে এক নার্সকেও। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে।

শিশুটির মা সুমিতা দত্ত জানান, কয়েক দিন ধরেই জ্বরে ভুগছিল শিশুটি। উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচের একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে। চিকিৎসক তাকে ভর্তি করাতে বলেন। প্রথম বাধা আসে ভর্তির কাগজপত্র তৈরি করার সময়। হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে এক নার্স তাঁর কাছে বাড়তি টাকা চান। তা না দিলে ভর্তির কাগজপত্র তৈরি করবেন না বলে হুমকিও দেন ওই নার্স। প্রথমে এই নিয়ে বাগবিতণ্ডা হলেও উপায় না পেয়ে টাকা দিতেই বাধ্য হন সুমিতাদেবী। এর পরে দ্বিতীয় ধাপেও একই ভাবে ঠোক্কর খেয়ে হয় তাঁদের। এবার তাঁদের থেকে টাকা চেয়ে বসেন হাসপাতালের শিশু বিভাগের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের দায়িত্বে থাকা এক কর্মী। ওই কর্মী তাঁদের জানান যে, বাড়তি টাকা না দিলে বেড পাওয়া যাবে না। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে তাও দিতে বাধ্য হন তাঁরা। এই ভাবে কোনও মতে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু ঘুষের দাবি এখানেই থেমে যায়নি। আরও বড় কিছু অপেক্ষা করেছিল তাঁদের জন্য। শিশুটিকে প্রাণে বাঁচানোর জন্য সেই মুহূর্তেই একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া খুব জরুরি হয়ে পড়ে। মরন-বাঁচন এই মুহূর্তেও সামনে আসে ঘুষের দাবি। শিশুটির মায়ের অভিযোগ, যে ব্যক্তি তাঁদের সন্তানকে ইঞ্জেকশন দিতে এসেছিলেন তিনিও তাঁদের কাছে টাকা চান। কড়া সুরে জানিয়ে দেন, টাকা না পেলে ইঞ্জেকশন দেবেন না। কিন্তু অভাবের সংসারে যে পরিমাণ টাকা নিয়ে হাসপাতালে ছুটে এসেছিলেন, আগের দুই কিস্তি ঘুষের ঠেলায় আগেই তা শেষ হয়ে গিয়েছিল। অনেক কাকুতি-মিনতি করলেও সেই ব্যক্তি তাঁদের কথা শোনেননি। ইঞ্জেকশন না দিয়েই তিনি চলে যান বলে অভিযোগ। পরে হাসপাতালের চিকিৎসকদের ধরে তাঁকে ইঞ্জেকশন দিতে রাজি করালেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। বিনা চিকিৎসায় হাসপাতালেই মারা যায় শিশুটি।

আরও পড়ুন: উচ্ছৃঙ্খল ছেলে বাগ না মানায় ‘সুপারি’ দিয়ে খুন, গ্রেফতার বাবা

এই ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে কয়েক জনের বিরুদ্ধে। তবে যে ব্যক্তি টাকার জন্য শিশুটিকে ইঞ্জেকশন দিতে দেরি করেছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। তাঁর অভিযোগ প্রমাণ হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

child death treatment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy