গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা আর পুনর্বিবেচনা করা হবে না। এ সংক্রান্ত সব আবেদন খারিজ করে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে।
বিচারপতি সঞ্জীব খন্না, বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি এএস বোপান্নার বেঞ্চ জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সংবিধান বেঞ্চের রায় পুনর্বিবেচনার দাবিতে যে ‘রিভিউ পিটিশন’গুলি জমা পড়েছিল, সে গুলির পর্যালোচনা করে কোনও রায়ের কোনও সুর্নির্দিষ্ট ত্রুটির অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ১১ ডিসেম্বরের ওই রায়ে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ জানিয়েছিল, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক নয়। বেঞ্চের রায়ে বলা হয়— ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের সুপারিশে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা বৈধ।
কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা দিয়ে অবিলম্বে বিধানসভা নির্বাচনের নির্দেশও দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। জানিয়েছিল, নির্বাচন করাতে হবে ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। নরেন্দ্র মোদী সরকার ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট কেন্দ্র সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ করে। সাবেক জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখে ভাগ করা হয়। তার পরে সুপ্রিম কোর্টে এই পদক্ষেপের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক মামলা হয়েছিল। তারই রায়ে ওই কথা জানিয়েছিল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য ছিল, অনুচ্ছেদ ৩৭০-এ জম্মু ও কাশ্মীরকে যে বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়েছিল, তা সাময়িক। কাশ্মীরের গণপরিষদ বাতিল হয়ে যাওয়ার পরেও রাষ্ট্রপতির ওই অনুচ্ছেদ বাতিল করার অধিকার ছিল। ফলে যা হয়েছে, তা অসাংবিধানিক নয়। এর পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দিতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ, আর তা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে পড়বে না। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। তার পর সেখানে জারি করা হয়েছিল রাষ্ট্রপতি শাসন।
এখনও জম্মু ও কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতি শাসনই চলছে। ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট জম্মু-কাশ্মীর সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করেছিলেন রাষ্ট্রপতি। এর মাধ্যমে সংবিধানে ৩৬৭(৪) নম্বর অনুচ্ছেদ যোগ করা হয়েছিল। ফলে সংবিধানের ৩৭০(৩) নম্বর ধারায় ‘রাজ্যের সংবিধান সভা’-র বদলে ‘রাজ্যের বিধানসভা’ শব্দটি যোগ হয়েছিল। সে দিনই সংসদে বিশেষ মর্যাদা লোপ এবং জম্মু-কাশ্মীর ভাগের বিল পাশ হয়। পরের দিন রাষ্ট্রপতি জানান, ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ আর কার্যকর হচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy