Advertisement
০৩ মে ২০২৪

জোড়-বিজোড়ে ভাল সাড়া, বিধি ভেঙে ধরা পড়লেন বিজেপি সাংসদ

দিল্লিতে চালু হয়ে গেল জোড়-বিজোড় নাম্বারপ্লেট বিধি। জনসাধারণ নিয়ম মানলেও, বিজেপি সাংসদ সত্যপাল সিংহ বিধি ভেঙে ধরা পড়লেন। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই রাজধানীর রাস্তায় গাড়ি চলাচলে জোড়-বিজোড়ের নতুন নিয়ম লাগু হবে বলে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৬ ১৫:৪৪
Share: Save:

দিল্লিতে চালু হয়ে গেল জোড়-বিজোড় নাম্বারপ্লেট বিধি। জনসাধারণ নিয়ম মানলেও, বিজেপি সাংসদ সত্যপাল সিংহ বিধি ভেঙে ধরা পড়লেন। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই রাজধানীর রাস্তায় গাড়ি চলাচলে জোড়-বিজোড়ের নতুন নিয়ম লাগু হবে বলে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ দিন শুধু বিজোড় সংখ্যার গাড়ি দিল্লির রাস্তায় নেমেছে। নতুন ব্যবস্থায় দিল্লিবাসীর সাড়া মোটের উপর বেশ ভাল। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেরজীবাল জানিয়েছেন, যান চলাচল বিধির সাফল্যে তিনি অভিভূত।

দিল্লিতে বায়ুদূষণের পরিমাণ দেশের বড় শহরগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজধানী শহরগুলির মধ্যে সবচেয়ে দূষিত বেজিং আর দিল্লি। ফলে বেজিং-এর মতো ধোঁয়াশার মেঘ আজকাল সারাক্ষণ ঘিরে থাকছে দিল্লিকেও। শীতকালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হচ্ছে। বেজিং-এ অনেক আগেই চালু হয়ে গিয়েছে যান চলাচলের নাম্বারপ্লেট বিধি। ভারতের রাজধানীতে এত দিনে চালু হল। নতুন ব্যবস্থায় যে কোনও গাড়ি মাসে কমবেশি ১৫ দিন রাস্তায় নামার সুযোগ পাবে। বাকি ১৫ দিন রাস্তায় নামতে পারবে না গাড়িগুলি। কারণ, নতুন নিয়মে যে দিন বিজোড় সংখ্যা দিয়ে শেষ হওয়া নাম্বারপ্লেটের গাড়ি পথে নামবে, সে দিন বেরনো নিষেধ জোড় সংখ্যা দিয়ে শেষ হওয়া নাম্বারপ্লেটের গাড়ির। নিয়ম ভাঙলে ২০০০ টাকা জরিমানা।

খুব বেশি গাড়িকে এ দিন অবশ্য জরিমানার মুখে পড়তে হয়নি। কারণ নিয়ম ভেঙে জোড় সংখ্যার গাড়ি নিয়ে এ দিন হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া কেউ রাস্তায় বার হননি। যদিও বিজেপি সাংসদ সত্যপাল সিংহ কোনও বিধির তোয়াক্কা না করে নিজের জোড় সংখ্যার গাড়ি নিয়েই এ দিন রাস্তায় নামেন এবং জরিমানার মুখে পড়েন। মূলত ট্রাফিক পুলিশের উপরেই যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব থাকলেও, দিল্লির রাজপথে এ দিন বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবকও নামানো হয়েছে। তাঁরা গাড়ি আটকে জরিমানা করছেন না। কিন্তু নিয়ম ভেঙে কাউকে জোড় সংখ্যার গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামতে দেখলে চালককে ফুল দিয়ে মুন্নাভাই-এর ঢঙে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল এ দিন বলেন, ‘‘দিল্লিবাসীর সাড়ায় আমি সত্যিই অভিভূত। মানুষ অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। আমি নি‌শ্চিত, দিল্লিই পথ দেখাবে।’’ কেজরীবালের নিজের গাড়ি বিজোড় সংখ্যার। তিনি সেই গাড়ি নিয়েই এ দিন কার্যালয়ে যান। দুই মন্ত্রী গোপাল রায় এবং সত্যেন্দ্র জৈনকে তিনি নিজের গাড়িতেই নিয়ে যান। দিল্লির আর এক মন্ত্রী কপিল মিশ্র মোটরবাইক নিয়েছেন। কারণ দু’চাকার যানবাহনের উপর কোনও বিধিনিষেধ নেই। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কমে যাওয়ায় গণপরিবহণ ব্যবস্থার উপর চাপ যে বাড়বেই, তা জানাই ছিল প্রশাসনের। তাই বেসরকারি বাস ভাড়া নিয়ে সরকার ৩০০০ অতিরিক্ত বাস এ দিন বিভিন্ন রুটে নামিয়েছে।

তবে, সব গাড়ির উপর নিষেধাজ্ঞা কিন্তু নেই। যে সব গাড়ি সিএনজি-তে চলে, সেই গাড়ি নাম্বারপ্লেট বিধির আওতায় পড়ছে না। আওতায় পড়ছে না ইলেকট্রিক হাইব্রিড গাড়িও। যে সব গাড়িতে শুধু মহিলা ও শিশুরা বা প্রতিবন্ধীরা যাতায়াত করছেন, সেই গাড়ির ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে ছাড় পাচ্ছেন ভিভিআইপিরা। সেই তালিকায় রয়েছেন রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, লোকসভার স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারপার্সন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা, লোকসভা ও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতারা, সুপ্রিম কোর্ট ও দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতিরা। ছাড় পাচ্ছেন বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের রাজ্যপাল, উপরাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীরাও। এ ছাড়া এসপিজি নিরাপত্তা যাঁরা পান, তাঁদের গাড়ি, পাইলট কারের সুবিধাপ্রাপ্ত গাড়ি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গাড়ি, বিভিন্ন দূতাবাসের গাড়ি, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিভাগের গাড়ি বিধিনিষেধের আওতার বাইরে থাকছে। ছাড়া পাচ্ছে অ্যাম্বুল্যান্স এবং দমকলও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE