আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস তৈরির দাবিতে ফের সরব ডিমা হাসাওয়ের মানুষ। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী শরৎ বরকটকি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টি কেন্দ্রের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
আজ হাফলঙে উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের ৬৪-তম প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হয়। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী শরৎ বরকটকি ছিলেন প্রধান অতিথি। তাঁকে পেয়ে স্থানীয় মানুষ শিক্ষা সংক্রান্ত নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তার মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব পায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ক্যাম্পাস স্থাপনের দাবি। স্থানীয় বাসিন্দাদের যুক্তি, পাহাড় ডিঙিয়ে, বেহাল রাস্তা পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পড়াশোনা কষ্টকর। রাস্তাঘাটের সমস্যায় ছাত্রছাত্রীরা তিন-চার মাস ব্যবধানেও বাড়ি ফিরতে পারেন না। বর্ষার মরসুমে রেলপথ-সড়কপথ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। তা ছাড়া, ডিমা হাসাও জেলার সবকটি মহাবিদ্যালয় আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণে। নানা প্রয়োজনে কলেজ ছাত্র, শিক্ষক বা কর্তৃপক্ষকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হয়। তখন তাঁদের সঙ্কটে পড়তে হয়। এখানকার ছাত্রছাত্রীদের অনেক সমস্যা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবে বলে দীর্ঘ দিন ঝুলে থাকে।
শিক্ষামন্ত্রী বরকটকি ডিমা হাসাওয়ের মানুষের এই সমস্যাকে যুক্তিসঙ্গত বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার বিষয়টি জানে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিমা হাসাওয়ের কয়েকটি সংগঠন জোট বেঁধে তৎকালীন রাজ্যপাল জানকীবল্লভ পট্টনায়েকের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। রাজ্যপাল পদাধিকার বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর। তিনি ডিমা হাসাওয়ের মানুষের দাবির প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে উপাচার্যকে চিঠি লিখেছিলেন। উপাচার্যের সচিবালয় থেকে সেই চিঠি সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি আয়োগে পাঠিয়ে দেয়। তবে কোনও সাড়া মেলেনি।
শিলচরে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সদর ক্যাম্পাস। ডিফুতে রয়েছে অন্য একটি ক্যাম্পাস। হাফলঙে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ক্যাম্পাস স্থাপনের দাবি ছাড়াও হাফলং সরকারি মহাবিদ্যালয়ের নানা সমস্যার কথা শিক্ষামন্ত্রীকে জানানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মহাবিদ্যালয়ে ২৭টি পদ শূন্য পড়ে রয়েছে। তাতে পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে। বরকটকি বলেন, ‘‘দ্রুত সমস্যা সমাধানে সরকার তৎপর হবে। শূন্যপদ পূরণ করা হবে।’’
তিনি স্বশাসিত পরিষদের শিক্ষা দফতরের কার্যবাহী সদস্য কুলেন্দ্র দাওলাগুপোকে মহাবিদ্যালয়ের সমস্যা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে পাঠাতে বলেন। তা নিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈর সঙ্গে কথা বলবেন। বরকটকি জানান, পাহাড়ি জেলার শিক্ষা ব্যবস্থার পরিকাঠামোগত উন্নতির জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন।
পরিষদের মুখ্য কার্যবাহী সদস্য দেবজিৎ বলেন, ‘‘১ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারির অভিযোগে পরিষদের সুনাম নষ্ট হয়েছে। কেলেঙ্কারি যেমন হয়েছে, তেমনি তৎকালীন পরিষদ প্রধানকে জেলে দিন কাটাতে হচ্ছে। মানুষের আস্থা হারানোর কিছু নেই।’’ থাউসেনের কথায়, ‘‘এত দিন মূল সমস্যা ছিল জঙ্গি উপদ্রব। এখন তা থেকে রেহাই মিলেছে। সর্বত্র শান্তি। তাই উন্নতিও ত্বরান্বিত হচ্ছে।’’
পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে সরকারি বিভাগগুলির প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়েছে। এ দিন বিকেলে তার উদ্বোধন করেন থাউসেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy