তিস্তার জল ছিল। ছিল চিনা ডুবোজাহাজ। এ বার পাটজাত সামগ্রীর উপরে কর বসানোকে কেন্দ্র করেও দড়ি টানাটানি শুরু হয়ে গেল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যেজানুয়ারিতে বাংলাদেশ, নেপাল থেকে আসা পাটজাত দ্রব্যের উপরে ‘অ্যান্টি ডাম্পিং ডিউটি’ বসিয়েছে ভারত। তার জেরে বাংলাদেশ থেকে চটের বস্তা এবং অন্যান্য সামগ্রী আসা প্রায় বন্ধ। ঢাকার দাবি, ভারতের এই একতরফা সিদ্ধান্তে মার খাচ্ছে সে-দেশের চটকল। ওই কর তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন বাংলাদেশের চট ব্যবসায়ীরাও। এই অবস্থায় ঢাকা চাইছে, শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগে নরেন্দ্র মোদীর সরকার ওই কর প্রত্যাহার করে নিক। এতে আপত্তি নেই ভারতের বিদেশ মন্ত্রকেরও। কিন্তু বস্ত্র মন্ত্রক তাদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে রাজি নয়। তাই বল এখন প্রধানমন্ত্রীর কোর্টে।
অর্থ মন্ত্রকের কাছে স্মৃতি ইরানির বস্ত্র মন্ত্রকের যুক্তি, কর তুলে নিলে দেশের অন্তত ৫০০০ কোটি টাকা লোকসান হবে। মার খাবে ভারতীয় চটকলগুলিও। স্বাভাবিক ভাবেই বিদেশ আর বস্ত্র মন্ত্রকের এই মতপার্থক্যে এখন দাঁড়ি টানার দায়িত্ব বর্তেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের উপরে। বাংলাদেশ সরকারের আশা, কর তুলে নিয়ে দু’দেশের বাণিজ্যিক পরিমণ্ডলে আস্থা ফেরাতে ইতিবাচক পদক্ষেপ করবেন মোদী।
এ দেশের বেশির ভাগ চটকলই পশ্চিমবঙ্গে। তিন লক্ষ শ্রমিক এই শিল্পে যুক্ত। এই অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে সস্তার চটের ব্যাগ এবং অন্যান্য পাটজাত সামগ্রী আসতে থাকায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছিল পশ্চিমবঙ্গের চটকলগুলি। তার জেরে গত দেড়-দু’বছরে প্রায় ২০টি চটকল বন্ধ হয়ে যায়। কাজ হারান অন্তত ২৫ হাজার শ্রমিক।
তার পরেই ডিরেক্টর জেনারেল অব অ্যান্টি ডাম্পিং অ্যান্ড অ্যালায়েড ডিউটির কাছে ওই কর আরোপের দাবি জানায় চটকল-মালিক সংগঠন। প্রস্তাব যায় অর্থ মন্ত্রকের কাছে এবং জানুয়ারিতেই তা কার্যকর হয়।
বস্ত্র মন্ত্রকের এক কর্তা জানান, প্রতি বছর চটের বস্তা কিনতে প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা খরচ করে কেন্দ্র। বাংলাদেশ থেকে সস্তায় বস্তা কিনে তা বিক্রি করছিলেন এ দেশের এক শ্রেণির ব্যবসায়ী। ‘‘ভারতের ভর্তুকির টাকায় মুনাফা করছেন বাংলাদেশিদের একাংশ। এটা চলতে পারে না। এগুলো আটকাতেই কর বসানো হয়েছে,’’ বলেন বস্ত্র মন্ত্রকের ওই কর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy