সিসিলি ও উত্তর আফ্রিকার উপকূলের মাঝখানে ভূমধ্যসাগরে দ্বীপপুঞ্জ রাষ্ট্র। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশটির নাম মালটা। ছোট দেশ হলেও তাৎপর্যপূর্ণ হল, ভারতের সঙ্গে তার কোনও প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই।
বছর পাঁচেক আগে এই মালটাতেই নোঙর ফেলেছিল ‘ইন্ডিয়ান এমপ্রেস’ নামের বিলাসবহুল প্রমোদতরী। মালিকের নাম বিজয় মাল্য। কাতারের রাজপরিবারের কাছ থেকে কেনা প্রমোদতরীটি ঢেলে সাজানোর জন্য মালটাতে পাঠিয়েছিলেন তিনি। সিবিআই ও ইডি-কর্তাদের এখন সন্দেহ, মালটা বা এই ধরনের কোনও দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে সেখানেই আশ্রয় নিতে চাইছেন কিংফিশারের প্রাক্তন মালিক। মোদী সরকার ব্রিটেনের উপর মাল্যকে প্রত্যর্পণের চাপ দিচ্ছে। সেই প্রচেষ্টাকে ফাঁকি দিতেই মাল্য এই পরিকল্পনা করছেন বলে সিবিআই-ইডি কর্তাদের আশঙ্কা।
ইডি ও সিবিআই অফিসারদের নিয়ে তৈরি পাঁচ জনের একটি দল এখন লন্ডনে পৌঁছে গিয়েছে। দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন সিবিআই-এর অতিরিক্ত অধিকর্তা রাকেশ আস্থানা। ১৭টি ব্যাঙ্কের থেকে কিংফিশার এয়ারলাইন্সের জন্য ৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা ইচ্ছাকৃত ভাবে ফেরত না দেওয়ার মামলা ঝুলছে বিজয় মাল্যর নামে। গত বছর মার্চে তিনি লন্ডন পালিয়ে যান। তাঁকে প্রত্যর্পণের জন্য ব্রিটেনের কাছে অনুরোধ জানায় ভারত। সেই অনুরোধের ভিত্তিতেই ১৮ এপ্রিল মাল্যকে লন্ডনে গ্রেফতার করে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। শর্তসাপেক্ষে জামিনও পেয়ে যান তিনি। কিন্তু এ বার মাল্যকে প্রত্যর্পণ করা হবে কি না, তা নিয়ে লন্ডনের আদালতে শুনানি শুরু হবে। পরবর্তী শুনানি ১৭ মে। ইডি বা সিবিআই সরাসরি মামলার সঙ্গে যুক্ত নয়। তারা শুধুমাত্র ব্রিটিশ প্রশাসনকে মাল্যর বিরুদ্ধে সব রকম নথি দিয়ে সাহায্য করতে পারে। তার জন্যই সিবিআই-ইডির দলটিকে লন্ডনে পাঠানো হয়েছে।
সরকারি সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহে ভারতে আসছেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রসচিব অ্যাম্বার রুড। স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব মহর্ষির সঙ্গে তাঁর বৈঠকেও মাল্যর প্রত্যর্পণের বিষয়ে আলোচনা হবে। মাল্য ব্রিটেনে অনির্দিষ্ট কাল থাকার জন্যও আর্জি জানাতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে সরকারি মহলে। তাঁকে সেই অনুমতি না দেওয়ার জন্যও ব্রিটেনের কাছে অনুরোধ জানানো হবে।