ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরের নির্মাণকাজে গতি আসছে না। বড়াইল অভয়ারণ্য নিয়ে জটিলতা কাটেনি। রাস্তার অন্য অংশের কাজেও সমস্যা রয়েছে। হারাঙ্গাজাও-জাটিঙ্গার মধ্যে ঠিকাদার বদলেও সমাধান মিলছে না। মরসুমের প্রথম বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ায় আশঙ্কায় ভুগছেন সাধারণ মানুষ।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দিল্লির বিভাগীয় কর্তারা সড়কের নির্মাণকাজ দেখে গিয়েছেন। রাস্তা আরও একটু চওড়া করা হবে। সে জন্য মাটির গুণগত মান পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। বিভাগীয় সূত্রে খবর, শিলচর থেকে বালাছড়া পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। অভয়ারণ্যের জন্য বালাছড়া থেকে হারাঙ্গাজাও পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটার অংশে কাজ শুরু করা যায়নি। রাজ্য বন্যপ্রাণ কমিটি করিডর নির্মাণে অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু চেয়ারম্যান হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের স্বাক্ষরের জন্য এ সংক্রান্ত ফাইল আটকে ছিল। গত মাসে কেন্দ্রীয় বন্য প্রাণ কমিটির সভায় তা-ই এ বিষয়ে আলোচনা করা যায়নি। কয়েক দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী ওই ফাইলে সই করেছেন। কিন্তু এখন জাতীয় স্তরের কমিটির পরবর্তী বৈঠক পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।
এর পরের অংশটি হারাঙ্গাজাও-জাটিঙ্গা ২৫ কিলোমিটার ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তা। বিভাগীয় খাতাপত্রে যা ‘এস-২১’ হিসেবে চিহ্নিত। ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর একটি বেসরকারি সংস্থাকে ওই অংশে সড়ক নির্মাণের বরাত দেওয়া হয়েছিল। কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল। নির্ধারিত সময়ের ১১ মাস পর দেখা যায়, মাত্র চার কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। তার জেরে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ওই সংস্থাকে সরিয়ে দেয়। সে জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয় অন্য একটি সংস্থাকে। তার পরও কাজের অগ্রগতি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। গুণমান নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, প্রথম বৃষ্টিতেই রেখো পাহাড়ে নতুন তৈরি রাস্তা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এমন ফাটল দেখা দেয় যে মানুষ হেঁটে যাতায়াতের ঝুঁকিও নিতে চাইছিলেন না। এক সপ্তাহ ধরে হাফলং-শিলচর যান চলাচল বন্ধ ছিল। গত কাল মেরামতির পর ফের যানচলাচল শুরু হয়। কিন্তু সড়কের ওই অংশটিকে ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও ৬ কিলোমিটার ৫৪০ মিটার দীর্ঘ রাস্তার জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ বাকি রয়েছে। জেলা প্রশাসনকে এ নিয়ে নিয়মিত চিঠি পাঠানো হচ্ছে। ক্ষতিপূরণ নিয়েও জমি মালিকরা সরতে নারাজ। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ অবশ্য এগুলিকে বড় ঝামেলা বলে মানতে নারাজ। তাঁরা জানান, রেখো পাহাড়ে যে অংশে রাস্তা নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে সেখানকার মাটির নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। গুণমান তুলনা করে নতুন জায়গা দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হবে। তবে এটা সময়সাপেক্ষ বলে মেনেছেন তাঁরা। কারণ নতুন জায়গা চিহ্নিত হওয়ার পর অধিগ্রহণ, প্রকল্পের প্রস্তাব তৈরি, অনুমোদন, মঞ্জুরি, দরপত্র আহ্বান, কাজ বণ্টন করতে হবে। তার পরই শুরু হবে রাস্তার নির্মাণকাজ।
কিন্তু বৃষ্টির মরসুম শুরু হয়ে গিয়েছে, এখন কি নতুন রাস্তা তৈরির কাজ করা সম্ভব? সদুত্তর মেলেনি। গত বছরও বৃষ্টির জন্য সমস্যা হয়েছিল। রেখো, বড়মলকই এলাকায় ঘন ঘন ধস নেমেছিল।
জাটিঙ্গা থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত অন্য জায়গাতেও সমস্যা রয়েছে। তবে, ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর নিয়ে কথা উঠলেই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ অভয়ারণ্যে রাস্তা তৈরির অনুমোদনের প্রসঙ্গ তোলেন।
দু’সপ্তাহ আগে বিজেপির এক প্রতিনিধিদল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন শিলচরের সাংসদ সুস্মিতা দেবও। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, অভয়ারণ্যে করিডর নির্মাণের ছাড়পত্র পাওয়ার পর সড়ক নির্মাণে দেরি হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy