রক্তপাত: বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্যে আহত যুবক। রবিবার কাশ্মীরের চারার-ই-শরিফে।
ভোটের দিনে রক্তাক্ত হল ভূস্বর্গ। বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে ৮ বিক্ষোভকারী। গত ৩০ বছরে কখনও ৭.১৪ শতাংশ ভোটের হার দেখেনি ভূস্বর্গ। গত বছরের অশান্তির পরে এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাজ্য ও কেন্দ্রের কর্তাদের। দিল্লির অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে ৮ জনের মৃত্যুর কড়া নিন্দা করেছে পাকিস্তান।
পাক বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, এই ভোট ‘ভাঁওতা’ ছাড়া কিছু নয়। ভারতের ‘রাষ্ট্রীয়’ সন্ত্রাসের সামনে দাঁড়িয়েও কাশ্মীরের মানুষ এবং হুরিয়ত নেতৃত্ব দিল্লিকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাব মানতে ভারতকে চাপ দেওয়ার জন্যও বিশ্বের কাছে আর্জি জানিয়েছে ইসলামাবাদ।
বরাবরের মতোই ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিল বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। কিন্তু ভোট আটকাতে এমন মরিয়া চেষ্টায় বহু দিন নামেনি কাশ্মীরের যুবকদের একাংশ। বাদগাম জেলার চারার-ই-শরিফে একটি পোলিং বুথে পেট্রোল বোমা ছুড়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। বেশ কয়েক বার শূন্যে গুলি ছুড়েও তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি বাহিনী। ফলে বাধ্য হয়ে গুলি চালান জওয়ানরা। তাতে নিহত হয় ২০ বছরের মহম্মদ আব্বাস ও ১৫ বছরের ফয়জান আহমেদ রাঠের। রতসুনা বীরওয়াহায় জনতার সঙ্গে বাহিনীর সংঘর্ষের সময়ে গুলিতে নিহত হয় নিসার আহমেদ নামে এক যুবক। বীরওয়াহা, চাদুরা, মাগামে নিহত হয়েছে আরও পাঁচ জন। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের নাম সাবির আহমেদ, আদিল ফারুক, জান মহম্মদ, আমির, ওমর গনি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, পোলিং বুথ পাহারার কাজে মোতায়েন বিএসএফ জওয়ানদের কাছে ছররা বন্দুক ছিল না। ফলে তাঁরা অনেক ক্ষেত্রে গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ডাকা হয়েছে সেনাকেও।
পিতাপুত্র: বুথের বাইরে ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেসের জোট প্রার্থী ফারুক আব্দুল্লা। সঙ্গে ছেলে ওমর। রবিবার শ্রীনগরে।ছবি: পিটিআই
গান্ধেরবাল শহরে থানার কাছেই হিজবুল কম্যান্ডার জাকির মুসার ছবি দেখা যাওয়ায় প্রশাসনের সবচেয়ে বেশি মুখ পুড়েছে বলে মেনে নিচ্ছেন কর্তারা। গান্ধেরবাল-সহ সর্বত্রই বুথের বাইরে বসে মানুষকে ভোট দিতে নিষেধ করেছে বিক্ষোভকারীরা। চেনার এলাকায় ভোট দিতে যাচ্ছিলেন মহম্মদ রমজান রাঠের, তাঁর স্ত্রী ও অন্য কয়েক জন গ্রামবাসী। তাঁদের মারধর করে এক দল বিক্ষোভকারী। রমজানকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। বীরওয়াহার কোলহামা গ্রামে পোলিং বুথে তালা দিয়ে দেয় জনতার একাংশ। কানিহাম্মা এলাকায় বুথে বিক্ষোভকারীদের হামলার পরে নদীর জলে পাওয়া গিয়েছে ইভিএম।
শান্তিতে ভোট না হওয়ায় মেহবুবা মুফতি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন শ্রীনগর কেন্দ্রে ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেসের যৌথ প্রার্থী ফারুক আব্দুল্লা ও তাঁর ছেলে ওমর। ওমরের দাবি, ‘‘মানুষ ভোট দিতে চান। কিন্তু অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি রাজ্য সরকার।’’ এক ধাপ এগিয়ে ফারুকের বক্তব্য, ‘‘পিডিপি সরকারই চেষ্টা করছে যাতে ভোট কম পড়ে।’’
বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর প্রতিবাদে আবার দু’দিনের হরতালের ডাক দিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত। তাদের বক্তব্য, ‘‘শাসক দল নৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy