২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফের ট্রেনের ধাক্কায় হাতি-মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। হোজাইয়ের পরে এ বার গোয়ালপাড়ায়। পুলিশ জানায়, আজ ভোরে রংজুলি এলাকায় আমজঙা স্টেশনের কাছে লাইনের পাশে হাতিটিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। অন্য একটি প্রাপ্তবয়স্ক জখম হাতি লাইনের পাশের জঙ্গলে ছটফট করছে। তার চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটি থেকে চিকিৎকদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাত আড়াইটে নাগাদ কোনও ট্রেন হাতি দু’টিকে ধাক্কা মেরে চলে যায়।
উল্লেখ্য, রবিবার রাতে নগাঁও জেলার হোজাইয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তিনটি হাতির মৃত্যু হয়। যার মধ্যে দু’টি হাতি গর্ভবতী ছিল। অবশ্য উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখপাত্র প্রণবজ্যোতি শর্মা জানান, এ দিন ভোরে রেলকর্মীরাই হাতিটিকে মৃত অবস্থায় লাইনের পাশে পড়ে থাকতে দেখে বন দফতরকে খবর দেন। তার মাথা ও কান থেকে রক্ত পড়ছিল। কিন্তু ওই পথ দিয়ে যাওয়া কোনও যাত্রিবাহী বা মালবাহী ট্রেনের চালক হাতির সঙ্গে ধাক্কার খবর দেননি। হোজাইয়ের যুগিজানের মতো এ দিনের ঘটনাস্থলও নথিভুক্ত হাতি চলাচলের রাস্তা নয় বলে তাঁর দাবি।
শীত পড়তেই কুয়াশা ঢাকা রেল লাইনে হাতিৃমৃত্যু বন দফতর ও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলকে ভাবিয়ে তুলেছে। ধান কাটার সময় শুধুই চিহ্নিত হাতি-করিডর নয়, ধান খেতের আশপাশে যে কোনও এলাকায় হাতি রেললাইন পারাপার করছে। অ্যাডিশনাল কনজার্ভেটর অব্ ফরেস্ট আতিকুর রহমান জানান, চিহ্নিত করিডর না হলেও রেলকে অনুরোধ করা হয়েছে, হাতি বেরিয়েছে খবর পেলেই সেই অঞ্চলে ট্রেনের গতি কম রাখতে হবে। কিন্তু তা মানা হচ্ছে না। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার লামডিঙে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের সঙ্গে পুলিশ, জেলাপ্রশাসন ও বন দফতরের একটি বৈঠক হবে। গোলাঘাটের বগরিজেঙ এলাকায় গত এক মাস ধরে আতঙ্ক ছড়ানো চিতাবাঘটিকে গত রাতে খাঁচাবন্দি করা হয়েছে। এলাকার অনেক গবাদি পশু মেরেছিল চিতাবাঘটি। এই নিয়ে গত কয়েক মাসে তিনটি চিতাবাঘ গোলাঘাটে খাঁচাবন্দি হল। জনবসতিতে ঢুকে পড়া ও চোরাশিকারের জেরে চলতি বছরে ৪০টি হাতি, ২২টি চিতাবাঘ, চারটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ও ২৩টি গন্ডারের প্রাণ গিয়েছে। হাতি ও বাঘের আক্রমণে মারা গিয়েছেন ৪৬ জন। জখমের সংখ্যা ৭১। পশুপ্রেমী সংগঠনগুলির মতে দীপর বিল, বাক্সা, রঙিয়া, গোয়ালপাড়া, লামডিঙ, হোজাই, ধনসিরি, নামবর, মরিয়নি, ঢেকিয়াজুলির মতো এলাকায় রেললাইনগুলি হাতিদের মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বড়োভূমি, নগাঁও, যোরহাট, শোণিতপুর, গোলাঘাটে কৃষকরা হাতির আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচাতে বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন। একই অবস্থা চা ও রবার বাগনগুলিতেও। বিশেষ করে চা বাগানে বরাবরই হাতি ও চিতাবাঘের আক্রমণ বেশি হয়। বন দফতরের মতে, সব ধান খেত ও চা বাগান কম বিদ্যুৎ পরিবাহী তারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা সম্ভব নয়। অনেক জমিতে কৃষকরা উচ্চ বিদ্যুৎবাহী তার ঝুলিয়ে রাখছেন। তড়িদাহত হয়েও হাতি মারা যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy