১৯৬২ সালে উত্তরপ্রদেশের আগরায় জন্ম প্রদীপ শর্মার। বাবা ছিলেন ইংরেজির অধ্যাপক। মহারাষ্ট্রের ধুলে-র একটি কলেজে কর্মরত ছিলেন তিনি। সেই সূত্রে ছোটবেলায় মহারাষ্ট্রে চলে আসেন প্রদীপ। সেখানেই পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠা তাঁর। তবে বিজ্ঞান শাখায় স্নাতকোত্তর করলেও, বাবার দেখানো পথে না গিয়ে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন তিনি।
১৯৯৫ সালে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইনস্পেক্টর পদে নিযুক্ত হওয়ার পর বান্দ্রা পুলিশের অপরাধ দমন শাখার মাদক-বিরোধী সেলের দায়িত্ব হাতে পান প্রদীপ শর্মা। সেই সময় আর এক দোর্দণ্ডপ্রতাপ পুলিশ অফিসার দয়া নায়েকের সংস্পর্শে আসেন তিনি। তাঁরা দু’জনে মিলে ভাঙাচোরা জিনিসপত্রের বড় ব্যবসায়ী মহম্মদ নবিকে অপহরণ করে মোটা টাকা আদায় করেন বলে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এর পর একে একে বিনোদ মাটকর, পারভেজ সিদ্দিকি, রফিক ডাব্বাওয়ালার এনকাউন্টার করেন প্রদীপ শর্মা। সেই সুবাদে তাঁর নামের পাশে এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট তকমা জুড়ে যায়। পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার তিন সন্দেহভাজন জঙ্গিরও এনকাউন্টার করেন তিনি। তোলাবাজির দায়ে দাউদ ইব্রাহিমের ভাই ইকবাল কাসকরকে গ্রেফতারও করেন প্রদীপ।
সেই সময় থেকেই একের পর এক বিতর্কে নাম জড়াতে থাকে প্রদীপ শর্মার। ২০০২ সালের ঘাটকোপার বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে নেমে দুবাইয়ে কর্মরত ২৭ বছরের খোয়াজা ইউনুস নামের এক ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ। তাদের হেফাজতে থাকাকালীন ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশি অত্যাচারেই খোয়াজার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তার জেরে প্রদীপ শর্মা-সহ আরও পাঁচ পুলিশকর্মীকে বদলি করা হয়। ২০০৭ সালে যদিও সেই অভিযোগ খারিজ করে সিআইডি।
লখন ভাইয়া ভুয়ো এনকাউন্টার কাণ্ডে ২০১০ সালে প্রদীপ শর্মাকে গ্রেফতার করে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। বলা হয়, এক প্রমোটারের নির্দেশে লখনকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে লখনকে গুলি করে মারা হয়। সেই মামলায় মোট ২২ জন পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে থেকে শুধুমাত্র প্রদীপ শর্মাই ২০১৩-র জুলাই মাসে মুক্তি পেয়ে যান।
পুলিশের চাকরিতে ৩৫ বছর কাটিয়ে ২০১৯-এর জুলাই মাসে পদত্যাগ করেন প্রদীপ শর্মা। গত বছর ১৩ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে শিবসেনায় যোগ দেন তিনি। সেনার হয়ে মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনেও দাঁড়ান। কিন্তু বহুজন বিকাশ আঘাডির ক্ষিতিজ ঠাকুরের কাছে পরাজিত হন। নির্বাচনে লখন ভাইয়ার ভাই রামপ্রসাদ গুপ্ত তাঁর বিরুদ্ধে প্রচারে নামেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy