অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া রশ্মি সামন্তের মন্তব্য ঘিরে বিতর্কে মুখ খুললেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। ছবি: সংগৃহীত।
বর্ণবৈষম্যের মতো বিষয় থেকে ভারত কখনই নজর ঘুরিয়ে রাখতে পারে না। প্রয়োজন পড়লে এ বিষয় ব্রিটেনের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করা হবে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া রশ্মি সামন্তের ‘বর্ণবৈষম্যমূলক ও অসংবেদনশীল’ মন্তব্য ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সে প্রসঙ্গে সোমবার রাজ্যসভায় এ মন্তব্য করেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
অক্সফোর্ডের ছাত্র সংসদের সভাপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার পরই রশ্মির বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। যার জেরে সভাপতি হওয়ার ৫ দিনের মধ্যে ইস্তফা দেন রশ্মি। সে প্রসঙ্গ তুলে সোমবার রাজ্যসভার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ওড়িশার বিজেপি সাংসদ অশ্বিনী বৈষ্ণব। কর্নাটকের বাসিন্দা রশ্মির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “বর্ণবৈষম্য নিয়ে বিশ্ব জুড়েই উদ্বেগ রয়েছে। তবে মনে হয়, ঔপনিবেশিক কালের মনোভাব ও সংস্কারের আবহ এখনও রয়েছে, বিশেষত ব্রিটেনে। রশ্মির নিজের জাতিগত বৈশিষ্ট্য নিয়ে যেখানে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করা উচিত, তার বদলে তাঁকে সেখানে নেটমাধ্যমে পীড়নের মুখে পড়তে হয়েছে। তাতে তিনি ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন। এমনকি, তাঁর মা-বাবার হিন্দু ধর্মীয় বিশ্বাসেও প্রকাশ্যে আঘাত হানা হয়েছে। তা সত্ত্বেও সে বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। অক্সফোর্ডের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের আচরণ হলে বিশ্বের কাছে কোন বার্তা পৌঁছবে?”
১১ ফেব্রুয়ারি প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসাবে অক্সফোর্ডের ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হন ২২ বছরের রশ্মি। তবে নির্বাচনের পরই নেটমাধ্যমে তাঁর কতগুলি পুরনো পোস্ট ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধে। মালয়েশিয়ায় সফরের একটি ছবির নীচের রশ্মির লেখা ক্যাপশন ‘চিংচ্যাং’ শব্দে আপত্তি তোলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিনা পড়ুয়ারা। অন্য একটি পোস্টে মহিলা এবং রূপান্তরকামী মহিলাদের মধ্যে পার্থক্য করা নিয়ে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারা ক্ষুব্ধ হন। রশ্মির মন্তব্যকে বর্ণবৈষম্যমূলক এবং অসংবেদনশীল বলে তাঁর ইস্তফার দাবিতে সরব হন তাঁরা। শেষমেশ ইস্তফা দিয়ে দেশে ফিরে আসেন রশ্মি।
গোটা বিষয়ে ভারত যে পরিস্থিতির উপর নজর রাখবে, সে আশ্বাস দিয়েছেন জয়শঙ্কর। পাশাপাশি, তিনি বলেন, “মহাত্মা গাঁধীর দেশ হয়ে বর্ণবৈষম্যের মতো বিষয় থেকে নজর ঘুরিয়ে থাকতে পারে না ভারত। বিশেষ করে যে দেশে এত বিভিন্ন জাতির মানুষের বসবাস।” একই সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে ব্রিটেনের সঙ্গে আলোচনার পথ খোলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। তাঁর কথায়, “ব্রিটেনের সঙ্গে আমাদের মজবুত সম্পর্ক রয়েছে। প্রয়োজনে এ বিষয়টি নিয়ে ব্রিটেনের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করা হবে। কারণ বর্ণবৈষম্যই হোক বা অন্য কোনও অসহিষ্ণুুতা, আমরা সর্বদাই তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy