ফুলে ঢোল ডান চোখ। হালকা গোঁফ-দাড়ি, ফেজ টুপিধারী সদ্য তরুণের ছবিটা অনেকেরই চোখে লেগে। এক মাস আগে ক্যানিং-শিয়ালদহ লোকালের বিভীষিকা থেকে এখনও বেরোতে পারেননি তিনি।
অভিযোগ, ‘জয় শ্রী রাম’ বলানোর চেষ্টায় ট্রেনে মারধরের পরে পার্ক সার্কাস স্টেশনে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয় হাফিজ় মহম্মদ শাহরুফ হালদারকে। হুগলির হিয়াতপুরের মাদ্রাসা শিক্ষক বলছিলেন, ‘‘এখনও ট্রেনে ওঠার সাহস পাই না। ক্লাস নিতে যাওয়াই বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ খাস কলকাতায় এই হামলার পিছনে একটি হিন্দু-নামধারী সংগঠনের কর্মীদের নাম জড়িয়েছে। ‘জয় শ্রীরাম’ আদতে প্রহারের মন্ত্র হয়ে উঠেছেবলে হিন্দুত্ববাদীদের বিরাগভাজন হয়েছেন অমর্ত্য সেন। বাস্তবিক, এ রাজ্যেও ফেরিওয়ালা থেকে মাদ্রাসামুখো বালক পড়ুয়া, তাঁদের চেহারা-পোশাকের জন্য দলে ভারী দুর্বৃত্তদের নিশানা হচ্ছেন এমন অভিযোগ ভূরি ভূরি।
দু’সপ্তাহ আগে সাগরদিঘিতে নিগৃহীত মাদ্রাসা ছাত্রের বাবা হাসানুজ্জামানও বলছিলেন, ‘‘আমার ছেলেটার তো দাড়িও ওঠেনি। পরনের পাঞ্জাবি দেখেই মাদ্রাসা ছাত্র বুঝে নিয়ে ওকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলাতে
চায় কয়েক জন মোটরবাইক সওয়ারি।’’ অভিযুক্তেরা দল বেঁধে তারকেশ্বরে যাচ্ছিল বলে পুলিশের দাবি। এখনও তেতে থাকা কাঁকিনাড়া চটকলের দর্মা লাইনের অনেক বাড়ির ভাঙাচোরা দরজা-জানলায় বড় বড় হরফে লেখা ‘জয় শ্রীরাম’। সংখ্যালঘুদের বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট চালানোর পরে তা লেখা হয়েছে বলে অভিযোগ।