Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
নালিশের বন্যায় জেরবার

প্রভুকে রেহাই দিতে টুইটারে নয়া অ্যাকাউন্ট

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কানেক্ট পিপ্‌ল।’ আম-আদমির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াও। সংসদীয় এলাকায় রাত্রিবাস কর, শহরে-ব্লকে এমনকী গ্রামে গিয়ে কথা বল। মানুষের অভিযোগ শোন। তা সমাধানের ব্যবস্থা কর।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ১০:১৯
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কানেক্ট পিপ্‌ল।’ আম-আদমির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াও। সংসদীয় এলাকায় রাত্রিবাস কর, শহরে-ব্লকে এমনকী গ্রামে গিয়ে কথা বল। মানুষের অভিযোগ শোন। তা সমাধানের ব্যবস্থা কর। প্রয়োজনে সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য নাও।

আর তা করতে গিয়েই নাজেহাল হওয়ার জোগাড় হয়েছিল রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের মতো তাঁর কাছে ফ্রিজ সারিয়ে দেওয়ার আবেদন হয়তো কেউ করেননি, কিন্তু কামরায় জল নেই, আলো নেই, কিংবা ট্রেন সময়ে চলে না-- এই ধরনের অভিযোগ নিয়মিত আসছিল সুরেশ প্রভুর টুইটার অ্যাকাউন্টে। প্রভুর দরবারে আবেদন আসে কোলের শিশুর জন্য দুধ জোগাড় করে দেওয়ারও। মাঝরাতে উঠে বোর্ড অফিসারদের ফোন করে যাত্রী দম্পতির বাচ্চার জন্য পরবর্তী স্টেশনে দুধের ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন সুরেশ প্রভু।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মধ্যে টুইটারের মাধ্যমে জন-অভিযোগ নেওয়ার প্রশ্নে সুরেশ প্রভু পথিকৃৎ হলেও, যে ভাবে রেলমন্ত্রীর অ্যাকাউন্টে যাত্রীদের অভিযোগ জমা হতে শুরু করে তাতে প্রমাদ গোনে রেল মন্ত্রক। মন্ত্রকের এক অফিসারের কথায়, ‘‘রেলে প্রতিদিন দু’কোটি লোক যাতায়াত করেন। তার মধ্যে অর্ধেকের কাছাকাছি সংরক্ষিত কামরার। তাঁদের জল, সাফাই, নিরাপত্তা, খাবারের মান, ট্রেনের দেরিতে চলা-নানা ধরনের অভিযোগ থাকেই। এ ক্ষেত্রে রেলমন্ত্রী অভিযোগ জানানোর জানলা খুলে দিতেই সেখানে অভিযোগ আছড়ে পড়ে।’’

অভিযোগের এই খতিয়ান সামলাতে গিয়ে এক সময়ে কার্যত নাভিশ্বাস ওঠে রেলমন্ত্রীর। ঠিক হয় যাত্রী অভিযোগ সামলাতে রেলে চালু করা হবে একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট। যেখানে নিজেদের অভিযোগ ছাড়াও রেলের উন্নতিতে পরামর্শ দিতে পারবেন আম-জনতা। লক্ষ্য একটাই, বন্যার মতো নালিশের হাত থেকে সুরেশ প্রভুকে রেহাই দেওয়া। আর অ্যাকাউন্ট খুলতেই রেলের টুইটারে সদস্য হন ৯ লক্ষ মানুষ। আর তাদের কাছ থেকে গড়ে ফি দিন সাত হাজার টুইট জমা পড়ছে। এ যাবৎ যার একটি বড় অংশ জমা পড়ছিল প্রভুর কাছে। মন্ত্রক বলছে, কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রভু তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেন। সে কথা ফলাও করে প্রকাশ হয় সংবাদ মাধ্যমে। তাতে যাত্রীরা মনে করতে থাকেন, প্রভুর দরবারে গেলে উপায় ঠিক বার হবে। ফলে সব মিলিয়ে যাত্রীদের নালিশ সামলাতে কিছুটা নাজেহাল হতে হচ্ছিল রেলমন্ত্রীকে। তা রুখতেই সোশ্যাল মিডিয়ার দ্বারস্থ হল রেলমন্ত্রক।

টুইটারের পাশাপাশি ‘ভারতীয় রেল’ নামে একটি ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলেছে রেল মন্ত্রক। মন্ত্রক জানিয়েছে, ফেসবুকে প্রায় ৯ লক্ষ মানুষ এই অ্যাকাউন্টটি ফলো করছেন। মন্ত্রকের আশ্বাস, কোন ব্যক্তি ফেসবুকে বা টুইটারে অভিযোগ জানালেই তা সংশ্লিষ্ট ডিআরএমের সোশ্যাল মিডিয়া সেলের কাছে চলে যাবে। এর পর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ডিআরএম দফতর কী পদক্ষেপ করেছে তা-ও দ্রুত জানানো হবে অভিযোগকারীকে। প্রত্যেকটি অভিযোগের ঠিক সময়ে সুরাহা হচ্ছে কি না তা নজরে রাখবে রেলওয়ে বোর্ডের সোশ্যাল মিডিয়া সেল। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে সংশ্লিষ্ট অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian rail Twitter Suresh Prabhu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE