প্রতীকী চিত্র।
রক্ষকের ছদ্মবেশে ঢুকেছিল বাড়িতে। উদ্দেশ্যটা ছিল অন্য। পুলিশ সেজে বাড়িতে ঢুকে বন্দুক দেখিয়ে তিন জন মহিলাকে গণধর্ষণ করার অভিযোগ উঠল গ্রেটার নয়ডার রাবুপুরা এলাকায়।
মঙ্গলবার মাঝরাতের ঘটনা। তখন একটা বেজে গিয়েছে। হঠাৎ দরজায় ধাক্কা শুনে চমকে ওঠেন বাড়ির বাসিন্দারা। দরজা খুলতেই আরও চমক। জনা ছয়েক ‘পুলিশ’ দাঁড়িয়ে। ওই বাড়িরই এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘ওরা নিজেদের পুলিশ বলেই পরিচয় দিল। বলল, বাড়িতে বেআইনি মদ কিছু আছে কি না, তল্লাশি করতে এসেছে।’’ তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে বাড়ির বাইরে চলে এসেছিলেন সেই ভদ্রলোক। তখনই তাঁকে মারধর করে বেঁধে রাখে সেই ‘পুলিশরা’। তার পর বাড়িতে ঢুকে বার করে নিয়ে আসে তাঁর স্ত্রীকে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঠিক একই কায়দায় আশপাশের বাড়ি থেকে আরও জনা তিনেক মহিলাকে বার করে আনে দুষ্কৃতীরা। তাঁদের স্বামীদেরও বেঁধে রাখে দুষ্কৃতীরা। তার পর ধর্ষণ করে তিন জন মহিলাকে।
এক জন মহিলা অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাঁকেও বাড়ির বাইরে নিয়ে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। তিনি বারবার অনুরোধ করতে থাকেন, ‘‘আমি অন্তঃসত্ত্বা। আমাকে ছেড়ে দাও। তোমাদের যা চাই, বাড়ি থেকে তোমরা নিয়ে যাও। কিন্তু আমার কোনও ক্ষতি করো না।’’ শেষমেশ তাঁকে ছেড়ে দিলেও রক্ষা পাননি অন্য তিন মহিলা। আপাতত নয়ডার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁদের।
দুষ্কৃতীরা বাড়ি বাড়ি ঢুকে বেশ কিছু জিনিসপত্র চুরিও করেছে বলে অভিযোগ। কোনও বাড়ি থেকে চুরি গিয়েছে কয়েক হাজার টাকা, কোথাও থেকে রুপোর গয়না, একটি বাড়ি থেকে আবার ছ’টি মুরগি। আক্রান্তরা বেশির ভাগই স্থানীয় একটি ইটভাটায় কাজ করেন। সেই ইটভাটার মালিক ভুপেশ ভাটি জানিয়েছেন, ভোর তিনটে নাগাদ আক্রান্তদের পরিবারের এক জন তাঁকে ফোন করেন। তাঁর কথায়, ‘‘যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, তার একটু দূরেই সে দিন সন্ধেবেলায় ইটভাটার আর এক কর্মীর বাড়িতেও ডাকাতি হয়।’’ এলাকার অনেকেরই দাবি, দু’টি ঘটনার পিছনে রয়েছে একই দল। দু’টি ঘটনা একই দলের কীর্তি হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান পুলিশেরও। দুষ্কৃতীদের মূল উদ্দেশ্য ধর্ষণ না হয়ে লুঠপাটও হতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। স্থানীয়দের ক্ষোভ, ‘‘পুলিশ ঠিক সময় ব্যবস্থা নিলে এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটত না।’’ প্রতিবাদে রাবুরুরা থানা ঘেরাও করেন স্থানীয়রা। ৫ তারিখের মধ্যে দুষ্কৃতীদের ধরতে না পারলে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা। তবে নয়ডা পুলিশের সুপার বলছেন, বিশেষ তদন্তকারী দল গঠিত হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি দুষ্কৃতীরা ধরা পড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy