Advertisement
০৪ মে ২০২৪

ব্রাত্য করা হচ্ছে গৌতমকে, অভিযোগ অনুগামীদের

করিমগঞ্জের সুখে-দুঃখে তিনি পাশে থাকতেন। অথচ সেই তাঁকেই কাল দুই ভাষা-সেনানীর মূর্তি স্থাপন অনুষ্ঠানে ব্রাত্য করে রাখার ঘটনার পিছনে জেলায় তাঁর অনুগামীরা রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন। কাল করিমগঞ্জের দুই প্রয়াত জননেতা রণেন দাস এবং রথীন সেনের শতবার্ষিকীতে শহরে তাঁদের আবক্ষ মূর্তির অাবরণ উন্মোচন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা তথা হাইলাকান্দির কাটলিছড়ার বিধায়ক গৌতম রায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বিতর্কের শুরু এখান থেকেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
করিমগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৫ ০৪:০৭
Share: Save:

করিমগঞ্জের সুখে-দুঃখে তিনি পাশে থাকতেন। অথচ সেই তাঁকেই কাল দুই ভাষা-সেনানীর মূর্তি স্থাপন অনুষ্ঠানে ব্রাত্য করে রাখার ঘটনার পিছনে জেলায় তাঁর অনুগামীরা রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন। কাল করিমগঞ্জের দুই প্রয়াত জননেতা রণেন দাস এবং রথীন সেনের শতবার্ষিকীতে শহরে তাঁদের আবক্ষ মূর্তির অাবরণ উন্মোচন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা তথা হাইলাকান্দির কাটলিছড়ার বিধায়ক গৌতম রায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বিতর্কের শুরু এখান থেকেই।

গৌতমবাবুর অনুগামীরা কালই সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, পৌরসভার নির্বাচনী ইস্তাহার, পোস্টার, ব্যানার থেকে আরম্ভ করে সরকারি প্রকল্পের ফলক, কোনও কিছুতে গৌতম রায়ের নাম না থাকলে যে করিমগঞ্জের কোনও অনুষ্ঠানই হত না, সেখানেই এত বড় একটি অনুষ্ঠানে গৌতমবাবুকে বাদ দেওয়া হল কেন? সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রাজশেখর দত্ত, রাজ রায়, রতন ঘোষ, বিশ্বজিত্ ঘোষ, প্রণব ভৌমিক, বিলালউদ্দিন, কবীর আহমদ প্রমুখ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে: রণেন্দ্রমোহন দাস ও রথীন্দ্রনাথ সেনের আবক্ষ মূর্তি করিমগঞ্জে বসানো হল। কিন্তু আয়োজকরা গৌতম রায়কে নিমন্ত্রণ করলেন না। অথচ গৌতমবাবু করিমগঞ্জের সুখ-দুঃখে পাশে থেকেছেন। করিমগঞ্জে সরকারি হাসপাতাল তৈরির সময় যখন কর্মীরা বিরুদ্ধাচরণ করছিলেন তখন তিনি নিজের পকেটের টাকা দিয়ে হাসপাতাল-কর্মীদের অন্যত্র থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। করিমগঞ্জে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় স্থাপনের সময় যখন সমস্যার সৃষ্টি হয়, তখনও তিনি অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে জট কাটিয়েছিলেন। এ ছাড়া করিমগঞ্জের অসংখ্য রোগীর চিকিত্সার ব্যয়ভার গ্রহণ করেন গৌতম রায়। অথচ করিমগঞ্জ শহরে দুই জননেতার আবক্ষ মূর্তি উন্মোচনের অনুষ্ঠানে তাঁকেই আমন্ত্রণ জানানো হল না! ক্ষুব্ধ গৌতম সমর্থকরা এর পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ করেছেন। গৌতম-অনুগামীদের কারও কারও অভিযোগের আঙুল উত্তর করিমগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থর দিকেই। তাঁদের বক্তব্য, কমলাক্ষবাবুই কলকাঠি নেড়ে গৌতমবাবুকে এই অনুষ্ঠানের বাইরে রেখেছেন। আগামী দিনে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতে সব পক্ষকে সতর্কও করেছেন গৌতমবাবুর অনুগামীরা। করিমগঞ্জের প্রায় সব অনুষ্ঠানে গৌতম রায়কে আমন্ত্রণ জানানোর ব্যবস্থা করতেন উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থই। এমনকী পুর নির্বাচনে করিমগঞ্জ কংগ্রেস যে ইস্তাহার প্রকাশ করেছিল, সেখানে জেলার চার কংগ্রেস বিধায়কের ছবি না থাকলেও গৌতমবাবুর ছবি কিন্তু ছিল। শহরে অসংখ্য ফলক রয়েছে, যেখানে তাঁর নাম লেখা রয়েছে। গৌতমবাবু কোনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি, অথচ ফলক বা ভিত্তিপ্রস্তরে তাঁর নাম রয়েছে এমন উদাহরণও ভুরিভুরি। কিন্তু করিমগঞ্জে মঙ্গলবারই সম্ভবত প্রথম এত বড় অনুষ্ঠানে ব্রাত্য করে রাখা হল গৌতমবাবুকে। এই ঘটনা আসলে কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দলের ফল বলে মনে করছেন শহরের ওয়াকিবহাল মহল। অভিযোগ, উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষবাবুর সঙ্গে গৌতমবাবুর সম্পর্ক আর আগের মতো নয়। সেই কারণেই করিমগঞ্জে গৌতমবাবুর প্রভাব-প্রতিপত্তি খর্ব করার চেষ্টা হচ্ছে। করিমগঞ্জ কংগ্রেসেরই একটি অংশ, করিমগঞ্জ জেলায় হাইলাকান্দি জেলার কাটলিছড়ার বিধায়কের নাক গলানো পছন্দ করছেন না। তবে বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ বিষয়টিকে অস্বীকার করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Goutam Roy karimganj Ronen das Rothin sen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE