কর্মসংস্থান থেকে আর্থিক বৃদ্ধি— তাঁর সরকারের কাজ নিয়ে বিরোধীদের যাবতীয় প্রশ্ন উড়িয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁর দাবি, যুবকদের চাকরি পাওয়া থেকে দেশের অর্থনীতি— সঠিক দিশাতেই এগোচ্ছে তাঁর সরকার। কৃষি ক্ষেত্রে বিমার লাভ পাচ্ছেন কৃষকেরা। বাড়ছে আয়। জিএসটি বা নোট বাতিলের মতো সিদ্ধান্তে সাময়িক ধাক্কা খেলেও ভবিষ্যতে সংস্কারমুখী সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রশ্নে তিনি যে কোনও ভাবেই পিছোবেন না, তা-ও জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রিত্বের ৪৫ মাসে দু-একবার বাছাই করা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। ‘দিওয়ালি-হোলি মিলন’ জাতীয় অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন, ছবিও তুলেছেন। কিন্তু একবারও ‘মিট দ্য প্রেস’ জাতীয় অনুষ্ঠানে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখোমুখি হননি। তাঁর বিদেশ সফরেও সংবাদমাধ্যমের সিংহভাগ ব্রাত্যই থেকেছে। সেই মোদী হঠাৎ সাক্ষাৎকার দিতে শুরু করেছেন। আগামিকালও একটি টিভি চ্যানেলে তাঁর সাক্ষাৎকার সম্প্রচারিত হবে। এ নিয়ে কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘নামে সাক্ষাৎকার হলেও গোটাটাই আসলে মোদীর ‘মনোলগ’ বা স্বগতোক্তি! ঠিক যেমনটি রেডিও-য় বলেন!’’
বিরোধীদের বক্তব্য, পরিস্থিতি যে প্রতিকূল, সেটা টের পাচ্ছেন মোদী। নিজের রাজ্যেই স্বস্তিতে নেই তিনি। দলিত অসন্তোষ মাথাচাড়া দিচ্ছে সর্বত্র। অর্থনীতির হাল ভাল নয় মোটেই। মূল্যবৃদ্ধি বেড়েই চলেছে। আজও দাম বেড়েছে পেট্রোল-ডিজেলের। ভোটের আগে দেওয়া তাঁর একাধিক প্রতিশ্রুতি এখন ঠাট্টার বিষয়। এ দিনও কংগ্রেস বলেছে, ‘‘বিশ্বব্যাঙ্কের সহজে ব্যবসার তালিকায় ভারতের উঠে আসাও এখন প্রশ্নের মুখে। যা শোনা যাচ্ছে, ঠিকঠাক হিসেব অনুযায়ী ভারত এখন নাকি ১৪৭ নম্বরে!’’ বিরোধীদের বক্তব্য, এই প্রতিকূল অবস্থায় ফের নিজের সরকারের গুণগান করতেই এ ভাবে মুখ খুলেছেন মোদী।
আরও পড়ুন: গেরুয়া মারে ফায়দা দেখছেন বিজয়নেরা
মোদী সরকারের আমলে সবথেকে বড় আর্থিক সংস্কার নোট বাতিল ও জিএসটি হলেও সেগুলি তুলে ধরতে এ দিন মোটেই আগ্রহী ছিলেন না মোদী। বরং তাঁর যুক্তি, ‘‘মহিলাদের রান্না ঘরে গ্যাস পৌঁছে দেওয়া, সকলের জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা, ছাত্রীদের জন্য স্কুলে শৌচাগার করে দেওয়া— এগুলিও কম বড় সাফল্য নয়।’’
মোদী বুঝতে পারছেন, জিএসটি ও নোট বাতিলের ফলে হাঁসফাঁস অবস্থা দেশের অর্থনীতির। সম্ভবত সে কারণেই আজ সরকারের সাফল্যকে তুলে ধরতে সামাজিক সূচকগুলির উপরেই জোর দিয়েছেন। ডেরেকের কটাক্ষ, ‘‘নৌকা যে ডুবছে, তা বুঝতে পারছেন মোদী। তাই এ ভাবে মুখ খোলা। এই পর্ব ভবিষ্যতেও চলবে।’’
গুজরাত নির্বাচনের সময় থেকেই চাকরির খতিয়ান চেয়ে সরব রাহুল গাঁধী। এ দিন কর্মসংস্থান নিয়ে বিরোধীদের জবাব দিতে গিয়ে মোদীর যুক্তি, কোনও অফিসের বাইরে বসে কেউ পকোড়া ভেজে ২০০ টাকা রোজগার করলে সেটাকেও কর্মসংস্থানই বলা উচিত। প্রধানমন্ত্রীর আক্ষেপ, ‘‘একে রোজগার বলা হবে কি হবে না? আর এই তথ্য নিয়ে কেউ যদি রাজনীতি করতে চায়, তা হলে তার তা করার অধিকার রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy