উদ্বেগ আছে ঠিকই। কিন্তু মার্কিন ভিসা নীতিতে বদল নিয়ে এখনই খুব বেশি হইচই এড়াতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
বিজেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, ‘এইচ-১-বি’ ভিসায় রদবদল ঘটিয়ে আইন প্রণয়নের জন্য মার্কিন আইনসভা ‘হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ’-এ বিল আনা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এই বিল শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের অনুমোদন পেয়ে আইনে পরিণত হবে কিনা, সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এমনকী আইনে পরিণত হলেও এ ব্যাপারে ‘এগ্জিকিউটিভ অর্ডার’ পাশ হতে বেশ কয়েক মাস সময় লেগে যাবে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ আজ এ কথা জানিয়েছেন। তবে তারা যে এই নীতি বদলে উদ্বিগ্ন, তা ট্রাম্প প্রশাসনের ‘সর্বোচ্চ স্তরে’ ইতিমধ্যেই জানিয়েছে দিল্লি।
মোদী সরকারের তরফে এই অভয়বাণী দেওয়া হলেও পরিস্থিতি যে যথেষ্ট সঙ্কটজনক, তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। নতুন বিল (যার নাম হাই-স্কিল্ড ইনটিগ্রিটি অ্যান্ড ফেয়ারনেস অ্যাক্ট, ২০১৭) মোতাবেক ‘এইচ-১-বি’ ভিসা যাঁদের আছে, তাঁদের ন্যূনতম মাইনে দ্বিগুণ করতে হবে। ঘটনা হল, ওই পরিমাণ মাইনে দিয়ে ভারত থেকে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী আমেরিকায় নিয়ে যাওয়াটা ইনফোসিস, উইপ্রো, টিসিএসের মতো ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির পক্ষে রীতিমতো কঠিন হয়ে দাঁড়াল।
ক্যালিফোর্নিয়ার কংগ্রেস সদস্য জো লোফগ্রেন-এর আনা এই বিলটি মার্কিন আইনসভায় আসার পরেই টিসিএস, ইনফোসিস, উইপ্রো, টেক মাহিন্দ্রা-সহ সবক’টি ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার শেয়ারের দাম গড়ে ৯ শতাংশ পড়ে গিয়েছে। যার জেরে বাজারের লোকসান হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। টিসিএসের শেয়ার পড়েছে ৫.৬ শতাংশ, টেক মহিন্দ্রার ৯.৭ শতাংশ, ইনফোসিসের ৪.৬ শতাংশ, উইপ্রোর ৪.২৩ শতাংশ এবং এইচসিএল টেকের শেয়ার পড়েছে ৬.২৩ শতাংশ।
এই অবস্থায় ভারত এই বিষয়টিকে কেন অগ্রাধিকারের পর্যায়ে আনছে না, তা নিয়ে অদূর ভবিষ্যতেই সরকারকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সূত্রের খবর, মোদী সরকারের আশঙ্কা যে এখনই বিষয়টি নিয়ে প্রবল হৈ চৈ শুরু করলে পাকিস্তান-সহ ভারতের অন্যান্য রণকৌশলক্ষেত্রে মার্কিন সহায়তা লঘু হয়ে যেতে পারে। তাই এই নিয়ে এখনই আক্রমণাত্মক হচ্ছে না নয়াদিল্লি। আজ বিকাশ স্বরূপ বলেছেন, ‘‘অতীতেও এমন অনেক বিল আনা হয়েছে। কিন্তু সেগুলি শেষ পর্যন্ত আইনে পরিণত করতে পারেনি মার্কিন সরকার। আমরা যদি দেখি শেষ পর্যন্ত এটি আইন হওয়ার উপক্রম হয়েছে, তখন তা রুখতে কূটনৈতিক চাপ বাড়ানো হবে।’’ তখন
অনেক দেরি হয়ে যাবে কিনা, এই প্রশ্নের কোনও জবাব দেননি বিকাশ। তবে বলেছেন, ‘‘আমরা মার্কিন প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে জানিয়েছি, ভারতীয় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের সাহায্যে অনেক কম টাকায় কাজ করাতে পারে বলেই মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি অন্যান্য দেশগুলিকে টেক্কা দিতে পারে।’’ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে আলোচনায় এই ক্ষেত্রটি নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়ে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র
মোদী নিজেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy