Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪
Farmers’ Protest in Delhi

হাজার হাজার পুলিশ, ড্রোনে নজরদারি, কাঁটাতারের বেড়া! কৃষক অভিযান ঠেকাতে কী ভাবে তৈরি দিল্লি পুলিশ?

শম্ভু সীমানা থেকে এখনও ২০০ কিলোমিটার দূরে দিল্লি। হরিয়ানায় যখন কৃষকদের আটকাতে নিজেদের পুরো শক্তি কাজে লাগাচ্ছে পুলিশ, এই অবস্থায় দিল্লি ঠিক কতটা প্রস্তুতি নিয়েছে কৃষকদের ঠেকাতে?

নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে দিল্লি সীমানা। ছবি: পিটিআই এবং রয়টার্স।

নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে দিল্লি সীমানা। ছবি: পিটিআই এবং রয়টার্স।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:০৬
Share: Save:

দিল্লিতে এখনও পৌঁছয়নি। কিন্তু তার আগেই পঞ্জাব এবং হরিয়ানার সীমানায় কৃষক অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড চলছে। দিল্লিতে পৌঁছতে যে পদে পদে বাধা পেতে হবে, তা আগে থেকেই জানতেন কৃষক নেতারা। কিন্তু সেই মতো প্রস্তুতিও নিয়ে এসেছেন তাঁরা। মঙ্গলবার সকালে হরিয়ানার শম্ভু সীমানায় ঢুকতেই পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় কৃষকদের। পাঁচ হাজার কৃষক, দেড় হাজারেরও বেশি ট্র্যাক্টর এবং পাঁচশো গাড়ি নিয়ে দিল্লি অভিমুখে রওনা হওয়ার পর প্রথম বাধার মুখে পড়তেই অম্বালার কাছে ওই অঞ্চল রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ড্রোন থেকে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। ব্যারিকেড ভেঙে কৃষকেরা এগোনোর চেষ্টা করতেই দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।

হরিয়ানা সীমানার ব্যারিকেড ভেঙে কৃষকেরা কি দিল্লির দিকে এগোতে পারবে, না কি শম্ভু সীমানাতেই তাঁদের আটকে দেওয়া হবে। যদিও কৃষকদের রুখে দিতে মরিয়া হরিয়ানা পুলিশ। কাঁটাতারের বেড়া, কংক্রিটের ব্যারিকেড দিয়ে কৃষকদের আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

কৃষকদের আটাকাতে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হচ্ছে দিল্লি সীমানায়।

কৃষকদের আটাকাতে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হচ্ছে দিল্লি সীমানায়। ছবি: পিটিআই।

শম্ভু সীমানা থেকে এখনও ২০০ কিলোমিটার দূরে দিল্লি। হরিয়ানায় যখন কৃষকদের আটকাতে নিজেদের পুরো শক্তি কাজে লাগাচ্ছে পুলিশ, এই অবস্থায় দিল্লি ঠিক কতটা প্রস্তুতি নিয়েছে কৃষকদের ঠেকাতে? ২০২০ সালের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে কি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও রদবদল করা হয়েছে? কৃষক অভিযানকে ঘিরে সর্বপ্রথম রাজধানীতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার অঙ্কিত সিংহ জানিয়েছেন, কোনও রকম জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ট্র্যাক্টর-ট্রলির প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কৃষকদের আটকাতে দু’হাজার পুলিশকর্মী এবং পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে।

দিল্লিতে ঢোকার জন্য তিনটি মূল প্রবেশপথ রয়েছে। সিঙ্ঘু, টিকরি এবং গাজ়িপুর। এই তিন সীমানাই ২০২০ সালের আন্দোলনে কৃষকদের দখলে চলে গিয়েছিল। কাঁটাতার, কংক্রিটের ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকে পড়েছিলেন আন্দোলনকারী কৃষকেরা। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার আরও অনেক সাবধানী কেন্দ্র এবং দিল্লি পুলিশ-প্রশাসন। তিন সীমানায় বেশ কয়েক স্তরীয় নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। বিশাল বিশাল কংক্রিটের ব্যারিকেড নিয়ে এসে সীমানাগুলিতে দেওয়াল তুলে দেওয়া হয়েছে। সেই ব্যারিকেডের আগে লাগানো হয়েছে কাঁটাতারের বেড়া। এ ছাড়াও ট্র্যাক্টর ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকে পড়লেও যাতে এগোতে না পারে, তার জন্য রাস্তায় পেরেক পোঁতা হয়েছে। তার পরের নিরাপত্তা স্তর হিসাবে রাখা হয়েছে বড় বড় ট্রাক। এই ট্রাকগুলিকে সার দিয়ে দাঁড় করিয়ে সীমানাগুলিকে একেবারে নিশ্ছিদ্র দুর্গে পরিণত করা হয়েছে।

কাঁদানে গ্যাস লঞ্চার নিয়ে প্রস্তুত পুলিশ। ছবি: পিটিআই।

কাঁদানে গ্যাস লঞ্চার নিয়ে প্রস্তুত পুলিশ। ছবি: পিটিআই।

এ ছাড়াও কৃষকদের এই অভিযান আটকাতে মোতায়েন করা হয়েছে ৫০ কোম্পানির বেশি আধাসেনা। থাকছে দিল্লি পুলিশও। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, কাঁদানে গ্যাস লঞ্চার, হেলমেট, ব্যাটন এবং অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত থাকবে তারা। সিঙ্ঘু, টিকরি এবং গাজ়িপুর সীমানায় মোতায়েন করা হয়েছে তাদের। কৃষকদের আটকাতে আর কী কী ব্যবস্থা করা হয়েছে? দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, কংক্রিটের ব্যারিকেড তো থাকছেই, তার পাশাপাশি থাকছে লোহার ব্যারিকেড, জার্সি ব্যারিয়ার্স, বিশাল বিশাল শিপিং কন্টেনার, হাইড্রা ক্রেন, জলকামান, বাস এবং অন্যান্য গাড়ি। বেশ কয়েকটি স্তরে এদের সজ্জিত রাখা হয়েছে। হরিয়ানা সীমানা পেরিয়ে যদি কৃষকদের র‌্যালি দিল্লি সীমানায় পৌঁছয়, তা হলে কি ‘দুর্ভেদ্য’ স্তর ভেঙে ফেলতে পারবে, না কি সীমানাতেই থমকে যাবে সেই অভিযান, তা বলবে আগামী দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Farmers’ Protest in Delhi Delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE