জম্মু ও কাশ্মীরের বিধায়ক ইউসুফ তারিগামি
এত দিন ছিল বিবৃতি দিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করা। কলকাতার রাস্তায় সিপিএমের যুব এবং অন্য কিছু সংগঠন অল্প-বিস্তর কিছু অনুষ্ঠানও করেছে। এ বার কাশ্মীরের কথা সরাসরি শোনানো হবে কলকাতায়। কাশ্মীরি মুখকে হাজির করেই।
কাশ্মীরের পরিস্থিতি এখন ঠিক কেমন, তার বিবরণ দিতে কলকাতায় আসছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং জম্মু ও কাশ্মীরের বিধায়ক ইউসুফ তারিগামি। ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের আয়োজনে আগামী ১০ নভেম্বর মহাজাতি সদনে ‘কাশ্মীর টুডে’ শীর্ষক বিষয়ে বক্তা তিনি। প্রতি বছরই ব্যাঙ্ক কর্মচারীদের সংগঠন ‘নরেশ পাল স্মারক বক্তৃতা’ আয়োজন করে থাকে। অর্থনীতি ও রাজনীতির সঙ্গে সংযুক্ত নানা বিষয়ে প্রতি বছর বক্তৃতা হয়। কিন্তু সেখানে কাশ্মীরের নেতাকে নিয়ে আসা সাম্প্রতিক কালে এই প্রথম। ব্যাঙ্ক কর্মচারী সংগঠনের আমন্ত্রণ স্বীকার করার কথা জানিয়েও দিয়েছেন বিধায়ক তারিগামি।
উদ্যোক্তা সংগঠনের নেতা প্রদীপ বিশ্বাসের কথায়, ‘‘কাশ্মীর নিয়ে এখন দেশ তো বটেই, আন্তজার্তিক স্তরেও চর্চা হচ্ছে। ওখানকার পরিস্থিতি কেমন, তা জানতে সকলেই আগ্রহী। তাই এ বার তারিগামিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’’ কাশ্মীরে লাগাতার সংঘর্ষের সময়ে সিপিএমের পলিটব্যুরো ধারাবাহিক ভাবে বিবৃতি দিয়ে তাদের অবস্থান জানিয়ে এসেছে। সংসদের ভিতরে-বাইরে সরব হয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। দলের রাজ্য প্লেনামের সময়ে কলকাতায় এসেও কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতার কথা প্রকাশ্যে স্মরণ করিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর বক্তব্য ছিল, সন্ত্রাসবাদ কখনওই সমর্থনযোগ্য নয়। সীমান্তের ও’পার থেকে সন্ত্রাসে মদতের জবাবও সরকারকে দিতে হবে। কিন্তু বিজেপি- সরকার কাশ্মীরে নিজেদের নাগরিকদের সঙ্গেই যুদ্ধ ঘোষণা করে বসে আছে! তাই সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধছে, ছররা বন্দুকে আহত হচ্ছে নিরীহ ছাত্র-যুবরা। কেবল অস্ত্র দিয়ে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হবে না বলেও বারবার উল্লেখ করেছেন ইয়েচুরি। এ বার কাশ্মীরের তারিগামিই ভূস্বর্গের মানুষের অভিজ্ঞতার কথা কলকাতায় বলবেন। প্রসঙ্গত, তারিগামিকে নিয়েই ইয়েচুরি ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়েছিলেন উপত্যকায় শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবিতে।
উরিতে সেনা শিবিরে জঙ্গি হামলা এবং তার পরে ভারতের তরফে সীমান্ত পেরিয়ে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে’র পরে ইয়েচুরির বিবৃতিতে ক্ষিপ্ত হয়েছিল বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবার। প্রতিবাদ জানাতে এই শহরেই আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের দিকে মিছিল নিয়ে গিয়েছিল বিজেপি-র যুব ও মহিলা মোর্চা। সিপিএমের ছাত্র-যুবরা সে দিন মানব বলয় তৈরি করেছিলেন দলের রাজ্য দফতর ঘিরে। সে দিনই তাঁদের তরফে পাল্টা মিছিলও হয়েছিল প্রতিহিংসা ও উগ্র জাতীয়তার রাজনীতির প্রতিবাদে। এ বার তারিগামি বক্তৃতা করতে এলে গেরুয়া শিবির ফের আরও বেশি হইচই বাধাতে পারে বলে আশঙ্কা আছে বাম শিবিরে। তাই জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-নেতা কানহাইয়া কুমারের কলকাতা সফরের সময়ে যে ভাবে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী তৈরি ছিল, এ বারও তেমন ভাবনাচিন্তা আছে। তবে তারিগামি এমনিতেই ‘জেড’ ক্যাটিগরির নিরাপত্তা পান, যা তাঁর ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy