Advertisement
১৮ জানুয়ারি ২০২৫

মরিশাস এবং সেশেলস-এ দু’টি দ্বীপ কিনে চিনকে পাল্টা চাপের ছক ভারতের

মার্কিন গোয়েন্দা সূত্রে ভারতের কাছ গত বছরই খবর এসেছিল যে সেশেলস-সহ ভারত মহাসাগরের বেশ কিছু দ্বীপে সামরিক ঘাঁটি গড়ার জন্য সক্রিয়তা শুরু করেছে শি চিনফিং সরকার।

মরিশাস এবং সেশেলস-এ আপাত শান্ত দু’টি সবুজ দ্বীপ কিনেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

মরিশাস এবং সেশেলস-এ আপাত শান্ত দু’টি সবুজ দ্বীপ কিনেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

অগ্নি রায় ও দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৭ ০৩:৫৩
Share: Save:

জলে এবং স্থলে বেজিং-এর উপর পাল্টা চাপ বাড়াতে মরিয়া নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রায় এক মাস ধরে ভুটান সীমান্তে ডোকা লা-য় দু’দেশের সেনা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। উত্তেজনার পারদ ক্রমশ চড়ছে। এই পরিস্থিতিতে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। স্থির হয়েছে, কূটনৈতিক পদ্ধতিতে শান্তিসূত্র খোঁজার চেষ্টার পাশাপাশি চিনের উপরে চাপ বাড়িয়ে যাওয়া হবে। ডোকা লা-য় তাঁবু গেড়ে ভারতীয় সেনাকে প্রস্তুত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সেনা আরও বাড়ানো হবে। সীমান্তে মোতায়েন এই বাহিনীর জন্য স্থায়ী ভাবে খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহের লাইনও চালু করা হয়েছে। দীর্ঘ সময়ের জন্য এখানে ঘাঁটি গাড়ার ব্যবস্থা নিচ্ছে ভারতীয় সেনা।

অন্য দিকে ভারত মহাসাগরের দক্ষিণে নিজেদের কৌশলগত উপস্থিতি আরও বাড়ানোর জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। মরিশাস এবং সেশেলস-এ আপাত শান্ত দু’টি সবুজ দ্বীপ কিনেছে ভারত। সেখানে বিমানঘাঁটি এবং বন্দর গড়ার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রে খবর, চিন যে ভাবে ‘স্ট্রিং অব পার্লস’ নীতির মাধ্যমে ভারতকে ঘিরে নজরদারি তৈরি করার কৌশল নিয়েছে, তার পাল্টা হিসেবে এই দ্বীপ দু’টিতে ঘাঁটি তৈরি করতে চাইছে ভারত। সেশেলস-এর ‘অ্যাসাম্পশন দ্বীপ’ এবং মরিশাসের ‘অ্যাগালেগা দ্বীপ’-এর অবস্থান এমনই যে সেখান দিয়ে বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ জ্বালানিবাহী জাহাজ যাতায়াত করে। দ্রুত আর্থিক বৃদ্ধির পথে ধাবমান চিন যে ভারত মহাসাগরে তার ডানা বিস্তার করতে চাইছে সেটা ভারতের নজরে রয়েছে বেশ কিছু দিন ধরেই। পশ্চিম এশিয়া থেকে আসা তেলের একটি গুরুত্বপূর্ণ ‘ট্রানজিট পয়েন্ট’-এর কাছেই এই সেশেলস ও মরিশাসের দ্বীপ দু’টি। বেজিং এখানেও তার নৌবাহিনীর বহর গত কয়েক বছরে অনেকটাই বাড়িয়েছে। মলদ্বীপে ঘাঁটি গেড়েছে।

আরও পড়ুন: মসুলে পৌঁছেই জয়ের খবর দিলেন প্রধানমন্ত্রী

মার্কিন গোয়েন্দা সূত্রে ভারতের কাছ গত বছরই খবর এসেছিল যে সেশেলস-সহ ভারত মহাসাগরের বেশ কিছু দ্বীপে সামরিক ঘাঁটি গড়ার জন্য সক্রিয়তা শুরু করেছে শি চিনফিং সরকার। আমেরিকার কাছেও বিষয়টি উগ্বেগজনক। কারণ, এই অঞ্চলে মরিশাসেরই দিয়েগো গার্সিয়া-তে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। ব্রিটেন এই দ্বীপ বেসরকারি ভাবে নিয়ন্ত্রণ করলেও ওই ঘাঁটিটি মার্কিন সেনারই অধীনে। এই বিষয়ে ব্রিটেন এবং আমেরিকার মধ্যে অলিখিত চুক্তিও রয়েছে। সম্প্রতি সেখানে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে ড্রাগন। একের পর এক পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করছে তারা মরিশাসের সঙ্গে জোরালো দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে।

ভারত ঠিক এখানেই নিজেদের বন্দর গড়ার মোড়কে সামরিক শক্তিকে জোরদার করার কৌশল নিয়েছে। তাতে অবশ্য অদূর ভবিষ্যতেই ভারত মহাসাগর এলাকার পারদ চড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দিল্লির বিশেষজ্ঞ সংস্থা অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন-এর এক প্রতিনিধি দর্শনা বড়ুয়ার কথায়, ‘‘নিরাপত্তা এবং কৌশলগত প্রশ্নে ভারত এবং চিনের মধ্যে আস্থার অভাব ক্রমশ বাড়ছে। চিন চেষ্টা করছে ভারত মহাসাগরে তাদের উপস্থিতি বাড়াতে। ভারত স্বাভাবিক ভাবেই পাল্টা এগোচ্ছে।’’

ডোকা লা-র পরিস্থিতির জেরে ত্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠা ভারত-চিন সম্পর্কের প্রভাব শীঘ্রই অন্যত্রও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের।

অন্য বিষয়গুলি:

India green islands Mauritius Seychelles মরিশাস সেশেলস China Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy