মিগ-২১। ফাইল চিত্র।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে প্রকাশ্যেই কথাটা বলেছিলেন তৎকালীন বায়ুসেনা প্রধান বিএস ধানোয়া। ২০১৯ সালের একটি আলোচনাসভায় রাজনাথকে উদ্দেশ্য করে তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‘৪৪ বছর বয়স হয়ে গেলেও আমরা এখনও মিগ-২১ চালাচ্ছি। এত পুরনো গাড়িও কেউ চালায় না।’’
গত শতাব্দীর ছ’য়ের দশকের গোড়ায় সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে কেনা ওই যুদ্ধবিমানের ব্যবহারের ফলে বায়ুসেনার পাইলটের জীবনের ঝুঁকি বাড়ছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন এয়ার চিফ মার্শাল ধানোয়ার। বৃহস্পতিবার রাজস্থানের বাড়মেরে মিগ-২১ ভেঙে দুই পাইলটের জীবনহানির ঘটনা প্রমাণ করল, তিন বছরেও পরিস্থিতির কোনও বদল হয়নি।
উইং কমান্ডার এম রানা এবং ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট আদিত্য বলের মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই টুইটারে শোক প্রকাশ করেছেন রাজনাথ। যেমন গত তিন বছরে করেছেন মিগ-২১ ভেঙে গ্রুপ ক্যাপ্টেন একে গুপ্ত, স্কোয়াড্রন লিডার অভিনব চৌধুরীর মতো প্রতিভাবান পাইলটের মৃত্যুতেও। তবে বাড়মের-কাণ্ডের জেরে মিগ-২১ পুরোপুরি বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
বর্তমানে ভারতীয় সেনায় রয়েছে রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি মিগ-২১ বাইসন যুদ্ধবিমানের চারটি স্কোয়াড্রন (ভারতীয় বায়ুসেনার একটি স্কোয়াড্রনে কম-বেশি ১৬টি বিমান থাকে)। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর তার মধ্যে একটি, শ্রীনগরের ৫১ নম্বর স্কোয়াড্রনের বিমানগুলিকে অবসরে পাঠানো হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে অবসরে পাঠানো হবে অন্য স্কোয়াড্রনের মিগ যুদ্ধবিমান এবং প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত বিমানগুলিকে।
প্রসঙ্গত, গত তিন দশকে ২০০ বারেরও বেশি দুর্ঘটনায় পড়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার মিগ-২১। দুর্ঘটনাপ্রবণ বলে ভারতীয় বায়ু সেনা মহলে ‘উড়ন্ত কফিন’ নামে পরিচিত এই যুদ্ধবিমান। কয়েক বছর আগেই মিগ২১-কে অবসরে পাঠিয়ে পরিবর্ত হিসেবে বায়ুসেনাকে তেজস যুদ্ধবিমান দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু তা এখনও গতি পায়নি বলে অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, বালাকোট অভিযানের পরে ২০১৯-এর ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কাশ্মীরে ভারতের আকাশসীমায় ঢুকে পড়েছিল। সে সময় এই মিগ-২১ বাইসন যুদ্ধবিমান নিয়েই ডগফাইট শুরু করেছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। পাক গোলায় তাঁর যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয় এবং অভিনন্দন ইজেক্ট করে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অবতরণ করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy