নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশের আর মাত্র পাঁচ দিন বাকি। কিন্তু অসম পুলিশের এএসআই শাহ আলম ভুঁইয়া আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। কারণ বরপেটার বাসিন্দা ভুঁইয়ার নিজের নামই ডি-ভোটারের তালিকায় রয়েছে। ফলে ৫৩ বছর বয়সী ওই পুলিশ অফিসার তো বটেই, তাঁর পরিবারের নামও গৌহাটি হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে এনআরসি থেকে বাদ পড়বে। পর পর দু’জন মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৩৩ বছরের এই পুলিশ কর্মীর নাম সন্দেহজনক ভোটারের তালিকায় ওঠাটাই আশ্চর্যের বিষয়। তার উপরে গত দশ বছর লড়াই চালিয়ে, গত বছরই আদালত থেকে ‘ভারতীয়’ হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করে এনেছেন তিনি। কিন্তু তার পরেও চলতি বছরের সংশোধিত ভোটার তালিকায় নামের পাশ থেকে ‘ডি’ কাটছে না!
শুধু তিনিই নন, আরও একাধিক পুলিশ ও সেনাকর্মীর নাম ডি-ভোটারের তালিকায় রয়েছে। ইতিমধ্যে আদালত তাঁদের ভারতীয় বলে ঘোষণা করার পরেও ভোটার তালিকায় নামের পাশে যথারীতি ‘ডি’ ঝুলছে। আসলে অসমে নির্বাচন কমিশনের সফটওয়্যারে ডি-ভোটারদের নাম ঢোকানো বা বাদ দেওয়ার কোনও ব্যবস্থাই নেই।
এনআরসির তালিকায় ডি-ভোটার ও তাঁদের বংশধরদের নাম বাদ যাবে বলে জানিয়েছে গৌহাটি হাইকোর্ট ও এনআরসি দফতর। তা নিয়ে মামলা ঝুলছে সুপ্রিম কোর্টে। এনআরসির কো-অর্ডিনেটিং অফিসার প্রতীক হাজেলা জানান, এনআরসি দফতরকে ডি-ভোটারের তালিকা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন ও অসম পুলিশের সীমান্ত শাখা। দফতর সূত্রে খবর, ওই দুই দফতরের তালিকায় রয়েছে বিস্তর গরমিল। সীমান্ত শাখার ভুলে বহু প্রকৃত ভারতীয় বারবার ডি-ভোটার হিসেবে আদালতের তলব পাচ্ছেন। সীমান্ত শাখার এক কর্তা স্বীকার করেছেন, আদালতের রায় দেখে তালিকা আপডেট করা হচ্ছে না। এ দিকে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার মুকেশচন্দ্র সাহু জানান, কমিশনের ওই সফটওয়্যার তাঁরা তৈরি করেননি। তাই দোষ নির্বাচন কমিশনের নয়। তবে ইতিমধ্যে আদালত ভারতীয় বলে যাঁদের স্বীকৃতি দিয়েছে, তাঁদের নাম সংশোধিত ভোটার তালিকায় ঢোকানোর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সমস্যা মেনে নিয়ে সরকারও বলেছে, চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশের পরে এনআরসি কেন্দ্রগুলিতে আদালতের নির্দেশ-সহ হাজির হয়ে নিজেদের ভারতীয় হিসেবে প্রমাণের সুযোগ মিলবে। প্রতীক হাজেলাকে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় তথ্যব্যাঙ্ক তৈরিও করতে বলেছে সরকার। সেখানে ইতিমধ্যেই ভারতীয় ঘোষিত ডি-ভোটারদের নাম বাদ দিয়ে সংশোধিত ডি-ভোটারের তালিকা থাকবে। যে তালিকা একই সঙ্গে সীমান্ত শাখা, নির্বাচন কমিশন ও এনআরসি দফতর ব্যবহার করতে পারবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy