Advertisement
২১ মে ২০২৪

ফায়ারিং স্কোয়াড থেকে ফেরত, সৌজন্যে সুষমা

একটা ফোন। আর তাতেই বদলে গেল ছবিটা। জালন্ধরের নাকোডার শহরে গুরদীপের বাড়িতে কিছু আগেই একটা মৃত্যুর আবহাওয়া ছিল। সব আশা ছেড়ে গুরদীপের মৃত্যুসংবাদের জন্যই যেন অপেক্ষা করছিলেন তাঁর পরিবার। আর তখনই এল ফোনটা!

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৬ ০৩:৩২
Share: Save:

একটা ফোন। আর তাতেই বদলে গেল ছবিটা। জালন্ধরের নাকোডার শহরে গুরদীপের বাড়িতে কিছু আগেই একটা মৃত্যুর আবহাওয়া ছিল। সব আশা ছেড়ে গুরদীপের মৃত্যুসংবাদের জন্যই যেন অপেক্ষা করছিলেন তাঁর পরিবার। আর তখনই এল ফোনটা!

‘‘তেরা গুরদীপ বাঁচ গেয়া, চমৎকার হো গেয়া’’, গুরদীপের উচ্ছ্বসিত গলাটা শুনে নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তাঁর স্ত্রী কুলবেন্দ্র কৌর। তাঁর স্বামী এখনও বেঁচে, ঠিক শুনছেন তো! যেমন প্রথমে নিজেরও বিশ্বাস হচ্ছিল না গুরদীপের। আসলে, মাদক পাচারের দায়ে ইন্দোনেশিয়ায় মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল তাঁর। গত রাতে সবার মতো তাঁকেও ফায়ারিং স্কোয়াডে নিয়ে যাওয়া হয়। শববাহী শকট, পুরোহিত সবাই হাজির। তিনিও প্রহর গুনছেন। অপেক্ষা করছেন মৃত্যুর।

কিন্তু মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই ঘটনার পরিবর্তন। ফায়ারিং স্কোয়াড থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল গুরদীপকে। স্থগিত রাখা হল তাঁর মৃত্যুদণ্ড। আর এ জন্য তিনি বারবার বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং ভারতীয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে আরও ১৩ জনের সঙ্গে মৃত্যুদণ্ড হওয়ার কথা ছিল ভারতের নাগরিক গুরদীপের। ৪ জনের সাজা হলেও গুরদীপ-সহ ১০ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ২০০৪ সালের অগস্ট মাসে ৩০০ গ্রাম হেরোইন রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় গুরদীপকে। তাঁর কথায়, শেষমেশ ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের হস্তক্ষেপেই এ যাত্রায় প্রাণে বেঁচে গেলেন তিনি। আজ সকালে সুষমাও টুইট করে বলেন, ‘‘ইন্দোনেশিয়ায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূত আমাকে জানিয়েছেন, গত রাতে গুরদীপ সিংহকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি।’’

কুলদীপ বলেছেন, ‘‘সুষমা স্বরাজ সব সময় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। এবং গুরদীপকে বাঁচাতে সবটুকু সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি।’’ বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বৃহস্পতিবারই বিকাশ স্বরূপ জানিয়েছিলেন, ভারতীয় কর্তাদের সঙ্গে গুরদীপের দেখা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে তাঁদের কথা চলছে বলেও আশ্বস্ত করেন স্বরূপ।

বিপদে পড়লেই বহু বার সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন সুষমা। এমনকী শাশুড়ির-বৌমার ঝগড়াতেও বিদেশ মন্ত্রক নাক গলিয়ে সে সমস্যা মিটিয়েছে। কিছু দিন আগেই তাঁর তত্ত্বাবধানে কলকাতায় বাড়িতে ফিরেছেন কাবুলে অপহৃত জুডিথ ডি’সুজা। যে জেলে এত দিন থাকতেন গুরদীপ, আবার সেখানেই তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার প্রশাসন। তবে তাঁর পরিবারের আশা, অচিরেই দেশে ফিরবেন গুরদীপ।

‘‘আবার বাবার সঙ্গে দেখা হবে। আবার বাবার সঙ্গে থাকতে পারব আমরা...’’, গুরদীপের বছর তেরোর ছেলে সুখবেন্দ্রর কথায় তত ক্ষণে বাড়ির কান্নার ছবিটা বদলে গিয়েছে। হাসছে সবাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gurdip singh Indonesia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE